Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ভোগান্তির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত এক যুগ ধরে চলছে বাস রেপিট ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। এ কারণে প্রতি বছরই ঈদযাত্রায় এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। ঢাকা ও গাজীপুর জেলার সংযোগ সেতু টঙ্গী ব্রিজ ঢাকা থেকে বের হতে ২৮ জেলার মানুষের ঢল নামে এই পথে। জরাজীর্ণ ও খানাখন্দে ভরা ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কে ঈদ যাত্রায় প্রতি বছরই যানজটে নাকাল হতে হয় মানুষকে। তবে অনেকে, বলছেন ঈদের আগে সড়কে যানবাহন বাড়বে অত্রযত্র যাত্রী উঠানো এবং বৃষ্টির কারণে এই সড়কে ঈদযাত্রায় এবারো ভোগান্তি হতে পারে।

চলমান বিআরটি প্রকল্পের কাজ, সরু রাস্তা, বিভিন্ন স্থানে গর্তসহ বেশ কিছু কারণে এবারও ঈদ যাত্রায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা করছেন যাত্রী, চালক ও স্থানীয়রা। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব মহলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে।

ঈদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তির শঙ্কা

বিআরটির কাজ শেষ না হওয়ায় গত ঈদের মতো এবারো উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথে যানজটের আশঙ্কা করছেন যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন। তবে এবার প্রকল্পের কাজ অনেকটা সম্পূর্ণ হওয়ায় যানজটের আশঙ্কা করছেন না (বিআরটি) কর্তৃপক্ষ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও আশ্বাস দিচ্ছেন এই সড়কে ভোগান্তি হবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এক দিকে চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ, পাশেই সংকুচিত সড়কে চলছে শত শত পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত যানবাহন। টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা থাকলেও বাকি অংশে তা নেই। বিআরটি প্রকল্পের টঙ্গী অংশে সড়কের ওপর উড়াল সড়ক এবং নিচে কার্পেটিং এখনও অনেক জায়গায় শেষ হয়নি। প্রকল্পের লোকজন বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের কাজ করছেন। কাজ চলমান থাকায় সড়ক সংকুচিত হয়ে মহাড়কের কোথাও তিন লেন, কোথাও আবার দুই লেনে পরিণত হয়েছে। এতে টঙ্গী এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। যার কারণে প্রায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

ঈদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তির শঙ্কা

এতে টঙ্গী এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে যার কারণে প্রায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। প্রতি বছর ঈদে ঘরমুখো উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তির শুরুটা হয় এই আব্দুল্লাহপুর টঙ্গী ব্রিজ থেকে। তুরাগ নদীর উপরের পুরনো টঙ্গী ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে তুরাগ নদীর ওপর তিনটি ভেলিব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে যার দুটি দিয়ে ঢাকামুখী পরিবহন প্রবেশ করেন এবং অন্যটি দিয়ে গাজীপুরমুখী পরিবহন যাতায়াত করে। এদিকে টঙ্গী ব্রিজ পার হয়ে সেনা কল্যাণ মার্কেটের সামনে সড়কের মাঝখানে হাঁটু পানি জমে।

সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে গেলে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই অবস্থা টঙ্গী ব্রিজ থেকে ভাটা গেট পর্যন্ত উড়াল সড়কের নিচে। যেখানে ঢাকামুখী লেনে চলছে সড়কের নির্মাণ কাজ এর জন্য কেটে ফেলা হয়েছে সড়কের বড় একটি অংশ। এই জায়গায় বিআরটি ফ্লাইওভারের উপর স্টেশন ওঠার জন্য লিফট বসানোর কাজও চলমান। ফলে ঢাকামুখী সংকুচিত এক লাইনে গাড়ি চলছে। মহাসড়কের এইখানে কয়েকটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া সড়ক পর্যন্ত অংশে বিআরটির ফ্লাইওভার এর জন্য ২০টি প্লেয়ার ও প্লেয়ারের ওপর গার্ডার বসানোর কাজ প্রায় শেষ। তবে মূল সড়কের ওপর নির্মাণ সামগ্রী ট্রেন ও শাটারিংয়ের জিনিসপত্র রাখায় সেখানে উভয়মুখী দুই লেনে গাড়ি চলাচল করছে দীর্ঘ গতিতে। এবারের ঈদযাত্রায় যানজটের ভোগুনতি হওয়ার আশঙ্কা টঙ্গী ব্রিজ থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত এই অংশটিও। এছাড়া গাজীপুরা বড়বাড়ি এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিআরটি স্টেশনের কাজ চলায় সেখানেও সংকুচিত হয়ে আছে মূল সড়ক, তবে চেরাগআলী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে নিচের সড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় যানজটের গতি বেড়েছে, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানোর ফলে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছেন অন্যবারের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির। কারণ বিআরটির প্রকল্পের আওতায় চলমান সড়কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঈদের আগে টঙ্গী অংশের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।

Eid

এছাড়া উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় বিআরটির উড়াল সেতুর ওঠানামার স্থানে বসানো দুটি স্পিড ব্রেকার ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে সড়কের ওপর ময়লা আবর্জনার একটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে যা ভেঙে ফেলার জন্য বিআরটি কর্তৃপক্ষ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশের ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে যাতে বৃষ্টিতে পানি না জমে। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ফ্লাইওভারের শাটারিংয়ের জিনিসপত্র খুলে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বিআরটি কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ বলছেন বিআরটির প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষজনকে ভয়াবহ যানজটে পড়তে হবে, এবার এই ঈদে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা ব্যাটারিচালিত রিকশা ইজিবাইক হাইওয়ে সড়কে চলাচল বন্ধের কার্যক্রম ব্যবস্থা নিতে হবে।

তবে টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত অংশে বিআরটির ফ্লাইওভারের জন্য ১০টি পিলার ও পিলারের ওপরে গার্ডার বসানোর কাজ প্রায় শেষ। তবে মূল সড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী, ক্রেন ও জিনিসপত্র, যন্ত্রাংশ যত্রতত্র ফেলে রাখায় সেখানে উভয়মুখী দুই লেনে গাড়ি চলাচল করছে। এ ছাড়া গাজীপুরা, বড়বাড়ি এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিআরটি ষ্টেশনের কাজ চলমান থাকায় সেখানেও সংকুচিত হয়ে আছে মূল সড়ক। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষত চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানোয় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে।

যাত্রীরা বলছেন, ঈদের সরকারি ছুটির সঙ্গে যদি পোশাক শিল্পে একই সঙ্গে ছুটি হয় তাহলে মহাসড়কে ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে মতো দিয়েছেন তারা। মেল কারখানাগুলো আগেই ছুটি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। বিয়ারটির পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা প্রকল্পের তরফ থেকে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছি। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। যে কাজগুলো বাকি আছে সেগুলো ঈদের আগে শেষ করার চেষ্টা করছি। গত বছরের ব্যবধানে এ প্রকল্পের অনেক কাজ হয়েছে হলে আমরা আশা করছি, গতবারের চেয়ে এবার কিছুটা স্বস্তি হতে পারে এই সড়কের যাত্রীদের।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক : ঈদ যাত্রায় ভোগাতে পারে টঙ্গীর ৩ কিমি পথ

চালকরা জানান, এই সড়কে বিমানবন্দর, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, চেরাগ আলী, কলেজ গেট গাজীপুরা ভোগরা বাইপাসে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এসব জায়গায় যানজট তৈরি হলে ঘণ্টা পর ঘণ্টা কেটে যায় সড়কে। উত্তরা আব্দুল্লাহপুর রুটে যে কাজ চলছে তা দীর্ঘদিন ধরেই একই অবস্থা। ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়লে এবং ছোট গাড়ি ঢুকে যানজট সৃষ্টি করে, তাছাড়া সেখানে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করা হয়, সেজন্য যানজট লেগে যায় স্বাভাবিক সময়ের আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় আসা যায়, কিন্তু ঈদের সময় যানজট হলে ১৩ ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় না।

