নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি নেতারা যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গালিগালাজের ভাষায় কথা বলে, হত্যার হুমকি দেয় তখন বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট পায় বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ হুমকির ফলে বিএনপির ভোট কমেছে। কমতে কমতে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আর আওয়ামী লীগের লাখ লাখ ভোট বেড়েছে।
শুক্রবার (২৬ মে) বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সেই মিথ্যাচারী দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার হুমকি দেয়। তাদের শীর্ষ নেতারা ‘স্লিপ অব টাঙ’ বলে এটাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া কী কখনও স্লিপ অব টাঙ হতে পারে?
তিনি বলেন, দেশের একটি মহল দিন রাত শেখ হাসিনার দুর্নাম করে বেড়ায়। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়। শেখ হাসিনা বলেছেন সহ্য করতে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা দেশ দিয়ে গেছেন, আজ তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে উন্নত সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জালানি সংকট, এটা সারা বিশ্বের সংকট। শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে দেশের বাইরে গেছেন দুই দিনের জন্য আবারও কাতার গেছেন সেখানকার আমিরের সঙ্গে এ চুক্তি করেছেন, দেশের জন্য জ্বালানি নিশ্চয়তা নিয়ে এসেছেন। কাতারের আমির আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশের জ্বালানির সংকট হবে না। তিনি নিজের জন্য যাননি তিনি গেছেন দেশের মানুষের জন্য। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য, গরিব মানুষ যাতে কষ্ট না পায়,সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়ে, নিত্য-পণ্য যাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতে পারে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর রাতে ঘুম নেই, নিজের ঘুমকে, আরামকে তুচ্ছ করে দেশের জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজকে আমাদের মাঝে আছেন, তিনি আছেন বলে আমরা আশ্বস্ত হই, মানুষ আস্থা পায়। মানুষ বলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দুর্নীতি করতে পারেন না, বঙ্গবন্ধুর কন্যা মিথ্যা কথা বলেন না, বঙ্গবন্ধুর কন্যা নিজের ভাগ্য উন্নয়ন বড় মনে করে না, জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন বড় মনে করেন। তিনি জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন চান, নিজেদের পকেটের উন্নয়ন চান না। এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যখন মির্জা ফখরুলরা গালিগালাজের ভাষায় কথা বলে, হত্যার হুমকি দেন, বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট পায়। শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিলে তোমাদের ভোট চলে যাবে। আরও কমে যাবে। কম কমতে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে।
তিনি বলেন, আমি বলব আপনার কাজ করে যান। আমাদের মধ্যে কেউ খারাপ কাজ করলে তাকে সংশোধন করুন। তাকে ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করুন। শেখ হাসিনার উন্নয়ন আর আমাদের নেতাকর্মীদের ভালো আচরণ, এ দুটা বিষয়ই নির্বাচনে জয় লাভের হাতিয়ার।
আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নির্বাচন আমরা করব। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী আমাদের নির্বাচন হবে। আমাদের জনগণ আমাদের সিস্টেমে চলবে। আমরা কারো ভয়ে আতঙ্কিত নই। কারো ধমকিতে বা কারো নিষেধাজ্ঞায় মাথা নিচু করবে না আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় দীর্ঘদিন আছেন বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন তরতরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। একটা দলের যিনি প্রধান, তাদের দেশনেত্রীর ৬ টা জন্মনিবন্ধন। যে দলের নাম্বার ওয়ান লিডারের ৬টা জন্মনিবন্ধন এমন মিথ্যাবাদী, মিথ্যাচারী দলের ক্ষমতায় আসার কোনো দরকার নেই।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারলো কিনা, তার চেয়ে বড় কথা হলো গণতন্ত্র জয়লাভ করেছে। শেখ হাসিনা ওয়াদা (সুষ্ঠু নির্বাচনের) পূরণ করেছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলে দেশের মানুষ যতোটা খুশি হতেন, তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন হওয়ায়। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই, জনগনকে ধন্যবাদ জানাই এবং বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই।
এই নির্বাচনে ‘একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি এতদিন মিথ্যাচার করে আসছে এই সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়; সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনা ওয়াদা পূরণ করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারবে কিনা তার চেয়ে বড় কথা হলো গণতন্ত্র জয়লাভ করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর যে সিটি নির্বাচন হয়েছে, আগামীতে আরও চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন একইভাবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে।
মার্কিন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আমরা বাধা দেব কেন? আমাদের দেখা দরকার কারা নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে। যারা নির্বাচন চায় না। তত্ত্বাবধায়ক চায়। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। কোনো বিদেশি বন্ধু একবারও কাউকে বলেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে। যারা নির্বাচনে বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে এ ভিসানীতি কার্যকর হয় কিনা সেটা দেখার বিষয়।
দণ্ডিত তারেক রহমান প্রতিনিয়ত অনলাইনে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দণ্ডিত ব্যক্তি কী করে প্রতিদিন রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে? আদালতের আদেশ কেন মানছে না তারেক? মনের মতো না হলে তারা আদালত-আইন কিছুই মানে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির।