Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ার প্রায় ১৭ কি.মি. সড়ক যেনো মরণফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের একমাত্র সড়ক যেনো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্করণের কোন উদ্দ্যোগ গ্রহণ না করায় প্রায় রাস্তার এমন বেহাল দশা। শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু থেকে শুরু করে পুরাতন কুষ্টিয়াসহ আশেপাশের প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তাগুলো ভোগান্তি আর জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে। হরিপুরের প্রধান সড়ক দিয়ে শালদাহ, পুরাতন কুষ্টিয়া, বোয়ালদাহ, কান্তিনগরসহ আশেপাশের ৯টি ওয়ার্ডের কয়েকটা গ্রামের ৪২ হাজার ৫৭৫ জন মানুষদের চলাচলের একমাত্র রাস্তার এমন বেহাল দশায় জনমনে আলোচনা, সমালোচনা ও চাপা ক্ষোভ দীর্ঘদিনের।

অথচ একটা ছোট ইউনিয়নের জন্য সরকার শতকোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু বাস্তবায়ন হলেও শুধুমাত্র রাস্তার কোন সমাধান না হওয়ায় শত কোটি টাকার ব্রিজের কোন সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। হরিপুরে রাজনৈতিক নানা পালা বদল হলেও যুগ যুগ ধরে দৃশ্যমান উন্নয়ন না হওয়ায় সাধারণ মানুষদের আস্থা হারিয়েছে জনপ্রতিনিধিদের উপর। নির্বাচন আসলেই জনপ্রতিনিধিরা গল্পের ফুলঝুরি নিয়ে জনগণের কাছে ভোট কামনা করে। সাধারণ জনগণ গ্রামের উন্নয়ন হওয়ার আশায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন, নির্বাচনের ৫বছর মেয়াদ শেষ হলেও উন্নয়নের শুরুটাও হয়না।

সরেজমিনে দেখা যায় যে, সরু রাস্তা, ভাঙা গর্ত, উঁচু নিচু রাস্তা একটু বৃষ্টি দেখা দিলেই পানি জমে কাদামাটিতে একাকার চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। কোথাও কোথাও রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। পুকুর সংলগ্ন রাস্তাগুলোতে কোন প্রটেকশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তায় বাস বা ট্রাক ঢুকলে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। রাস্তায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় যানবাহনের মুখোমুখি দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়, খেটে খাওয়া অসহায় দিন মজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষদের।

হরিপুর বাসীর দীর্ঘ দিনের আন্দোলন, সংগ্রাম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী ২০১৭ সালে ২৪ই মার্চ শত কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০৪.৫৫ মিটার শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু উদ্বোধনের পর হরিপুরের শত শত যুবক আত্নকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে খামার গড়ে তোলে।

কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আশার মুখ দেখিনি, লোকসানে মুখ থুবড়ে পড়েছে খামারগুলো। স্কুল, কলেজ, মাদরাসাগামী শত শত কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে তরুণ তরুণীরাও ভোগান্তি থেকে রেহাই পায়নি। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাটা যেনো গোদের উপর বিষ ফোড়ায় পরিণত হয়েছে। এছাড়াও রাস্তার অতিরিক্ত ধুলোবালিতে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য হানি ঘটছে। আগুন লাগলে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই। এমন হাজারো ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

এছাড়াও গরীবের কক্সবাজার খ্যাত শালদাহ গ্রামে অবস্থিত পদ্মা গড়াই মোহনায় প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্যের সমারোহ ঘেরা পদ্মা গড়াই মোহনায় বিশেষ দিন ঘিরে কুষ্টিয়া শহর সহ আশেপাশের এলাকায় শত শত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা রাস্তার বেহাল দশায় দর্শনীয় জায়গায় দর্শনার্থীদের আগমন অনেক কমেছে। অথচ এই পদ্মা গড়াই মোহনায় আগত দর্শনার্থীদের আগমনে স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে ছিলো। দীর্ঘদিনের রাস্তার বেহাল দশায় হরিপুর রাজনীতিতে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষদের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটা দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য কমপক্ষে ১২ ফুট প্রশস্ত করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী। হরিপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর মেম্বার, চেয়ারম্যান প্রতিশ্রুতি দিলেও কামের বেলায় কিছু নাই।

এই ব্যাপারে ১নং হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. মোস্তাক হোসেন মাসুদ জানান, আমি নির্বাচনে ইস্তেহারে হরিপুরের রাস্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দিয়েছি। এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আশা করি খুব শিগগিরই হরিপুরের দীর্ঘদিনের রাস্তা নিয়ে জনদুর্ভোগ নিরসন হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুষ্টিয়ার প্রায় ১৭ কি.মি. সড়ক যেনো মরণফাঁদ