ইমাম পরিবহনের চালক সুজন মিয়া বলেন, বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় দীর্ঘদিন ধরেই একই অবস্থা। ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়লে এবং সড়কে ছোট গাড়ি ঢুকে যানজট তৈরি করে। এছাড়া যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করা হয়। রাস্তা খারাপ ও ট্রাফিক পুলিশের উদাসীনতায় অনেক সময় যানজট লেগে যায়।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, আজমপুর বিএনএস টাওয়ার থেকে কলেজ গেইট পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক আমরা দুই লেন চালু করার চেষ্টা করছি। আমরা আশাবাদী তবে বিআরটি’র কাজের ওপর নির্ভর করবে। এটি চালু হলে টঙ্গী কেন্দ্রীক কোনো ঝামেলা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া সড়কের যেসব স্থানে রাস্তা সংকীর্ণ আছে সেখানে রাস্তা প্রশস্ত করা হচ্ছে। চৌরাস্তা একটু চ্যালেঞ্জিং, এজন্য এখানে বিআরটি’র যেসব লোহার খাচা-সাটারিংয়ের জিনিসপত্র রয়েছে সেগুলো অপসারণ করা হবে। আমরা পূর্ণ জনবল দেওয়ার পাশাপাশি রেকার থাকবে। কোনো গাড়ি নষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। আমরা আশা করছি রাস্তা আগের চেয়ে ভালো থাকায় এবার ঈদযাত্রা মানুষের স্বস্তির হবে। বড় ধরনের বৃষ্টিপাত বা অন্য কোনো সমস্যা না হলে মানুষকে সহজেই এ সড়ক দিয়ে পারাপার করতে পারব।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না : রিজওয়ানা হাসান

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ভোগান্তির শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ০৪:৪২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত এক যুগ ধরে চলছে বাস রেপিট ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। এ কারণে প্রতি বছরই ঈদযাত্রায় এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। ঢাকা ও গাজীপুর জেলার সংযোগ সেতু টঙ্গী ব্রিজ ঢাকা থেকে বের হতে ২৮ জেলার মানুষের ঢল নামে এই পথে। জরাজীর্ণ ও খানাখন্দে ভরা ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কে ঈদ যাত্রায় প্রতি বছরই যানজটে নাকাল হতে হয় মানুষকে। তবে অনেকে, বলছেন ঈদের আগে সড়কে যানবাহন বাড়বে অত্রযত্র যাত্রী উঠানো এবং বৃষ্টির কারণে এই সড়কে ঈদযাত্রায় এবারো ভোগান্তি হতে পারে।

চলমান বিআরটি প্রকল্পের কাজ, সরু রাস্তা, বিভিন্ন স্থানে গর্তসহ বেশ কিছু কারণে এবারও ঈদ যাত্রায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা করছেন যাত্রী, চালক ও স্থানীয়রা। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব মহলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে।

ঈদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তির শঙ্কা

বিআরটির কাজ শেষ না হওয়ায় গত ঈদের মতো এবারো উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথে যানজটের আশঙ্কা করছেন যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন। তবে এবার প্রকল্পের কাজ অনেকটা সম্পূর্ণ হওয়ায় যানজটের আশঙ্কা করছেন না (বিআরটি) কর্তৃপক্ষ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও আশ্বাস দিচ্ছেন এই সড়কে ভোগান্তি হবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এক দিকে চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ, পাশেই সংকুচিত সড়কে চলছে শত শত পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত যানবাহন। টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা থাকলেও বাকি অংশে তা নেই। বিআরটি প্রকল্পের টঙ্গী অংশে সড়কের ওপর উড়াল সড়ক এবং নিচে কার্পেটিং এখনও অনেক জায়গায় শেষ হয়নি। প্রকল্পের লোকজন বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের কাজ করছেন। কাজ চলমান থাকায় সড়ক সংকুচিত হয়ে মহাড়কের কোথাও তিন লেন, কোথাও আবার দুই লেনে পরিণত হয়েছে। এতে টঙ্গী এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। যার কারণে প্রায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

ঈদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তির শঙ্কা

এতে টঙ্গী এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে যার কারণে প্রায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। প্রতি বছর ঈদে ঘরমুখো উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তির শুরুটা হয় এই আব্দুল্লাহপুর টঙ্গী ব্রিজ থেকে। তুরাগ নদীর উপরের পুরনো টঙ্গী ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে তুরাগ নদীর ওপর তিনটি ভেলিব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে যার দুটি দিয়ে ঢাকামুখী পরিবহন প্রবেশ করেন এবং অন্যটি দিয়ে গাজীপুরমুখী পরিবহন যাতায়াত করে। এদিকে টঙ্গী ব্রিজ পার হয়ে সেনা কল্যাণ মার্কেটের সামনে সড়কের মাঝখানে হাঁটু পানি জমে।

সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে গেলে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই অবস্থা টঙ্গী ব্রিজ থেকে ভাটা গেট পর্যন্ত উড়াল সড়কের নিচে। যেখানে ঢাকামুখী লেনে চলছে সড়কের নির্মাণ কাজ এর জন্য কেটে ফেলা হয়েছে সড়কের বড় একটি অংশ। এই জায়গায় বিআরটি ফ্লাইওভারের উপর স্টেশন ওঠার জন্য লিফট বসানোর কাজও চলমান। ফলে ঢাকামুখী সংকুচিত এক লাইনে গাড়ি চলছে। মহাসড়কের এইখানে কয়েকটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া সড়ক পর্যন্ত অংশে বিআরটির ফ্লাইওভার এর জন্য ২০টি প্লেয়ার ও প্লেয়ারের ওপর গার্ডার বসানোর কাজ প্রায় শেষ। তবে মূল সড়কের ওপর নির্মাণ সামগ্রী ট্রেন ও শাটারিংয়ের জিনিসপত্র রাখায় সেখানে উভয়মুখী দুই লেনে গাড়ি চলাচল করছে দীর্ঘ গতিতে। এবারের ঈদযাত্রায় যানজটের ভোগুনতি হওয়ার আশঙ্কা টঙ্গী ব্রিজ থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত এই অংশটিও। এছাড়া গাজীপুরা বড়বাড়ি এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিআরটি স্টেশনের কাজ চলায় সেখানেও সংকুচিত হয়ে আছে মূল সড়ক, তবে চেরাগআলী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে নিচের সড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় যানজটের গতি বেড়েছে, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানোর ফলে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছেন অন্যবারের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির। কারণ বিআরটির প্রকল্পের আওতায় চলমান সড়কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঈদের আগে টঙ্গী অংশের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।

Eid

এছাড়া উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় বিআরটির উড়াল সেতুর ওঠানামার স্থানে বসানো দুটি স্পিড ব্রেকার ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে সড়কের ওপর ময়লা আবর্জনার একটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে যা ভেঙে ফেলার জন্য বিআরটি কর্তৃপক্ষ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশের ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে যাতে বৃষ্টিতে পানি না জমে। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ফ্লাইওভারের শাটারিংয়ের জিনিসপত্র খুলে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বিআরটি কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ বলছেন বিআরটির প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষজনকে ভয়াবহ যানজটে পড়তে হবে, এবার এই ঈদে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা ব্যাটারিচালিত রিকশা ইজিবাইক হাইওয়ে সড়কে চলাচল বন্ধের কার্যক্রম ব্যবস্থা নিতে হবে।

