Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬০০০ বিঘার চর দখল করা সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থেকে শুরু করে জ্বালানি বিভাগে সচিবের দায়িত্ব পালন পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন নাজিম চৌধুরী। একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম আলোচিত হলে টনক নড়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেরও (দুদক)। তবে এতকাল তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় জেগে ওঠা চরে ঠাঁই হয়েছিল কয়েক হাজার ভূমিহীন পরিবারের। তাদের উচ্ছেদ করে প্রায় ছয় হাজার বিঘার আস্ত চরটি দখলে নেন সাবেক জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী।

সেখানে তিনি নানা জাতের খামারের পাশাপাশি গড়ে তোলেন আভিজাত্য। হেলিপ্যাডসহ রাজপ্রাসাদের আদলে গড়ে তোলেন অট্টালিকা। ক্ষমতার দাপটে দরিদ্র ভূমিহীনদের সরিয়ে আস্ত চরটি দখলে নেওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি গণমাধ্যমে আলোচিত হয়।

এরই জের ধরে সামগ্রিক বিষয় তদন্তে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। গত ১০ আগস্ট গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন আল ফারুককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক।

আরও পড়ুন : টেকনাফে চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছিলেন পরিদর্শক লিয়াকত

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন এবং ভোলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম।

 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সাবেক জ্বালানি সচিবের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে যে চর দখলের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেটি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। চর দখলের অভিযোগ তদন্তে ইতোমধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, নাজিম চৌধুরীর সম্পদের পাহাড় খুঁজতে অনুসন্ধানে নামলে বেরিয়ে আসে রাজপ্রাসাদ। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরে আস্ত একটি চরই দখল করে নিয়েছেন তিনি। দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকার একমাত্র সম্বল ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দখলে নিয়েছেন।

দুর্গম চরে নির্মাণ করেছেন হেলিপ্যাডসহ অভিজাত অট্টালিকা। শুধু ঢালচর নয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকাতেও আছে নাজিমের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। গুলশানে আট কোটি টাকার অভিজাত ফ্ল্যাটে বসবাস করেন পরিবার নিয়ে।

স্ত্রী-সন্তানের নামে বনানী ও মোহাম্মদপুরে আছে ১১ কোটির দুটি ফ্ল্যাট ও বাড়ি। আছে লেক্সাস ও ল্যান্ড ক্রুজার ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি। চরের অট্টালিকায় যেতে ব্যবহার করেন হেলিকপ্টার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভগ্নিপতি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর প্রভাব খাটিয়ে দখল-বেদখলের খেলায় মেতে ওঠেন নাজিম।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাতারাতি বদলে ফেলেন নিজেকে। ভোল পাল্টে হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্খী। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

৬০০০ বিঘার চর দখল করা সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

প্রকাশের সময় : ০১:১৮:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অগাস্ট ২০২০

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থেকে শুরু করে জ্বালানি বিভাগে সচিবের দায়িত্ব পালন পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন নাজিম চৌধুরী। একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম আলোচিত হলে টনক নড়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেরও (দুদক)। তবে এতকাল তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় জেগে ওঠা চরে ঠাঁই হয়েছিল কয়েক হাজার ভূমিহীন পরিবারের। তাদের উচ্ছেদ করে প্রায় ছয় হাজার বিঘার আস্ত চরটি দখলে নেন সাবেক জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী।

সেখানে তিনি নানা জাতের খামারের পাশাপাশি গড়ে তোলেন আভিজাত্য। হেলিপ্যাডসহ রাজপ্রাসাদের আদলে গড়ে তোলেন অট্টালিকা। ক্ষমতার দাপটে দরিদ্র ভূমিহীনদের সরিয়ে আস্ত চরটি দখলে নেওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি গণমাধ্যমে আলোচিত হয়।

এরই জের ধরে সামগ্রিক বিষয় তদন্তে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। গত ১০ আগস্ট গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন আল ফারুককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক।

আরও পড়ুন : টেকনাফে চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছিলেন পরিদর্শক লিয়াকত

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন এবং ভোলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম।

 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সাবেক জ্বালানি সচিবের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে যে চর দখলের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেটি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। চর দখলের অভিযোগ তদন্তে ইতোমধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, নাজিম চৌধুরীর সম্পদের পাহাড় খুঁজতে অনুসন্ধানে নামলে বেরিয়ে আসে রাজপ্রাসাদ। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরে আস্ত একটি চরই দখল করে নিয়েছেন তিনি। দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকার একমাত্র সম্বল ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দখলে নিয়েছেন।

দুর্গম চরে নির্মাণ করেছেন হেলিপ্যাডসহ অভিজাত অট্টালিকা। শুধু ঢালচর নয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকাতেও আছে নাজিমের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। গুলশানে আট কোটি টাকার অভিজাত ফ্ল্যাটে বসবাস করেন পরিবার নিয়ে।

স্ত্রী-সন্তানের নামে বনানী ও মোহাম্মদপুরে আছে ১১ কোটির দুটি ফ্ল্যাট ও বাড়ি। আছে লেক্সাস ও ল্যান্ড ক্রুজার ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি। চরের অট্টালিকায় যেতে ব্যবহার করেন হেলিকপ্টার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভগ্নিপতি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর প্রভাব খাটিয়ে দখল-বেদখলের খেলায় মেতে ওঠেন নাজিম।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাতারাতি বদলে ফেলেন নিজেকে। ভোল পাল্টে হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্খী। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।