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৮:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের একমাত্র সড়ক যেনো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্করণের কোন উদ্দ্যোগ গ্রহণ না করায় প্রায় রাস্তার এমন বেহাল দশা। শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু থেকে শুরু করে পুরাতন কুষ্টিয়াসহ আশেপাশের প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তাগুলো ভোগান্তি আর জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে। হরিপুরের প্রধান সড়ক দিয়ে শালদাহ, পুরাতন কুষ্টিয়া, বোয়ালদাহ, কান্তিনগরসহ আশেপাশের ৯টি ওয়ার্ডের কয়েকটা গ্রামের ৪২ হাজার ৫৭৫ জন মানুষদের চলাচলের একমাত্র রাস্তার এমন বেহাল দশায় জনমনে আলোচনা, সমালোচনা ও চাপা ক্ষোভ দীর্ঘদিনের।

অথচ একটা ছোট ইউনিয়নের জন্য সরকার শতকোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু বাস্তবায়ন হলেও শুধুমাত্র রাস্তার কোন সমাধান না হওয়ায় শত কোটি টাকার ব্রিজের কোন সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। হরিপুরে রাজনৈতিক নানা পালা বদল হলেও যুগ যুগ ধরে দৃশ্যমান উন্নয়ন না হওয়ায় সাধারণ মানুষদের আস্থা হারিয়েছে জনপ্রতিনিধিদের উপর। নির্বাচন আসলেই জনপ্রতিনিধিরা গল্পের ফুলঝুরি নিয়ে জনগণের কাছে ভোট কামনা করে। সাধারণ জনগণ গ্রামের উন্নয়ন হওয়ার আশায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন, নির্বাচনের ৫বছর মেয়াদ শেষ হলেও উন্নয়নের শুরুটাও হয়না।

সরেজমিনে দেখা যায় যে, সরু রাস্তা, ভাঙা গর্ত, উঁচু নিচু রাস্তা একটু বৃষ্টি দেখা দিলেই পানি জমে কাদামাটিতে একাকার চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। কোথাও কোথাও রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। পুকুর সংলগ্ন রাস্তাগুলোতে কোন প্রটেকশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তায় বাস বা ট্রাক ঢুকলে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। রাস্তায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় যানবাহনের মুখোমুখি দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়, খেটে খাওয়া অসহায় দিন মজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষদের।

হরিপুর বাসীর দীর্ঘ দিনের আন্দোলন, সংগ্রাম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী ২০১৭ সালে ২৪ই মার্চ শত কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০৪.৫৫ মিটার শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু উদ্বোধনের পর হরিপুরের শত শত যুবক আত্নকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে খামার গড়ে তোলে।

কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আশার মুখ দেখিনি, লোকসানে মুখ থুবড়ে পড়েছে খামারগুলো। স্কুল, কলেজ, মাদরাসাগামী শত শত কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে তরুণ তরুণীরাও ভোগান্তি থেকে রেহাই পায়নি। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাটা যেনো গোদের উপর বিষ ফোড়ায় পরিণত হয়েছে। এছাড়াও রাস্তার অতিরিক্ত ধুলোবালিতে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য হানি ঘটছে। আগুন লাগলে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই। এমন হাজারো ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

এছাড়াও গরীবের কক্সবাজার খ্যাত শালদাহ গ্রামে অবস্থিত পদ্মা গড়াই মোহনায় প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্যের সমারোহ ঘেরা পদ্মা গড়াই মোহনায় বিশেষ দিন ঘিরে কুষ্টিয়া শহর সহ আশেপাশের এলাকায় শত শত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা রাস্তার বেহাল দশায় দর্শনীয় জায়গায় দর্শনার্থীদের আগমন অনেক কমেছে। অথচ এই পদ্মা গড়াই মোহনায় আগত দর্শনার্থীদের আগমনে স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে ছিলো। দীর্ঘদিনের রাস্তার বেহাল দশায় হরিপুর রাজনীতিতে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষদের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটা দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য কমপক্ষে ১২ ফুট প্রশস্ত করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী। হরিপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর মেম্বার, চেয়ারম্যান প্রতিশ্রুতি দিলেও কামের বেলায় কিছু নাই।

এই ব্যাপারে ১নং হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. মোস্তাক হোসেন মাসুদ জানান, আমি নির্বাচনে ইস্তেহারে হরিপুরের রাস্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দিয়েছি। এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আশা করি খুব শিগগিরই হরিপুরের দীর্ঘদিনের রাস্তা নিয়ে জনদুর্ভোগ নিরসন হবে।