Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেট সিটির ১৩ ও ১৪ ওয়ার্ডে ছোট ছোট গলিতে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে মহল্লার অভ্যন্তরে কেউ অসুস্থ হলে বা জরুরি কোনো প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স বা মাঝারি কোনো যানবাহন চলাচলের সুবিধা নেই। ছোট গলির কারণে প্রায়ই এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বাসিন্দাদের।

এই ওয়ার্ডের এলাকাগুলো হচ্ছে মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, লামাবাজার, মাছুদীঘিরপাড়, রামেরদীঘিরপাড়, তালতলা, খুলিয়াপাড়া, শেখ নাসির আলী, কাজিরবাজার, তোপখানা, কাজিরবাজার (গরুহাটা) জামতলা, তেলিহাওর।

ওয়ার্ডের বাসিন্দা পিযুষ দাশ বলেন, কয়েক বছর আগে নগরের রামেরদীঘিরপাড়ের একটি বাসায় আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সে সময় মহল্লার সড়কটি সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যথাসময়ে উপস্থিত হলেও যাতায়াতের অসুবিধার কারণে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছাতে পারেনি। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।

ওয়ার্ডের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বর্ষা মৌসুমে জামতলায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। তালতলার ছড়াটি খনন এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। মাছুদীঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বলেন, মশার উপদ্রবে দিন-রাত কাটাতে হয়।

ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হবেন বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ওয়ার্ডটির উন্নয়ন হলেও অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় কম উন্নয়ন হয়েছে। সড়কবাতিগুলো ঘন ঘন নষ্ট হচ্ছে। তিনি সুন্দর পরিকল্পিত এবং জবাবদিহিমূলক ওয়ার্ড করতে চান। প্রতিবছর বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।

ওয়ার্ডের পাঁচবারের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত বলেন, ওয়ার্ডকে সুন্দর রাখতে কাজ করেছেন। সরু রাস্তার বিষয়টি নিয়ে তিনি মহল্লাগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রশস্ত করার চেষ্টা করছেন। নিজস্ব জায়গা কেউ ছাড়তে না চাওয়ায় সড়ক প্রশস্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। মশার উপদ্রবের জন্য মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সড়কবাতিগুলো মেরামত এবং নতুন করে লাগানোর জন্য নিয়মিত তদারক করা হয়।

এদিকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট ও আমজাদ আলী সড়কের পিচ এবং খোয়া উঠে গেছে। স্থানে স্থানে তৈরি হয়েছে গর্ত। সড়কের পাশে ইট-বালু রাখা হয়েছে। একটি মোড়ে সড়কের মাঝামাঝি খুঁড়ে কালভার্ট তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ভাঙাচোরা সড়কের পাশে উন্মুক্ত ঢাকনাবিহীন নর্দমা ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা।

কালীঘাট, আমজাদ আলী, মহাজনপট্টি, হকার মার্কেটসহ এলাকাটি পাইকারি ও খুচরা পণ্য বেচাকেনার জন্য প্রসিদ্ধ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজনের যাতায়াত রয়েছে এলাকাগুলোতে। ব্যস্ততম এলাকায় এমন অবস্থা চলছে প্রায় ছয় মাস ধরে।

ওয়ার্ডের এলাকাগুলোর মধ্যে জল্লারপাড়, ধোপাদীঘিরপাড়, ব্রহ্মময়ী বাজার, লালদীঘিরপাড়, আমজাদ আলী রোড, কালীঘাট, কাষ্টঘর, চালিবন্দরের একাংশ, বন্দরবাজার, মহাজনপট্টি তালতলা উত্তর, জামতলা পূর্ব, মির্জাজাঙ্গাল দক্ষিণ।

কালীঘাটের খোকন মিয়া বলেন, ঈদের পর থেকে সড়কটি খুঁড়ে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। এতে যানবাহনগুলো ঠিকমতো মালামাল সরবরাহ করতে পারছে না।

ওয়ার্ডের জল্লারপাড়ের জিন্দাবাজার-মির্জাজাঙ্গাল সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে সড়কটি সংস্কার করা হলেও প্রায় ৫০ গজ পরিমাণ জায়গা সংস্কার করা হয়নি। ওই সড়কের দক্ষিণ পাশ দেবে রয়েছে।

ছড়ারপাড় এলাকার রাজিউল করিম বলেন, প্রতিবছর বর্ষার সময় পানি বাড়লেই এলাকাটি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এতে ছড়া ও নর্দমা থেকে ময়লা পানি ঘরে প্রবেশ করে।

কালীঘাটের ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান বলেন, প্রায় ছয় মাস ধরে সড়কের নির্মাণকাজের জন্য নির্মাণসামগ্রী রাখা হচ্ছে সড়কে। এতে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ওয়ার্ডটির তিনবারের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। আগামীতে একটি সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয় করার ইচ্ছা রয়েছে। ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতে একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে কাজ করে অন্য অংশ উন্মুক্ত রাখতে হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলতে কালীঘাটে আধুনিক ভাগার তৈরি করা হয়েছে। নদীসংলগ্ন হওয়ায় পানি বাড়লে নদীর পানি উপচে এলাকায় প্রবেশ করে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সেটি হয়ে গেলে আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সিলেট সিটির ১৩ ও ১৪ ওয়ার্ডে ছোট ছোট গলিতে ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ০২:৫২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে মহল্লার অভ্যন্তরে কেউ অসুস্থ হলে বা জরুরি কোনো প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স বা মাঝারি কোনো যানবাহন চলাচলের সুবিধা নেই। ছোট গলির কারণে প্রায়ই এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বাসিন্দাদের।

