নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জিয়াউর রহমানের পর্দার আড়ালে কুখ্যাত ভূমিকা অনুসন্ধান করে তা উন্মোচন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি মনে করি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালির গৌরবগাথা নতুন প্রজন্মকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জানতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ভাসানটেক সরকারি কলেজ মাঠে যুবলীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবরা ২০০৪ সালেও বলেছিলেন, ২১ এ আগস্ট শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিলেন। এখন তিনি বলছেন, আমরাই নাকি আগুন লাগিয়েছি। আমি অবাক হইনি, তাদের এ রকম অসংলগ্ন এবং অসংবেদনশীল কথা শুনে। যে দলের নেত্রী ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন তাদের রুচি সম্পর্কে আমার জানা আছে। জনগণ অনুমান করে যে, বিএনপি দায়ী। তারা যাদের সঙ্গে শরিক করেছে জামায়াত তারা-তো আগুন দেওয়ার প্রবর্তক; ১৯৭১ সাল তার প্রমাণ। ৭১ সালে এই জামায়াত আমাদের গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সালেও এই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। সুতরাং তাদের সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।
ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ১৭ এপ্রিল ছিল মুজিবনগর সরকার দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য দিন ১৭ এপ্রিল। এই দিন মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। যেখানে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সৃষ্টি করার পেছনে এই মুজিবনগর সরকার অসাধারণ কূটনৈতিক সফলতা প্রদর্শন করেছিল। সেখানে তিনি কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছিল সে ব্যাপারে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে আসার তাদের যোগ্যতা নেই। নির্বাচনে জিততে পারবে না সেটা তারা জানে। কারণ তারা গত ১৪ বছর মানুষের পাশে যায়নি। এই যে এত বড় করোনা গেল, সারা বিশ্বে মহামারির, এ যে রমজান গেল কিন্তু জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। তাই তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি মনে করে তারা নির্বাচনে না গেলে সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। আমি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছিল। কিন্তু তাতে বৈধতার কোনো সংকট হয়নি।
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার আহ্বান জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন জিয়াউর রহমানের পর্দার আড়ালের কুখ্যাত ভূমিকা অনুসন্ধান করে তা উন্মোচন করার আহ্বান জানাচ্ছি। সে কারণেই আমি মনে করি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালির গৌরবগাঁথা ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জানতে হবে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে আসার তাদের কোনো যোগ্যতা নাই। নির্বাচনে জিততে পারবে না তারা জানে। কারণ তারা গত ১৪ বছর মানুষের পাশে যায়নি। এই যে এত বড় করোনা গেল, এই যে রমজান গেল কিন্তু জনগণের পাশে দাঁড়ায় নাই। তাই তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি মনে করে তারা নির্বাচনে না গেলে সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। আমি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। কিন্তু তাতে বৈধতার কোনো সংকট হয় নাই। বরঞ্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। কোন একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বৈধতার কোনো সংকট হয় না।’
শেখ পরশ আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশের মানুষের ওপর যেরকম অত্যাচার করেছেন, আওয়ামী লীগের ভোটারদের চিহ্নিত করে আপনারা ঘরে ঢুকে পাকিস্তানী কায়দায় হত্যা করেছেন। যাতে এই সকল নির্যাতিত জনগণ বিচার না চাইতে পারে সেই জন্যই আপনারা বিচারালয়ে বোমাবাজি করেছেন বিচার প্রাপ্য জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য। ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনগণকে শাসন করতে চান আপনারা? আপনারা সেদিন দুইজন জজকে হত্যা করে সারা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং আইনের শাসন স্তব্ধ করে দিয়েছেন। আপনাদের অত্যাচার-নির্যাতনের বিচার যেন দেশের মানুষ চাইতে না পারে, সেজন্যই আপনারা সুপরিকল্পিতভাবে এই নৈরাজ্য এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। আমি বলি বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। যারা নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানি গোয়ান্দা সংস্থা এবং এলিট শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে। সুতরাং বিএনপির রাজনীতি এদেশে নিষিদ্ধ করা উচিত বলে আমি মনে করি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দেশের মেহনতি কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা আমাদের বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জানেন, আপনারা তাঁর শক্তি। তাই তিনি বারবার আমাদের জনগণের কাছেই পাঠান। আর আমরাও আপনাদের কাছে বার বার ফিরে আসি। আপনারাই আমাদের ভরসা, আমাদের প্রধান শক্তি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এনামুল হক খান, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দফতর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।