নিজস্ব প্রতিবেদক :
ডেঙ্গু মৌসুমের আগেই এবার গত বছরের তুলনায় দেশে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা পাঁচগুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচগুণ হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭০৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে পাঁচগুণ। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য সিট ও ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ায় যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল যাতে প্রস্তুত থাকে, চিকিৎসক এবং নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হাসপাতালে করোনা এবং ডেঙ্গুর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে আড়াই হাজার নার্স-ডাক্তারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু সচেতনতায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম এবং সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়েছে। প্রচার প্রচারণার জন্য ব্যানার-পোস্টার তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সভা করা হয়েছে। যদি কোনো জরুরি ব্যবস্থা নিতে হয়, তার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।
জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসুন। চিকিৎসা নিলে ডেঙ্গু ভালো হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
এসময় করোনা নিয়ন্ত্রণে তৃতীয় ও চতুর্থ বুস্টার ডোজ হিসেবে চলতি সপ্তাহ থেকেই ৩০ লাখ ভ্যাকসিন দেয়া হবে বলেও জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, যারা তৃতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেননি, ১৮ বছরের বেশি বয়সী এমন ব্যক্তিদেরকে তৃতীয় ডোজ দেয়া হবে। এছাড়া ১৮ বছরের বয়সীদের, যারা ক্রনিক ডিজিজে আক্রান্ত, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরকে চতুর্থ বুস্টার ডোজ টিকা আগে দেয়া হবে। ফাইজারের এসব টিকা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে।
সবাইকে টিকা নিয়ে সুরক্ষিত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ টিকা নিয়েছে বলেই করোনা মারাত্মক আকার ধারণ করছে না। আমাদের মাস্ক পরা ছাড়াও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা যেকোনো সময় বাড়তে পারে বলে- এমন আশঙ্কা ক্ষীণ। টিকাদান চলমান রয়েছে। কিন্তু টিকা নেওয়ার সংখ্যা কম। কারণ, আক্রান্তের সংখ্যা কম এবং মৃত্যুও নেই।
কবে থেকে এ টিকা দেওয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আজকে সংবাদ সম্মেলন করে জানান দিলাম। এই সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যাবে। আমরা এরইমধ্যে টিকা ট্রায়ালের সম্পন্ন করেছি। ইমেডিয়েটলি দেওয়া হবে।
দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। অন্যদিকে সব বিধিনিষেধও উঠে গেছে, নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি জেনেভা থেকে এসেছি। সেখানে দেখলাম একটি লোকও মাস্ক পরেনি। সেখানে যে রোগী হচ্ছে না দু-একটা করে তা নয়। আমাদের এখানেও দু-একটি করে রোগী পাচ্ছি। ইদানীং কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে তেমন কোনো রোগী নেই। যেহেতু সবাই টিকা নিয়েছে সেজন্য মারাত্মক আকার ধারণ করছে না করোনা।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলবো, করোনা যেহেতু আছে আমাদের সতর্ক থাকাটা ভালো। যেখানে বেশি লোকের সমাগম হয় সেখানে মাস্ক পরতে পারলে ভালো। করোনা মোকাবিলার জন্য যে অভিজ্ঞতা আমরা সঞ্চয় করেছি, সেগুলো আমাদের মনে রাখা উচিত। কারণ যে কোনো সময় বাড়তেও পারে অতিরিক্ত, এখন সেরকম কোনো আশঙ্কা আমরা পাচ্ছি না।