এই ওয়ার্ডের এলাকাগুলো হচ্ছে মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, লামাবাজার, মাছুদীঘিরপাড়, রামেরদীঘিরপাড়, তালতলা, খুলিয়াপাড়া, শেখ নাসির আলী, কাজিরবাজার, তোপখানা, কাজিরবাজার (গরুহাটা) জামতলা, তেলিহাওর।

ওয়ার্ডের বাসিন্দা পিযুষ দাশ বলেন, কয়েক বছর আগে নগরের রামেরদীঘিরপাড়ের একটি বাসায় আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সে সময় মহল্লার সড়কটি সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যথাসময়ে উপস্থিত হলেও যাতায়াতের অসুবিধার কারণে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছাতে পারেনি। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।

ওয়ার্ডের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বর্ষা মৌসুমে জামতলায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। তালতলার ছড়াটি খনন এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। মাছুদীঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বলেন, মশার উপদ্রবে দিন-রাত কাটাতে হয়।

ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হবেন বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ওয়ার্ডটির উন্নয়ন হলেও অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় কম উন্নয়ন হয়েছে। সড়কবাতিগুলো ঘন ঘন নষ্ট হচ্ছে। তিনি সুন্দর পরিকল্পিত এবং জবাবদিহিমূলক ওয়ার্ড করতে চান। প্রতিবছর বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।

ওয়ার্ডের পাঁচবারের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত বলেন, ওয়ার্ডকে সুন্দর রাখতে কাজ করেছেন। সরু রাস্তার বিষয়টি নিয়ে তিনি মহল্লাগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রশস্ত করার চেষ্টা করছেন। নিজস্ব জায়গা কেউ ছাড়তে না চাওয়ায় সড়ক প্রশস্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। মশার উপদ্রবের জন্য মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সড়কবাতিগুলো মেরামত এবং নতুন করে লাগানোর জন্য নিয়মিত তদারক করা হয়।

এদিকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট ও আমজাদ আলী সড়কের পিচ এবং খোয়া উঠে গেছে। স্থানে স্থানে তৈরি হয়েছে গর্ত। সড়কের পাশে ইট-বালু রাখা হয়েছে। একটি মোড়ে সড়কের মাঝামাঝি খুঁড়ে কালভার্ট তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ভাঙাচোরা সড়কের পাশে উন্মুক্ত ঢাকনাবিহীন নর্দমা ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা।

কালীঘাট, আমজাদ আলী, মহাজনপট্টি, হকার মার্কেটসহ এলাকাটি পাইকারি ও খুচরা পণ্য বেচাকেনার জন্য প্রসিদ্ধ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজনের যাতায়াত রয়েছে এলাকাগুলোতে। ব্যস্ততম এলাকায় এমন অবস্থা চলছে প্রায় ছয় মাস ধরে।

ওয়ার্ডের এলাকাগুলোর মধ্যে জল্লারপাড়, ধোপাদীঘিরপাড়, ব্রহ্মময়ী বাজার, লালদীঘিরপাড়, আমজাদ আলী রোড, কালীঘাট, কাষ্টঘর, চালিবন্দরের একাংশ, বন্দরবাজার, মহাজনপট্টি তালতলা উত্তর, জামতলা পূর্ব, মির্জাজাঙ্গাল দক্ষিণ।

কালীঘাটের খোকন মিয়া বলেন, ঈদের পর থেকে সড়কটি খুঁড়ে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। এতে যানবাহনগুলো ঠিকমতো মালামাল সরবরাহ করতে পারছে না।

ওয়ার্ডের জল্লারপাড়ের জিন্দাবাজার-মির্জাজাঙ্গাল সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে সড়কটি সংস্কার করা হলেও প্রায় ৫০ গজ পরিমাণ জায়গা সংস্কার করা হয়নি। ওই সড়কের দক্ষিণ পাশ দেবে রয়েছে।

ছড়ারপাড় এলাকার রাজিউল করিম বলেন, প্রতিবছর বর্ষার সময় পানি বাড়লেই এলাকাটি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এতে ছড়া ও নর্দমা থেকে ময়লা পানি ঘরে প্রবেশ করে।

কালীঘাটের ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান বলেন, প্রায় ছয় মাস ধরে সড়কের নির্মাণকাজের জন্য নির্মাণসামগ্রী রাখা হচ্ছে সড়কে। এতে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ওয়ার্ডটির তিনবারের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। আগামীতে একটি সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয় করার ইচ্ছা রয়েছে। ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতে একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে কাজ করে অন্য অংশ উন্মুক্ত রাখতে হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলতে কালীঘাটে আধুনিক ভাগার তৈরি করা হয়েছে। নদীসংলগ্ন হওয়ায় পানি বাড়লে নদীর পানি উপচে এলাকায় প্রবেশ করে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সেটি হয়ে গেলে আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।