নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়া রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পুলিশের সবশেষ পদক্ষেপও জানতে চেয়েছেন আদালত।
সোমবার (২২ মে) সকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি উত্থাপন করেন। এ সময় আদালত ওই আসামিকে গ্রেফতার করার বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষকে অভহিত করতে বলেন।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। পরে তিনি জানান, আদালত প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা সেটি জানতে চেয়েছিলেন। রাজশাহীর পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে, তবে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। বিষয়টি জানানোর পর হাইকোর্ট বলেছেন, মামলা হলে এখন আসামিকে গ্রেফতার করা পুলিশের দায়িত্ব।
এ সময় রাজশাহীর পুলিশ সুপার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’র ঘটনায় মামলা হলেও এখনও আসামি গ্রেফতার হয়নি।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ, গায়েবি মামলা ও গণগ্রেফতার বন্ধ, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ ও ১০ দফা দাবিতে গত শুক্রবার রাজশাহীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কবরস্থানে’ পাঠানোর হুমকি দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আর ২৭ দফা-১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। এক দফা- শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে, শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যা যা করার দরকার, আমরা করব ইনশাআল্লাহ।
এই বিষয়ে শনিবার (২১ মে) বিকেলে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৯ তারিখে হত্যার হুমকি দিয়ে আবু সাঈদ আজ ২১ তারিখেও বাইরেই আছেন, জেলে যাননি। আমি জানি না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কতটা অবগত। আমার কাছে এই হুমকির ভিডিও আছে।
পরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ প্রকাশ্য জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার (২২ মে) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হবে।
রাজশাহী বিএনপির ওই নেতার বক্তব্যের বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তার ভাষা শুনেন! ‘শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠিয়ে দিতে হবে।’ তার ধৃষ্টতা কতটুকু। আমি শুধু এ কথা বলতে চাই যে আমরা চ্যালেঞ্জ করি, আসেন মাঠে। কে, কাকে, কোথায় পাঠায় আমরা একটু দেখে নেব। আপনাদের জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলবে মানুষ। কথাবার্তায় লাগাম ছাইড়েন না। লাগামের মধ্যে থাকেন।