নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমরাও একমত, মার্কেটগুলোতে অগ্নিকাণ্ড রহস্যজনক। তবে ইতিহাস বলে দেয় আগুন সন্ত্রাসের কর্মকাণ্ডগুলো বিএনপি করেছে।
রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকালে মিরপুর-১৪ নম্বরে মাহে রমজান উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, জ্বালাও-পোড়াও তাদের (বিএনপির) পুরানো অভ্যাস। আন্দোলন জমানোর জন্য বিএনপি আগুন লাগানোর কৌশল বেছে নিতে পারে। আন্দোলন জমাতে বিএনপি আগুন লাগানোর কৌশল বেছে নিল কি না সেটা এখন বড় প্রশ্ন। এই রহস্য অবশ্যই উদঘাটন করা হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনার বিষয়ে জানিয়ে কাদের বলেন, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এখন থেকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। আগুন নিয়ে খেললে তার সমুচিত জবাব দেয়া হবে। সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিএনপির আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি বলেন, তাদের ১০ দফা, ২৭ দফা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। জনগণ ছাড়া গণআন্দোলন সম্ভব নয়। আন্দোলনের জন্য তারা আগুন লাগানোর কৌশল বেছে নিয়েছে কিনা সেটাই তদন্ত করে দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের জনসাধারণের মধ্যে ইফতার বিতরণ করে আর বিএনপি সামর্থ্যবানদের নিয়ে তার পার্টি করে। তাদের সঙ্গে এটা আমাদের পার্থক্য।
বিএনপি আবারও বিদেশিদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমেরিকা শুধু বিএনপিকে নয়, আওয়ামী লীগকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরাও গ্রহণ করেছি। পিটার হাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেক কথা হয়েছে। সে (পিটার হাস) একবারও নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, রোজা মুখে এত মিথ্যা কথা কীভাবে বলেন মির্জা ফখরুল? তিনি একজন প্যাথলজিক্যাল মিথ্যাবাদী। তার মুখ দিয়ে মিথ্যা ছাড়া কিছু শুনবেন না। ইফতারের আগে মিথ্যা কেন বলে রোজা রেখে? বিএনপি হচ্ছে ওই ধরনের ধর্মানুরাগী।’
বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নিয়ে বিএনপির অভিযোগ কীসের, এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নেতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালে যোগ দিয়েছিল কেন?
তিনি আরও বলেন, বিএনপি চায় ক্ষমতা আর শেখ হাসিনা চায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন। তারা জানে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সঙ্গে জয় পাওয়া সম্ভব নয়। তাই লন্ডন থেকে পলাতক দণ্ডিত আসামিরা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মনে খারাপ দিন। ওরা জানে নির্বাচন হলে শেখ হাসিনার সঙ্গে পারবে না। সত্যিকারের নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জিততে পারবে না। তারা আন্দোলন করে দেখেছে। নেতাকর্মী ছাড়া জনগণ নেই। জনগণ শেখ হাসিনাকে ভালোবাসে। জনগণ মনে করে শেখ হাসিনা সৎ, পরিশ্রমী। বিএনপি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। আজকে শেখ হাসিনা সেই বাংলাদেশকে সফল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি মানুষকে ভালোবাসে না। বিএনপি চায় ক্ষমতা। শেখ হাসিনা চায় মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন। বিএনপি চায় তাদের পকেটের উন্নয়ন। দুর্নীতি করে টাকা কামাবে, বিদেশে টাকা পাচার করবে। বাংলা ভাই তৈরি করবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটাবে।
কাদের বলেন, আমরা জীবিত থাকতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জীবিত থাকতে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান প্রমুখ।