পাবনা জেলা প্রতিনিধি :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই দেশ স্বাধীন হয়েছে এবং তার আদর্শই ছিল আমাদের মূল মন্ত্র।
মঙ্গলবার (১৬ মে) পাবনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সাহাবুদ্দিন বলেন, অনেককে অনেক দর্শন নিয়ে রাজনীতি করতে দেখেছি। ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি পরে অনেক বই-পুস্তক পকেটে রেখে লেবাস নিয়ে কত দর্শনের কথা বলতে দেখেছি। কিন্তু মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে একজনের কথা এবং আদর্শকে সামনে রেখেই আমরা লড়েছি। তিনি আর কেউ নন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, সেই সময়ের রাজনৈতিক নেতারা ত্যাগের রাজনীতি করতেন। আমি নিজে কখনো ভোগের রাজনীতি করিনি। জ্ঞানী মানুষদের সঙ্গে থাকলে অনেক কিছু শেখা যায়। সেই সময়ে দেখেছি বাম রাজনীতিবিদরা তাদের আদর্শের নেতাদের বই ও ছবি পকেটে নিয়ে ঘুরে বেরাতেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, এ দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের প্রায় সব প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি। কখনো কারো কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করিনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রজনীতি করেছি। এ পাবনা জেলার অনেক বাম ও ডান রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে জেল খেটেছি, শিখেছি অনেক কিছু। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে ভালোবেসে এ সম্মান দান করেছেন। আমি দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য কাজ করে যেতে চাই।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, কোনও সমাজ ব্যবস্থা ধার করে চলে না। সমাজ ব্যবস্থা চলবে দেশের মানুষ কী চায় তার ভিত্তিতে। মানুষের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে সমাজ ব্যবস্থা করে গড়ে তুলতে হবে।
রাষ্ট্রপতি তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে বলেন, অনেক গৌরবোজ্জ্বল দিন এই প্রেসক্লাবে অতিবাহিত করেছি। বিভিন্ন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। ৭০-৭৫ জনকে চাকরি দিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রতিদান নিইনি। আমি সবসময় ত্যাগের রাজনীতি করেছি, কোনো ভোগের রাজনীতি করি নাই।
মতবিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি পাবনা প্রেসক্লাবের ২২তম সদস্য, আবার দেশেরও ২২তম রাষ্ট্রপতি। আমি দৈনিক বাংলার বাণীতে জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছি। পাবনায় আমার কয়েকটি আড্ডাস্থলের মধ্যে প্রধান আড্ডার কেন্দ্র ছিল প্রেস ক্লাব। এটি দেশের স্বনামধন্য প্রেস ক্লাব। অনেক প্রথিতযশা সাংবাদিক এখানে ছিলেন। আমি এই ক্লাবের সদস্য হিসেবে খোলামেলাভাবে আজ আড্ডা দিতে এসেছি। কিন্তু প্রটোকলের নিয়মকানুন একটি বাধা।
প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাছারাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, সাবেক সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ প্রমুখ।
সভার শুরুতে প্রেসক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং রাষ্ট্রপতিসহ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করা হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি পাবনা বিসিক শিল্পনগরীতে স্কয়ার সায়েন্স অ্যান্ড লাইফ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন। তিনি বিকেলে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।