চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট না পেয়েও উঠে পড়েন হায়াত আলী। ঢাকা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে আসা ট্রেনে ভাগ্যক্রমে একটি সিটও পেয়ে যান। এরপর টিটিই এলেও তিনি ঘুমিয়ে থাকায় তার টিকিট আছে কিনা না দেখেই চলে যান। ঘুম ভেঙে হায়াত আলী দেখেন গন্তব্যস্থল রাজশাহী পৌঁছে গেছেন, তাই নেমে যান ট্রেন থেকে।
ঘটনাটি ৮ বছর আগের হলেও, এমন ঘটনা হরহামেশাই হয়ে থাকে। তবে এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম ঘটনা। ট্রেন ভ্রমণের দীর্ঘ ৮ বছর পর সেই টিকিটের টাকা পরিশোধ করলেন প্রবাসী হায়াত আলী (২৮)। বুধবার (৭ জুন) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে গিয়ে টিকিটের টাকা দেন তিনি।
হায়াত আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
হায়াত আলী বলেন, গত ৮ বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য ঢাকায় পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে টিকিট পায়নি তবুও ট্রেনে উঠি পড়ি। ভেবেছিলাম, ট্রেনে উঠার পড় দাঁড়িয়ে থাকার টিকিট কেটে নিব। কিন্তু সিট পেয়ে ঘুম চলে আসে। এরমধ্যে কখন টিটিই আসে তাও জানি না। ঘুম ভেঙে দেখি রাজশাহী চলে এসেছি। পরে দিব দিব করে ট্রেনের টিকিটের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। সম্প্রতি কাতার থেকে দেশে ফিরেছি। এসেই ভাবলাম, বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করে এতে দীর্ঘ সময় পার করে দেওয়া উচিত হয়নি। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে এসে এখানকার সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খুলে বলি। এরপর তাদের সহযোগিতায় ৩৪০ টাকার একটি টিকিট কেটেছি। এখন ভালে লাগছে, নিজেকে দায়মুক্ত করতে পরে। সকলের উচিত, ট্রেনে টিকিট কেটে ভ্রমণ করা।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের ইনচার্জ মো. হেলেন হোসেন জানান, স্টেশনে এসে এক যাত্রী আমাদেরকে জানায়, সে ৮ বছর আগে ঢাকা থেকে রাজশাহী রুটে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করেছেন। এখন সেই টিকিট কাটতে চান। পরে স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে কথা বলে তার একটি টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. ওবাইদুল্লাহ বলেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। অনেকদিন আগে ট্রেন ভ্রমণ করার পরেও তা পরিশোধ বা টিকিট সংগ্রহ করার ঘটনা বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণকারী যাত্রীদেরকে টিকিট কাটতে উৎসাহ দিবে। হায়াত আলী আমাদের সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।