Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে ক্ষমতায় রেখে যাওয়া যাবে না : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে ক্ষমতায় রেখে যাওয়া যাবে না। আজকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবে, অবৈধ সংসদ ভেঙে দিবে, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাসিত করবে, নিরপেক্ষ সরকার হবে- এমন ঘোষণার সঙ্গে-সঙ্গে সবাই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে।

সোমবার (১৯ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের মানবন্ধনে তিনি একথা বলেন।

গত ১৪ মে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামে ‘ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন হয়।

গয়েশ্বর বলেন, বন্ধুত্ব চাই। একটা রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটা রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু এই সরকারতো বন্ধুত্বে বিশ্বাস করে না। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীতো বলে দিয়েছে, প্রতিবেশির সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাওতো ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব আমাদের দরকার, ঝগড়া-ঝাটি আমাদের চলে না। আমাদের যদি প্রভুত্ব বা স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা দেয়, সেই বন্ধুত্ব তো কাম্য নয়।

তিনি বলেন, সে কারণে আমি বলবো ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাসহ এখানে যারা আছেন, তারা দিল্লীতে খবর পাঠান, জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, তার পাশে বাংলাদেশ গণতন্ত্রবিহীন। যার জন্য এদেশের জনগণ ভারতেকে দায়ী করে-এ কথা স্পষ্ট করে বলে দিলাম। আপনাদের ভারত সরকার, ভারতের রাজনীতিবিদদের বলেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সঙ্গে করবেন; নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের সাথে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সাথে যদি ভারতের বন্ধুত্ব হয়, সেটা হলো প্রকৃত বন্ধুত্ব, সেটা মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই হবে। নতুবা এক জনের সাথে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সুতরাং আপনাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে-এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। সঠিক তথ্য আপনাদের জানাতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা আমাদের নির্বাচনে পাশ করিয়ে দেবেন তা নয়; গণতন্ত্রের প্রশ্নে সুস্পষ্ট অবস্থান নেবেন কিনা-তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়।

মানবন্ধন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বানও জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন, দিয়ে বলেন জনগণের ১০ দফা মেনে নেবেন, সংসদ বিলুপ্ত করবেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ করবেন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিলে কাল থেকে আপনাকে কিছু বলবো না। শুধুমাত্র অপেক্ষা করবো। কখন বঙ্গভবনে গিয়ে আপনার পদত্যাগপত্র জমা দেন।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে সরকার গঠন করবে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে। হ্যাঁ বিএনপি নির্বাচনে যাবে; তবে কোনো ভোট ডাকাত এবং ভোট চোরদের ক্ষমতায় রেখে নয়। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে এই সরকারের আমলে গুম, খুন, নির্যাতনসহ সব অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, তিনি বলেছেন- শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে। কবরে তো সবাই যায়। যদি মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত হন তাহলে ক্ষমতায় থাকার দরকার কি? ক্ষমতা ছেড়ে দেন। ক্ষমতা ছেড়ে জনগণের অধিকার, ভোট ফিরিয়ে দেন।

গয়েশ্বরের দাবি, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার বন্ধু, স্বজনরা লাশ দাফন করে ক্ষমতার লোভে শপথ নিতে গেছেন। এখন যে সেই রকম লোক আওয়ামী লীগে নেই এটা ভাবে কেন? বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে না, করবেও না, এটাতে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপির জন্ম হয়েছে।

সাংবাদিক নাদিম হত্যার পর সাংবাদিকদের মধ্যে কোনও প্রতিবাদ হয় না দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, কেন আপনারা একদিন টেলিভিশন বন্ধ রাখতে পারেন না? কেন একদিন অফিসে না গিয়ে পারেন না? তার জবাব জনগণের কাছে দিতে হবে আপনাদের। সাগর-রুনি হত্যার কেন প্রতিবেদন আসে না? আপনাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বানালো আর হত্যা হালাল হয়ে গেল।

সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপুর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরীন সুলতানা প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত

যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে ক্ষমতায় রেখে যাওয়া যাবে না : গয়েশ্বর

প্রকাশের সময় : ০৩:২৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে ক্ষমতায় রেখে যাওয়া যাবে না। আজকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবে, অবৈধ সংসদ ভেঙে দিবে, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাসিত করবে, নিরপেক্ষ সরকার হবে- এমন ঘোষণার সঙ্গে-সঙ্গে সবাই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে।

সোমবার (১৯ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের মানবন্ধনে তিনি একথা বলেন।

গত ১৪ মে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামে ‘ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন হয়।

গয়েশ্বর বলেন, বন্ধুত্ব চাই। একটা রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটা রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু এই সরকারতো বন্ধুত্বে বিশ্বাস করে না। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীতো বলে দিয়েছে, প্রতিবেশির সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাওতো ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব আমাদের দরকার, ঝগড়া-ঝাটি আমাদের চলে না। আমাদের যদি প্রভুত্ব বা স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা দেয়, সেই বন্ধুত্ব তো কাম্য নয়।

তিনি বলেন, সে কারণে আমি বলবো ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাসহ এখানে যারা আছেন, তারা দিল্লীতে খবর পাঠান, জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, তার পাশে বাংলাদেশ গণতন্ত্রবিহীন। যার জন্য এদেশের জনগণ ভারতেকে দায়ী করে-এ কথা স্পষ্ট করে বলে দিলাম। আপনাদের ভারত সরকার, ভারতের রাজনীতিবিদদের বলেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সঙ্গে করবেন; নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের সাথে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সাথে যদি ভারতের বন্ধুত্ব হয়, সেটা হলো প্রকৃত বন্ধুত্ব, সেটা মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই হবে। নতুবা এক জনের সাথে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সুতরাং আপনাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে-এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। সঠিক তথ্য আপনাদের জানাতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা আমাদের নির্বাচনে পাশ করিয়ে দেবেন তা নয়; গণতন্ত্রের প্রশ্নে সুস্পষ্ট অবস্থান নেবেন কিনা-তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়।

মানবন্ধন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বানও জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন, দিয়ে বলেন জনগণের ১০ দফা মেনে নেবেন, সংসদ বিলুপ্ত করবেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ করবেন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিলে কাল থেকে আপনাকে কিছু বলবো না। শুধুমাত্র অপেক্ষা করবো। কখন বঙ্গভবনে গিয়ে আপনার পদত্যাগপত্র জমা দেন।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে সরকার গঠন করবে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে। হ্যাঁ বিএনপি নির্বাচনে যাবে; তবে কোনো ভোট ডাকাত এবং ভোট চোরদের ক্ষমতায় রেখে নয়। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে এই সরকারের আমলে গুম, খুন, নির্যাতনসহ সব অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, তিনি বলেছেন- শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে। কবরে তো সবাই যায়। যদি মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত হন তাহলে ক্ষমতায় থাকার দরকার কি? ক্ষমতা ছেড়ে দেন। ক্ষমতা ছেড়ে জনগণের অধিকার, ভোট ফিরিয়ে দেন।

গয়েশ্বরের দাবি, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার বন্ধু, স্বজনরা লাশ দাফন করে ক্ষমতার লোভে শপথ নিতে গেছেন। এখন যে সেই রকম লোক আওয়ামী লীগে নেই এটা ভাবে কেন? বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে না, করবেও না, এটাতে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপির জন্ম হয়েছে।

সাংবাদিক নাদিম হত্যার পর সাংবাদিকদের মধ্যে কোনও প্রতিবাদ হয় না দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, কেন আপনারা একদিন টেলিভিশন বন্ধ রাখতে পারেন না? কেন একদিন অফিসে না গিয়ে পারেন না? তার জবাব জনগণের কাছে দিতে হবে আপনাদের। সাগর-রুনি হত্যার কেন প্রতিবেদন আসে না? আপনাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বানালো আর হত্যা হালাল হয়ে গেল।

সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপুর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরীন সুলতানা প্রমুখ।