নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদের সপ্তম দিন। আজও নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে যাওয়া মানুষজন অবসরকে ছুটি দিয়ে ব্যস্ত নগরীতে ফিরছে। অনেকেই নিয়েছিলেন অতিরিক্ত ছুটি। ফলে সপ্তাহের ছুটির দিনেও ঢাকায় ফিরছেন তারা। সরকারি ছুটি শেষ হয়েছে আরও তিন দিন আগে। এখন যারা আসছেন অতিরিক্ত ছুটি কাটিয়ে কর্মে যোগ দেওয়া তাদের লক্ষ্য। কেউ আসছেন জরুরি প্রয়োজনে। কেউ স্বজনদের সাথে ঈদ করে ঢাকায় ফিরছেন।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে গাবতলী ও কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাসগুলো একে একে প্রবেশ করছে বাসস্ট্যান্ডে। সড়কে এখনো যানবাহনের আধিক্য না থাকায় দ্রুততম সময়েই ঢাকা ফিরতে পারছেন যাত্রীরা।
গাবতলী হানিফ কাউন্টার টাঙ্গাইল থেকে ফেরা আসমা বেগমের সাথে কথা হয়। তিনি বলছিলেন, স্বামী বাচ্চাদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করে ভালোই কাটল। কিন্তু ঢাকায় তো ফিরতে হবে এ কারণে ফেরা।
পাবনা থেকে আসা রফিকুল ইসলাম জানালেন, তারা দুই বন্ধু ও এক বান্ধবী একই গ্রামের। ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা পড়াশোনা করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। আজ তারা ফিরলেন কিছুক্ষণ আগে।
গাবতলী ট্রাফিক বক্সের বিপরীত পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই বন্ধু সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রফিকুলের আরেক বন্ধু সুজন বলছিলেন, গ্রাম থেকে আসতে তো মন চায় না। কিন্তু কর্মব্যস্ততা পড়াশোনার কারণে মানুষ ঢাকায় ফিরছে। এই ফেরা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন তারা।
হানিফ কাউন্টারের কর্মী এক জানান, সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের সকল রুটের তাদের বাসগুলো ডিপোতে এসে পৌঁছেছে। আরও কয়েকটা বাস পথে আছে। বিকেল নাগাদ আরও এক ডজন বাস উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় পৌঁছবে বলে আশা করছেন তারা।
গাবতলী ঘুরে দেখা গেছে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে দূরপাল্লার বাসে করে লোকজন এসে গাবতলীর বিভিন্ন পয়েন্টে নামছে। অধিকাংশ যাত্রীই বাস থেকে নামার পরে সিএনজি এবং রিকশা খুঁজছে। কারও সামর্থ্য না থাকলে লোকাল বাস ধরে ছুটছে বাসা অথবা গন্তব্যে।
তবে রাস্তার সরকারি ছুটি থাকায় মানুষজনের ঢাকায় ফেরাটা অনেকটা স্বস্তির হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। ঠাকুরগাঁও থেকে আসা আরমান রাকিব জানালেন, আগামীকাল থেকে তার অফিস শুরু হবে। তাই তিনি সরকারি ছুটির দিনে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সরকারি ছুটির আগের রাত ১টায় যাত্রা করে স্বস্তি নিয়ে ৯ ঘণ্টায় তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন।
রাকিব বলছিলেন, যাওয়ার সময় টাঙ্গাইল এলেঙ্গা যমুনা সেতু পার হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছিলাম। কিন্তু আসার সময়ে কোন বেগ পাইনি। পুরো রাস্তায় বাস চলমান ছিল। ঘুমিয়ে চলে আসলাম আর গাবতলীতে নেমে ফ্রেশ হলাম।
ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাস কাউন্টার থেকে তারা ঈদের আগে যে টিকিট কিনেছিলেন সেই টিকিট নিয়েই ফিরেছেন ঢাকায়। তবে তাদের অনেককে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়নি। যাত্রাপথে তেমন কোনো ভোগান্তি ছিল না। অধিকাংশ যাত্রী রাতের বাসে চড়ে কেউ ভোর বেলা, কেউ আবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা কোনো দূরপাল্লার বাসগুলো ঢুকছে। বাসচালক ও হেলপার জানালেন, আজ সরকারি ছুটি হওয়ায় আগামীকাল যারা কর্মে যোগ দেবেন এমন চাকরিজীবী মানুষই বেশি আজ ফিরছে।