স্পোর্টস ডেস্ক :
৩৩৬ রানের বিশাল সংগ্রহ নিউজিল্যান্ডের। ব্যাট করার আগেই অর্ধেক হেরে বসার কথা পাকিস্তানের। কিন্তু গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে পাকিস্তান দলটি আরও বেশি রহস্যময়। কখন তারা কি করে বসে! বলা মুস্কিল। এ কারণে পাকিস্তান দলটির নামের পাশে সগৌরবে বসে গেছে ‘আনপ্রেডিক্টেবল।’ সেই আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান আরও একটি অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের করা ৩৩৬ রানের বিশাল স্কোরকে টপকে গেছে তারা। ১০ বল এবং ৭টি উইকেট হাতে রেখে অসাধারণ জয়টি তুলে নিয়েছে বাবর আজমের দল। দারুণ এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩৩৬ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। তবে বড় টার্গেটকে মামুলি বানিয়ে ফেলেন ১৪৪ বলে ১৮০ রানের ইনিংস খেলা ফখর জামান। অবিশ্বাস্য, অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন এই পাকিস্তানি ওপেনার। টি-টোয়েন্টি স্টাইলকেও যেন হার মানিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ১৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কার মার মেরেছেন তিনি ৬টি।
এদিকে দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে কিউইদের হয়ে দারুণ এক ইনিংস খেলেন ড্যারিল মিচেল। ১১৯ বলে ১২৯ রানের সেই ইনিংসে তিনি মারেন ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা। ক্যারিয়ারে এটি মিচেলের টানা দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে তৃতীয় সেঞ্চুরি।
তাছাড়াও বাওয়েস ৭টি চারের মারে করেন ৫১ রান। আর নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ল্যাথামের ব্যাট থেকে আসে ৮৫ বলে ৯৮ রান। সর্বশেষ নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রানের লড়াকু পুঁজি পায় সফরকারীরা। পাকিস্তানের হয়ে ৭৮ রান খরচে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন হারিস রউফ। আরেকটি উইকেট নেন নাসিম শাহ।
৩৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দারুণ খেলতে থাকেন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৬ রান তুলেন ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। ২৬ বলে ২৪ রান করে ইমাম আউট হলে দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক বাবর আজমকে সঙ্গী করে স্কোরবোর্ডে ১২২ বলে ১৩৫ রান যোগ করেন ফখর। এই জুটিই দলকে জয়ের আভাস জোগায়।
৩০তম ওভারে ২০১ রানের মাথায় ৬৬ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৬৫ রান করে আউট হন পাকিস্তান অধিনায়ক। চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা আবদুল্লাহ শফিকি খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। ১৪ বল খেলে ৭ রান করে আউট হন তিনি। ২১৮ রানের মাথায় আউট হন শফিকি।
বাকি পথ অনায়াসেই পাড়ি দিয়ে দেন ফাখর জামান এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১১৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা দু’জন। ফাখর জামানের আফসোস, সুযোগ পেলে হয়তো তিনি ডাবল সেঞ্চুরিটাও করে ফেলতে পারতেন। তবে অপরাজিত ১৮০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটাও জেতেন ফাখর।
আগামী বুধবার করাচিতে হবে তৃতীয় ওয়ানডে।
উল্লেখ্য, এবারই প্রথম ওয়ানডে ক্রিকেটে কিউইদের বিপক্ষে তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেল বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানরা। এর আগে ২০০৩ সালে লাহোরে ২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২ বল হাতে রেখে তিন উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল পাকিস্তান।