Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে সরকার: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শুক্রবার (২৬ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলা যাবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে, তারা সেটাই চেষ্টা করেছে। ওই চেষ্টার ফলাফল আমরা দেখে ফেলেছি। তার মাধ্যমে কী উঠে এসেছে আমরা দেখেছি সবাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের আসল চিত্র।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলবাজদের প্রভাব এত বেশি হয়ে গেছে যে বাংলাদেশে সাধারণ যারা সাংবাদিক রয়েছে, যারা প্রফেশনালি সাংবাদিক রয়েছে, যারা সাংবাদিকতার পেশা হিসেবে নিতে চায় তাদের স্পেস সীমিত হয়ে গেছে। দলবাজরা নির্লজ্জভাবে তৈল মর্দন করতে করতে সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে। কিছু সাংবাদিকদের জন্য সমস্ত সাংবাদিকদের কলঙ্ক বহন করতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, যারা সাংবাদিকতা করতে আসছেন কতটুকু সাংবাদিকতা করতে পারছেন সেটা আপনাদের থেকে কেউ ভালো জানে না। আজকে সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ বিদেশে অবস্থান করছে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারছে না। তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে। আজকের দুবাই, লন্ডন ও আমেরিকা যেখানেই যান না কেন সাংবাদিকদের দেখা যায়। আবার অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। সুতরাং সাংবাদিকদের যে মানদণ্ড এটা যদি ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সম্মান ফিরিয়ে না আনলে আপনারা স্বাধীন সাংবাদিকতার যে বিশ্ব মানদণ্ড সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না। যার যার অবস্থান থেকে সকলকে কাজ করতে হবে।

খসরু বলেন, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সাংবাদিকদের অবদান ছাড়া গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোনটাই অর্জন করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সাংবাদিকরা হাতে হাত মিলিয়ে চলার কথা সেখানে যদি একটি পক্ষ আলাদা হয়ে যায় তাহলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক এবং সাংবাদিকদের যে একটি পরিবেশ থাকার কথা স্বাভাবিকভাবে সেটি থাকবে না বাংলাদেশে। সেটাই আজকে হচ্ছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের পরে এখন আরেকটা আসছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা এ্যাক্ট’। আরও আইন আসবে, আরও নিপীড়ন-নির্যাতনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে না পারি, ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ যদি প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে আগামী দিনে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক কোনো সরকার আপনারা পাবেন না। সেজন্য নিশ্চিতভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আগামী নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে বলে উল্লেখ করে খসরু বলেন, এর কোনও বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আলোচনা আসছে পরে। প্রথমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আগে নির্বাচনী আলোচনা একটি ব্যর্থ আলোচনা। যারা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আগে নির্বাচনী আলোচনার কথা বলছেন, তারা এ সরকারের পক্ষে কাজ করছেন।

এ বিএনপি নেতা বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দমন করছে সরকার। এছাড়া কিছু মানুষের জন্য আজ সাংবাদিকরা হুমকির মুখে। অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু সাংবাদিকতায় মানদণ্ড ফিরিয়ে আনতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

খসরু বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না গেলে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আসতেই থাকবে।

খসরু আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ভিসা নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের দায়িত্ব ও নির্বাচন সুষ্ঠু করার কথা বলা হয়েছে। তার মানে হলো, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়।

এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে দমন করছে সরকার। সাগর রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে এমন কিছু আছে যা প্রকাশ করতে সরকার ভয় পায়।

সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, আবুল কালাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপুসহ রিপোর্টাস ইউনিটির সদস্যরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে সরকার: আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০২:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শুক্রবার (২৬ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলা যাবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে, তারা সেটাই চেষ্টা করেছে। ওই চেষ্টার ফলাফল আমরা দেখে ফেলেছি। তার মাধ্যমে কী উঠে এসেছে আমরা দেখেছি সবাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের আসল চিত্র।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলবাজদের প্রভাব এত বেশি হয়ে গেছে যে বাংলাদেশে সাধারণ যারা সাংবাদিক রয়েছে, যারা প্রফেশনালি সাংবাদিক রয়েছে, যারা সাংবাদিকতার পেশা হিসেবে নিতে চায় তাদের স্পেস সীমিত হয়ে গেছে। দলবাজরা নির্লজ্জভাবে তৈল মর্দন করতে করতে সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে। কিছু সাংবাদিকদের জন্য সমস্ত সাংবাদিকদের কলঙ্ক বহন করতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, যারা সাংবাদিকতা করতে আসছেন কতটুকু সাংবাদিকতা করতে পারছেন সেটা আপনাদের থেকে কেউ ভালো জানে না। আজকে সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ বিদেশে অবস্থান করছে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারছে না। তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে। আজকের দুবাই, লন্ডন ও আমেরিকা যেখানেই যান না কেন সাংবাদিকদের দেখা যায়। আবার অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। সুতরাং সাংবাদিকদের যে মানদণ্ড এটা যদি ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সম্মান ফিরিয়ে না আনলে আপনারা স্বাধীন সাংবাদিকতার যে বিশ্ব মানদণ্ড সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না। যার যার অবস্থান থেকে সকলকে কাজ করতে হবে।

খসরু বলেন, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সাংবাদিকদের অবদান ছাড়া গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোনটাই অর্জন করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সাংবাদিকরা হাতে হাত মিলিয়ে চলার কথা সেখানে যদি একটি পক্ষ আলাদা হয়ে যায় তাহলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক এবং সাংবাদিকদের যে একটি পরিবেশ থাকার কথা স্বাভাবিকভাবে সেটি থাকবে না বাংলাদেশে। সেটাই আজকে হচ্ছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের পরে এখন আরেকটা আসছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা এ্যাক্ট’। আরও আইন আসবে, আরও নিপীড়ন-নির্যাতনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে না পারি, ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ যদি প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে আগামী দিনে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক কোনো সরকার আপনারা পাবেন না। সেজন্য নিশ্চিতভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আগামী নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে বলে উল্লেখ করে খসরু বলেন, এর কোনও বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আলোচনা আসছে পরে। প্রথমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আগে নির্বাচনী আলোচনা একটি ব্যর্থ আলোচনা। যারা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আগে নির্বাচনী আলোচনার কথা বলছেন, তারা এ সরকারের পক্ষে কাজ করছেন।

এ বিএনপি নেতা বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দমন করছে সরকার। এছাড়া কিছু মানুষের জন্য আজ সাংবাদিকরা হুমকির মুখে। অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু সাংবাদিকতায় মানদণ্ড ফিরিয়ে আনতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

খসরু বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না গেলে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আসতেই থাকবে।

খসরু আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ভিসা নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের দায়িত্ব ও নির্বাচন সুষ্ঠু করার কথা বলা হয়েছে। তার মানে হলো, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়।

এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে দমন করছে সরকার। সাগর রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে এমন কিছু আছে যা প্রকাশ করতে সরকার ভয় পায়।

সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, আবুল কালাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপুসহ রিপোর্টাস ইউনিটির সদস্যরা।