তবে টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত অংশে বিআরটির ফ্লাইওভারের জন্য ১০টি পিলার ও পিলারের ওপরে গার্ডার বসানোর কাজ প্রায় শেষ। তবে মূল সড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী, ক্রেন ও জিনিসপত্র, যন্ত্রাংশ যত্রতত্র ফেলে রাখায় সেখানে উভয়মুখী দুই লেনে গাড়ি চলাচল করছে। এ ছাড়া গাজীপুরা, বড়বাড়ি এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিআরটি ষ্টেশনের কাজ চলমান থাকায় সেখানেও সংকুচিত হয়ে আছে মূল সড়ক। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষত চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানোয় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে।

যাত্রীরা বলছেন, ঈদের সরকারি ছুটির সঙ্গে যদি পোশাক শিল্পে একই সঙ্গে ছুটি হয় তাহলে মহাসড়কে ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে মতো দিয়েছেন তারা। মেল কারখানাগুলো আগেই ছুটি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। বিয়ারটির পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা প্রকল্পের তরফ থেকে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছি। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। যে কাজগুলো বাকি আছে সেগুলো ঈদের আগে শেষ করার চেষ্টা করছি। গত বছরের ব্যবধানে এ প্রকল্পের অনেক কাজ হয়েছে হলে আমরা আশা করছি, গতবারের চেয়ে এবার কিছুটা স্বস্তি হতে পারে এই সড়কের যাত্রীদের।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক : ঈদ যাত্রায় ভোগাতে পারে টঙ্গীর ৩ কিমি পথ

চালকরা জানান, এই সড়কে বিমানবন্দর, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, চেরাগ আলী, কলেজ গেট গাজীপুরা ভোগরা বাইপাসে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এসব জায়গায় যানজট তৈরি হলে ঘণ্টা পর ঘণ্টা কেটে যায় সড়কে। উত্তরা আব্দুল্লাহপুর রুটে যে কাজ চলছে তা দীর্ঘদিন ধরেই একই অবস্থা। ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়লে এবং ছোট গাড়ি ঢুকে যানজট সৃষ্টি করে, তাছাড়া সেখানে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করা হয়, সেজন্য যানজট লেগে যায় স্বাভাবিক সময়ের আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় আসা যায়, কিন্তু ঈদের সময় যানজট হলে ১৩ ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় না।

ইমাম পরিবহনের চালক সুজন মিয়া বলেন, বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় দীর্ঘদিন ধরেই একই অবস্থা। ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়লে এবং সড়কে ছোট গাড়ি ঢুকে যানজট তৈরি করে। এছাড়া যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করা হয়। রাস্তা খারাপ ও ট্রাফিক পুলিশের উদাসীনতায় অনেক সময় যানজট লেগে যায়।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, আজমপুর বিএনএস টাওয়ার থেকে কলেজ গেইট পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক আমরা দুই লেন চালু করার চেষ্টা করছি। আমরা আশাবাদী তবে বিআরটি’র কাজের ওপর নির্ভর করবে। এটি চালু হলে টঙ্গী কেন্দ্রীক কোনো ঝামেলা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া সড়কের যেসব স্থানে রাস্তা সংকীর্ণ আছে সেখানে রাস্তা প্রশস্ত করা হচ্ছে। চৌরাস্তা একটু চ্যালেঞ্জিং, এজন্য এখানে বিআরটি’র যেসব লোহার খাচা-সাটারিংয়ের জিনিসপত্র রয়েছে সেগুলো অপসারণ করা হবে। আমরা পূর্ণ জনবল দেওয়ার পাশাপাশি রেকার থাকবে। কোনো গাড়ি নষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। আমরা আশা করছি রাস্তা আগের চেয়ে ভালো থাকায় এবার ঈদযাত্রা মানুষের স্বস্তির হবে। বড় ধরনের বৃষ্টিপাত বা অন্য কোনো সমস্যা না হলে মানুষকে সহজেই এ সড়ক দিয়ে পারাপার করতে পারব।