Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদযাত্রার ফিরতি পথে নজরদারির অভাবে দুর্ঘটনা বেশি : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের আগে দুর্ঘটনা কম হলেও ঈদের পর ফিরতি যাত্রায় দুর্ঘটনা বেশি। কারণ ঈদের ফিরতি যাত্রায় আমাদের নজর কম থাকে। এটিতে আমাদের এখন থেকে নজর রাখা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সভা কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ঈদুল ফিতরের সময় স্বস্তির বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত রমজানে স্মরণাতীত কালের একটি ভালো ঈদযাত্রা আমরা দেখেছি। সবাই প্রশংসা করেছে। এখানে একটি সমন্বয় কাজ করেছিল। রমজানের ঈদের চেয়ে কুরবানির ঈদ অনেক চ্যালেঞ্জিং। এখানে অনেকগুলো বিষয় অন্তরায় হয়ে যায়। এগুলো অতিক্রম করা এত সহজ না। এখানে এফোর্ড আমাদের বেশি দিতে হবে।

কাদের বলেন, কুরবানির ঈদের জন্য আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে আমাদের একটি গলার কাঁটা আছে, বিআরটি। বৃষ্টি হলে কাদা। এ বছরই আমরা প্রজেক্টটা শেষ করার জন্য কাজ এগিয়ে এনেছি।

তিনি বলেন, রোজায় বৃষ্টির বিড়ম্বনা ছিল না। তবে এবারের ঈদে পশুবাহী গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে পশু বহন, কোরবানির হাট, এসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বৃষ্টি হলে গাড়ির গতি কমে যায়। সড়কে গর্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে বেড়ে যানজট হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ দরকার। মহাসড়কের পাশে পশুর হাট বসানোর প্রবণতা কমেছে। বিশেষ নজর দিতে হবে গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্প যেটি আমাদের গলার কাঁটা। এক পশলা বৃষ্টিতে সমস্যা হয়, এমনিতেই দুর্ভোগের কারণ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় দেশের সব সড়ক, মহাসড়কে যানজট থাকে। যানজট এড়াতে অনেকেই রং সাইডে গাড়ি চালান। আসন্ন ঈদুল আজহার সময় যেন এমন ঘটনা ঘটতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর যারাই রং সাইডে গাড়ি চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রং সাইডে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের থাকে। অনেক সম্মানিত ব্যক্তিও আছেন যারা যানজট এড়াতে রং সাইডে যান। আমি কড়াভাবে বলব, যতই ক্ষমতাধর হোক আপনারা (ট্রাফিক পুলিশ) কাউকে রং সাইডে যেতে দেবেন না। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এখানে কেউ যেন ছাড় না পায়, যতই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হোক না কেন।

তিনি আরও বলেন, ঈদের সময় দুর্ঘটনা, মানুষ মারা যাওয়া এটা খুবই কষ্টদায়ক, বেদনাদায়ক তাই আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টায়, সবার উদ্যোগে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে করে দুর্ঘটনা না ঘটে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মোটরসাইকেলের উপদ্রবটা বেশি। মোটরসাইকেলে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টা দেখতে হবে। সিগন্যালে যদি একঝাঁক মোটরসাইকেল দেখেন, দেখবেন হেলমেট আছে। আবার যদি একঝাঁক দেখেন, হেলমেট নাই। তাহলে বুঝবেন, এরা পলিটিক্স করে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, পুলিশের যারা আছেন, তাদের অনুরোধ করব আমি পার্টির সেক্রেটারি। আমি রঙ সাইড দিয়ে যাচ্ছি? রঙ সাইড দিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করবেন না।

গার্মেন্টস খাতে মালিকে মালিকে সম্পর্ক কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী। সকল গার্মেন্টসে ছুটি যেন একই সময় না হয়, সমন্বয় করে ছুটি দিতে শ্রম মন্ত্রণালয় ও গার্মেন্টস মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। বিভিন্ন সেতুতে টোল প্লাজায় বুথ সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, সড়কের ছুটি বন্ধ করবো না, কিন্তু অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বগুড়া পর্যন্ত ঝুঁকি আছে, পাঁচদিন আগে বন্ধ করতে হবে সড়কের কাজ। ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ঈদের আগে তিনদিন বন্ধ থাকবে। ঈদের আগে পরে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি স্টেশন। মোটরসাইকেল রং সাইডে গাড়ি যানজটের কারণ। এখানে কোনও আপস করা যাবে না। বিআরটি প্রকল্পের চার কিলোমিটার অংশ ঈদের আগে চালু করা হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ, বিআরটিসি, সেতুবিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ সভায় যুক্ত হন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

ঈদযাত্রার ফিরতি পথে নজরদারির অভাবে দুর্ঘটনা বেশি : কাদের

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের আগে দুর্ঘটনা কম হলেও ঈদের পর ফিরতি যাত্রায় দুর্ঘটনা বেশি। কারণ ঈদের ফিরতি যাত্রায় আমাদের নজর কম থাকে। এটিতে আমাদের এখন থেকে নজর রাখা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সভা কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ঈদুল ফিতরের সময় স্বস্তির বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত রমজানে স্মরণাতীত কালের একটি ভালো ঈদযাত্রা আমরা দেখেছি। সবাই প্রশংসা করেছে। এখানে একটি সমন্বয় কাজ করেছিল। রমজানের ঈদের চেয়ে কুরবানির ঈদ অনেক চ্যালেঞ্জিং। এখানে অনেকগুলো বিষয় অন্তরায় হয়ে যায়। এগুলো অতিক্রম করা এত সহজ না। এখানে এফোর্ড আমাদের বেশি দিতে হবে।

কাদের বলেন, কুরবানির ঈদের জন্য আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে আমাদের একটি গলার কাঁটা আছে, বিআরটি। বৃষ্টি হলে কাদা। এ বছরই আমরা প্রজেক্টটা শেষ করার জন্য কাজ এগিয়ে এনেছি।

তিনি বলেন, রোজায় বৃষ্টির বিড়ম্বনা ছিল না। তবে এবারের ঈদে পশুবাহী গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে পশু বহন, কোরবানির হাট, এসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বৃষ্টি হলে গাড়ির গতি কমে যায়। সড়কে গর্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে বেড়ে যানজট হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ দরকার। মহাসড়কের পাশে পশুর হাট বসানোর প্রবণতা কমেছে। বিশেষ নজর দিতে হবে গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্প যেটি আমাদের গলার কাঁটা। এক পশলা বৃষ্টিতে সমস্যা হয়, এমনিতেই দুর্ভোগের কারণ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় দেশের সব সড়ক, মহাসড়কে যানজট থাকে। যানজট এড়াতে অনেকেই রং সাইডে গাড়ি চালান। আসন্ন ঈদুল আজহার সময় যেন এমন ঘটনা ঘটতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর যারাই রং সাইডে গাড়ি চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রং সাইডে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের থাকে। অনেক সম্মানিত ব্যক্তিও আছেন যারা যানজট এড়াতে রং সাইডে যান। আমি কড়াভাবে বলব, যতই ক্ষমতাধর হোক আপনারা (ট্রাফিক পুলিশ) কাউকে রং সাইডে যেতে দেবেন না। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এখানে কেউ যেন ছাড় না পায়, যতই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হোক না কেন।

তিনি আরও বলেন, ঈদের সময় দুর্ঘটনা, মানুষ মারা যাওয়া এটা খুবই কষ্টদায়ক, বেদনাদায়ক তাই আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টায়, সবার উদ্যোগে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে করে দুর্ঘটনা না ঘটে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মোটরসাইকেলের উপদ্রবটা বেশি। মোটরসাইকেলে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টা দেখতে হবে। সিগন্যালে যদি একঝাঁক মোটরসাইকেল দেখেন, দেখবেন হেলমেট আছে। আবার যদি একঝাঁক দেখেন, হেলমেট নাই। তাহলে বুঝবেন, এরা পলিটিক্স করে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, পুলিশের যারা আছেন, তাদের অনুরোধ করব আমি পার্টির সেক্রেটারি। আমি রঙ সাইড দিয়ে যাচ্ছি? রঙ সাইড দিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করবেন না।

গার্মেন্টস খাতে মালিকে মালিকে সম্পর্ক কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী। সকল গার্মেন্টসে ছুটি যেন একই সময় না হয়, সমন্বয় করে ছুটি দিতে শ্রম মন্ত্রণালয় ও গার্মেন্টস মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। বিভিন্ন সেতুতে টোল প্লাজায় বুথ সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, সড়কের ছুটি বন্ধ করবো না, কিন্তু অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বগুড়া পর্যন্ত ঝুঁকি আছে, পাঁচদিন আগে বন্ধ করতে হবে সড়কের কাজ। ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ঈদের আগে তিনদিন বন্ধ থাকবে। ঈদের আগে পরে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি স্টেশন। মোটরসাইকেল রং সাইডে গাড়ি যানজটের কারণ। এখানে কোনও আপস করা যাবে না। বিআরটি প্রকল্পের চার কিলোমিটার অংশ ঈদের আগে চালু করা হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ, বিআরটিসি, সেতুবিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ সভায় যুক্ত হন।