সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়ার আভাস দিলেন তিনি।
সোমবার (১ মে) দুপুরে মে দিবস উপলক্ষে নগরের রেজিস্টারি মাঠে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের শোভাযাত্রা এবং সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এখন অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আছি। অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব।
আরিফ আরও বলেন, বিএনপি কেনো নির্বাচনে যাবে না তার ব্যাখ্যাসহ কারণ এবং কেনো সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব, এ দুটি বিষয়ে জানাতে ২০ মে রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ আহ্বান করেছি। ওই সমাবেশে সবকিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জনগণের কাছে তুলে ধরব।
এ সময় তিনি ইভিএম পদ্ধতির সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, সিটি নির্বাচন একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। যেখানে জাতীয় ভাবে সারা দেশে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, সেখানে আবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম দেওয়া হয়েছে। এই ইভিএম হচ্ছে তাদের মেকানিজমের অন্যতম বিষয়। যে নির্বাচনে আপনারা আপনাদের পছন্দের লোকদের ভোট দিবেন সেই ভোট অন্য পাত্রে চলে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা দেখতে পাই এই মহানগরীর জনগণ ইভিএমের সঙ্গে কোনোভাবেই পরিচিত নয়। কাজেই এই নির্বাচন কমিশনকে বলব যদি তারা ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে চায়, জনগণের বিরুদ্ধে কিছু হলে এর দায় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের চোখ থাকতে যদি অন্ধ হয়ে যায় তবে কিছু বলার নেই।
তিনি বলেন, যে ইভিএম প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে সেই ইভিএম দিয়ে সিটি নির্বাচন মানি না। সিটি নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। ইভিএম কোনো ভোট মানি না।
মেয়র আরিফ বলেন, সিলেটের মানুষ অধিকার আদায়ে সব সময় সোচ্চার। আন্দোলন করে রেফারেন্ডামের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সিলেটের মানুষ।
বক্তব্যে মেয়র অভিযোগ করে বলেন, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই সিলেট মহানগরীর ভিতরে প্রশাসনিক রদবদল চলছে।
নতুন করে প্রশাসনে যারা সিলেটে এসেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের মাটিতে ওলি আউলিয়ারা ঘুমিয়ে আছেন, এটি আধ্যাত্মিক নগরী। এই নগরীতে অন্যায় করে কেউ অতিতে পার পায়নি, ভবিষ্যতেও পার পাবে না।
তিনি বলেন, প্রশাসনে যারা আসছেন তাদের সব তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে।
আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে আরিফুল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সিলেট মহানগরীর রাজনৈতিক নেতারা নেতৃত্ব দিতে জানে, বাইরে থেকে কাউকে ভাড়া করে নিয়ে এসে মহানগরীর মানুষকে দাস বানানো মানবে না নগরীর মানুষ।
বক্তব্যের শেষে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, গত ১০ বছর তিনি নগরবাসীর সেবা করেছেন। সিলেট মহানগরীর রাজনৈতিক নেতারা নেতৃত্ব দিতে জানে, বাইরে থেকে কাউকে ভাড়া করে নিয়ে এসে মহানগরীর মানুষকে দাস বানানো মানবে না নগরীর মানুষ।
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সিটি নির্বাচনও বর্জন করেছে দলটি। এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি-না তা নিয়ে শুরু থেকেই ধোঁয়াশা ছিল।
এদিকে, সময় সংবাদকে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিলেট সিটিতে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে এবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।