Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরে ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট, গাড়িচাপায় পথচারী নিহত

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

লক্ষ্মীপুর শহরের সামাদ মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একটি স্বর্ণের দোকান লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় দোকানের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পালানোর সময় ডাকাতদলের গাড়ি চাপায় এক বৃদ্ধ পথচারী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৭ জুন) রাত ৮টা ১০ মিনিটে হঠাৎ আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ‘চৌধুরী সুপার মার্কেট এর আর. কে. শিল্পালয়’-এ ৭/৮ জন লোক এসে ককটেল ফাটিয়ে চতুর্দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে ওই স্বর্ণকারের দোকান থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। বাধা দেওয়ায় স্বত্বাধিকারী দোকানি অপু কর্মকারকে এলোপাতাড়ি জখম করে ডাকাত দল। এ সময় বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তার ছেলে অমি কর্মকার ও আহত হয়। আহত অপু কর্মকারকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

অপু লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সমসেরাবাদ এলাকার বাসিন্দা। নিহত পথচারী সফি উল্যা পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের ইটেরপুল এলাকার পানাম বাড়ির বাসিন্দা। আহত ইসমাইল হোসেন একই বাড়ির বাসিন্দা। অপর আহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কলা বিক্রেতা মো. খোকন জানান, হঠাৎ রাত ৮টা ১০ মিনিটে কয়েকজন লোক এসে স্বর্ণকার দোকানে প্রবেশ করে। আর একজন বাহিরে দাঁড়িয়ে একটি ব্যাগ থেকে ককটেল ফাটিয়ে চতুর্দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। আমি নিজেই ভয়ে একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিই। তারা ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে এ স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। অপু দাদাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে আমরা রক্তাক্ত অবস্থায় দাদাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি।

দুর্বৃত্তরা কী পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদিকে লুট করে পালানোর সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় ডাকাতদের পিকআপ ভ্যানের চাপায় সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী মারা গেছেন। তিনি রাস্তা নির্মাণের শ্রমিক ছিলেন। তার বাড়ি পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায়। এসময় আহত হয়েছেন একই এলাকার ইসমাইল হোসেন (৫৫)। নিহত ব্যক্তির মৃতদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আহত ইসমাইলকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় জনতা দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। তারা ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে আট থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত এসে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেলের ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পরে দুর্বৃত্তরা আর কে শিল্পালয়ে ঢুকে সোনার গহনা লুট করে এবং দোকানের মালিক অপুকে কুপিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পিকআপ ভ্যানে করে পালিয়ে যায়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দুজনক আটক করা হয়েছে। তাদের গাড়ি পালিয়ে যাবার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে একজন পথচারী মারা গেছেন। ঘটনার পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাজুস জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল। তিনি বলেন, আহত অপু কর্মকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডাকাতদল দোকানের সব স্বর্ণ নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দেব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইলিশের দাম বেশি থাকার যেসব কারণ জানালেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

লক্ষ্মীপুরে ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট, গাড়িচাপায় পথচারী নিহত

প্রকাশের সময় : ০১:০১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

লক্ষ্মীপুর শহরের সামাদ মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একটি স্বর্ণের দোকান লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় দোকানের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পালানোর সময় ডাকাতদলের গাড়ি চাপায় এক বৃদ্ধ পথচারী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৭ জুন) রাত ৮টা ১০ মিনিটে হঠাৎ আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ‘চৌধুরী সুপার মার্কেট এর আর. কে. শিল্পালয়’-এ ৭/৮ জন লোক এসে ককটেল ফাটিয়ে চতুর্দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে ওই স্বর্ণকারের দোকান থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। বাধা দেওয়ায় স্বত্বাধিকারী দোকানি অপু কর্মকারকে এলোপাতাড়ি জখম করে ডাকাত দল। এ সময় বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তার ছেলে অমি কর্মকার ও আহত হয়। আহত অপু কর্মকারকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

অপু লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সমসেরাবাদ এলাকার বাসিন্দা। নিহত পথচারী সফি উল্যা পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের ইটেরপুল এলাকার পানাম বাড়ির বাসিন্দা। আহত ইসমাইল হোসেন একই বাড়ির বাসিন্দা। অপর আহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কলা বিক্রেতা মো. খোকন জানান, হঠাৎ রাত ৮টা ১০ মিনিটে কয়েকজন লোক এসে স্বর্ণকার দোকানে প্রবেশ করে। আর একজন বাহিরে দাঁড়িয়ে একটি ব্যাগ থেকে ককটেল ফাটিয়ে চতুর্দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। আমি নিজেই ভয়ে একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিই। তারা ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে এ স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। অপু দাদাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে আমরা রক্তাক্ত অবস্থায় দাদাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি।

দুর্বৃত্তরা কী পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদিকে লুট করে পালানোর সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় ডাকাতদের পিকআপ ভ্যানের চাপায় সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী মারা গেছেন। তিনি রাস্তা নির্মাণের শ্রমিক ছিলেন। তার বাড়ি পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায়। এসময় আহত হয়েছেন একই এলাকার ইসমাইল হোসেন (৫৫)। নিহত ব্যক্তির মৃতদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আহত ইসমাইলকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় জনতা দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। তারা ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে আট থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত এসে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেলের ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পরে দুর্বৃত্তরা আর কে শিল্পালয়ে ঢুকে সোনার গহনা লুট করে এবং দোকানের মালিক অপুকে কুপিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পিকআপ ভ্যানে করে পালিয়ে যায়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দুজনক আটক করা হয়েছে। তাদের গাড়ি পালিয়ে যাবার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে একজন পথচারী মারা গেছেন। ঘটনার পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাজুস জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল। তিনি বলেন, আহত অপু কর্মকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডাকাতদল দোকানের সব স্বর্ণ নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দেব।