Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে বেহাল সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কুস্তা বেইলি সেতু বন্যার পানির স্রোতে গত বছর নদীর দুই পাড় ভেঙে যায়। তখন ধসে যায় গুরুত্বপূর্ণ বেইলি সেতুটি। এরপর অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হলেও সেতুটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করে কর্তৃপক্ষ। তবু বেহাল সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও আশপাশের দুটি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। আর ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

এই অবস্থা মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কুস্তা বেইলি সেতুর। ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে চলাচলের কারণে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির পিলারের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সেতুর সামনের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেতুর পূর্ব পাশে লোহার পাইপ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেতুটি দিয়ে রিকশা, ইজিবাইকে করে লোকজন যাতায়াত করছে। এ ছাড়া ট্রলি, রিকশাভ্যান, ঘোড়ার গাড়িসহ ছোট ছোট যানবাহনে বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সদর উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে ঘিওর হাটসংলগ্ন কুস্তা এলাকায় ইছামতী নদীর ওপর প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর এই সেতুর ওপর দিয়ে ঘিওরের কুস্তা, নারচী, বেগুন নারচী, শ্রীধরনগর; পাশের দৌলতপুর উপজেলার খলসী, কুমুরিয়া, বিনোদপুর, কাটাখালী, শ্যামগঞ্জ, জিয়নপুরসহ দুটি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।

২০১২ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও এসব এলাকার লোকজন ও যানবাহন চলাচল করে আসছিল। গত বছর বন্যায় সেতুটি ধসে যাওয়ার পর অস্থায়ীভাবে সেতুটি মেরামত করা হয়। তবে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সেতুটির পূর্ব প্রান্তে ভারী যানবাহন বন্ধে প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়। সেই থেকে সেতুটিতে ঝুঁকি নিয়ে দুটি উপজেলার মানুষ ও ছোট ছোট বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে আসছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুর পূর্ব পাশে শতাধিক বছরের পুরোনো ঘিওর হাট ও বাজার রয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত ধান, ভুট্টা, শর্ষে, তামাক, পাটসহ অন্যান্য শস্য ছোট ট্রলি, টেম্পো বা রিকশাভ্যানে করে হাটবাজারে নিতে হয়। সেতুর পশ্চিম পাড়ে উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান, চাল ও গম আনা-নেওয়া করতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

সেতুটির দুই পাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দৌলতপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, আশপাশের বিভিন্ন এলাকার অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে পড়ালেখা করে। সেতুর এই দশায় ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হয়।

সেতুটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অপসারণ করে সেখানে আরসিসি সেতু করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

মানিকগঞ্জে বেহাল সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

প্রকাশের সময় : ০২:১৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কুস্তা বেইলি সেতু বন্যার পানির স্রোতে গত বছর নদীর দুই পাড় ভেঙে যায়। তখন ধসে যায় গুরুত্বপূর্ণ বেইলি সেতুটি। এরপর অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হলেও সেতুটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করে কর্তৃপক্ষ। তবু বেহাল সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও আশপাশের দুটি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। আর ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

এই অবস্থা মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কুস্তা বেইলি সেতুর। ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে চলাচলের কারণে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির পিলারের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সেতুর সামনের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেতুর পূর্ব পাশে লোহার পাইপ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেতুটি দিয়ে রিকশা, ইজিবাইকে করে লোকজন যাতায়াত করছে। এ ছাড়া ট্রলি, রিকশাভ্যান, ঘোড়ার গাড়িসহ ছোট ছোট যানবাহনে বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সদর উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে ঘিওর হাটসংলগ্ন কুস্তা এলাকায় ইছামতী নদীর ওপর প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর এই সেতুর ওপর দিয়ে ঘিওরের কুস্তা, নারচী, বেগুন নারচী, শ্রীধরনগর; পাশের দৌলতপুর উপজেলার খলসী, কুমুরিয়া, বিনোদপুর, কাটাখালী, শ্যামগঞ্জ, জিয়নপুরসহ দুটি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।

২০১২ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও এসব এলাকার লোকজন ও যানবাহন চলাচল করে আসছিল। গত বছর বন্যায় সেতুটি ধসে যাওয়ার পর অস্থায়ীভাবে সেতুটি মেরামত করা হয়। তবে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সেতুটির পূর্ব প্রান্তে ভারী যানবাহন বন্ধে প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়। সেই থেকে সেতুটিতে ঝুঁকি নিয়ে দুটি উপজেলার মানুষ ও ছোট ছোট বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে আসছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুর পূর্ব পাশে শতাধিক বছরের পুরোনো ঘিওর হাট ও বাজার রয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত ধান, ভুট্টা, শর্ষে, তামাক, পাটসহ অন্যান্য শস্য ছোট ট্রলি, টেম্পো বা রিকশাভ্যানে করে হাটবাজারে নিতে হয়। সেতুর পশ্চিম পাড়ে উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান, চাল ও গম আনা-নেওয়া করতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

সেতুটির দুই পাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দৌলতপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, আশপাশের বিভিন্ন এলাকার অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে পড়ালেখা করে। সেতুর এই দশায় ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হয়।

সেতুটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অপসারণ করে সেখানে আরসিসি সেতু করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।