Dhaka শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘুষের ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় বিসিক কর্মকর্তা গ্রেফতার

শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি : 

শরীয়তপুর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ঘুসের টাকাসহ তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক মাদারীপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান।

পটুয়াখালী জেলা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, আমি গত ৩০ মার্চ বরগুনা থেকে পটুয়াখীতে যোগদান করেছি। মোহাম্মদ মনির হোসেনের বরগুনা বিসিক কার্যালয়ে রোববার (০৯ এপ্রিল) যোগদান করার কথা ছিল।

দুদকের সমন্বিত মাদারীপুর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর শহরের প্রেমতলা এলাকার বিসিক শিল্প নগরীতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ১০০টি প্লট রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় তিনি প্রতারণা ও জিম্মি করে অর্থ আদায় করতেন। বিসিক শিল্প নগরীতে মনির হোসেনের স্ত্রী সুমির নামেও একটি প্লট রয়েছে।

দুদকের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া বিসিক উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার উত্তর বাইকশা গ্রামে। ২০১৬ সালে প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে এ পর্যন্ত মোট ৩ বার দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ৪ বছর মনির হোসেন বিসিক শরীয়তপুরের উপব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির হোসেনের নিজ নামসহ তার স্ত্রী সুমি আক্তারের নামে শরীয়তপুরে পরিবহন ব্যবসা, শরীয়তপুরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বাজার কাজীর হাটে মার্কেট রয়েছে।

মোহাম্মদ মনির হোসেনের বিরুদ্ধে ট্রাপ মামলা ও অভিযোগের ভিত্তিতে শরীয়তপুরের বিসিক কার্যালয়ে দুদক মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে ৫ জন দুদক সদস্যসহ ১২ জনের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানটির সার্বিক তত্ত্ববধায়নে ছিলেন মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান।

দুদক সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ কেবলনগরের এস্কান্দার ঢালীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। এস্কান্দার ঢালীর শরীয়তপুর বিসিকে ‘ঢালী মিনারেল ওয়াটার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি তার প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘মের্সাস বাংলাদেশ হারবাল অ্যান্ড স্পাইসেস প্রোডাক্টস’ নামে রূপান্তরের জন্য অফিস নির্ধারিত ফরমে আবেদন করেন। নাম পরিবর্তন করতে বিসিক চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আবেদনটি পাঠানোর জন্য মোহাম্মদ মনির হোসেন এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এস্কান্দার ঢালী ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে মনির হোসেন তাকে ঘুষের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে এক পর্যায়ে এর আগে মনির হোসেনকে ৪৭ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করে। এরপর মনির হোসেন আরও ৫০ হাজার টাকা ঘুষের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে এস্কাদার ঢালী দুদককে বিষয়টি জানান।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, স্থানীয় এক শিল্পমালিকের অভিযোগের ভিক্তিতে বৃহস্পতিবার দুদকের একটি দল বিসিক কার্যালয়ে নজর রাখে। পরে ওই শিল্পমালিককে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার ঘুসের টাকা আদায় করার সময় মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে শরীয়তপুর বিসিকের কর্মকর্তা অর্ক সরকার বলেন, কোন অভিযোগের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়েছে বুঝলাম না। শুনলাম আমাদের উপ-ব্যবস্থাপক মনিরকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আমার বিভাগীয় অফিসে জানাবো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বক্তব্য দিতে গিয়ে মঞ্চে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির

ঘুষের ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় বিসিক কর্মকর্তা গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০৮:৩১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি : 

শরীয়তপুর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ঘুসের টাকাসহ তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক মাদারীপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান।

পটুয়াখালী জেলা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, আমি গত ৩০ মার্চ বরগুনা থেকে পটুয়াখীতে যোগদান করেছি। মোহাম্মদ মনির হোসেনের বরগুনা বিসিক কার্যালয়ে রোববার (০৯ এপ্রিল) যোগদান করার কথা ছিল।

দুদকের সমন্বিত মাদারীপুর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর শহরের প্রেমতলা এলাকার বিসিক শিল্প নগরীতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ১০০টি প্লট রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় তিনি প্রতারণা ও জিম্মি করে অর্থ আদায় করতেন। বিসিক শিল্প নগরীতে মনির হোসেনের স্ত্রী সুমির নামেও একটি প্লট রয়েছে।

দুদকের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া বিসিক উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার উত্তর বাইকশা গ্রামে। ২০১৬ সালে প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে এ পর্যন্ত মোট ৩ বার দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ৪ বছর মনির হোসেন বিসিক শরীয়তপুরের উপব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির হোসেনের নিজ নামসহ তার স্ত্রী সুমি আক্তারের নামে শরীয়তপুরে পরিবহন ব্যবসা, শরীয়তপুরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বাজার কাজীর হাটে মার্কেট রয়েছে।

মোহাম্মদ মনির হোসেনের বিরুদ্ধে ট্রাপ মামলা ও অভিযোগের ভিত্তিতে শরীয়তপুরের বিসিক কার্যালয়ে দুদক মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে ৫ জন দুদক সদস্যসহ ১২ জনের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানটির সার্বিক তত্ত্ববধায়নে ছিলেন মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান।

দুদক সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ কেবলনগরের এস্কান্দার ঢালীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। এস্কান্দার ঢালীর শরীয়তপুর বিসিকে ‘ঢালী মিনারেল ওয়াটার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি তার প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘মের্সাস বাংলাদেশ হারবাল অ্যান্ড স্পাইসেস প্রোডাক্টস’ নামে রূপান্তরের জন্য অফিস নির্ধারিত ফরমে আবেদন করেন। নাম পরিবর্তন করতে বিসিক চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আবেদনটি পাঠানোর জন্য মোহাম্মদ মনির হোসেন এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এস্কান্দার ঢালী ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে মনির হোসেন তাকে ঘুষের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে এক পর্যায়ে এর আগে মনির হোসেনকে ৪৭ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করে। এরপর মনির হোসেন আরও ৫০ হাজার টাকা ঘুষের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে এস্কাদার ঢালী দুদককে বিষয়টি জানান।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, স্থানীয় এক শিল্পমালিকের অভিযোগের ভিক্তিতে বৃহস্পতিবার দুদকের একটি দল বিসিক কার্যালয়ে নজর রাখে। পরে ওই শিল্পমালিককে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার ঘুসের টাকা আদায় করার সময় মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে শরীয়তপুর বিসিকের কর্মকর্তা অর্ক সরকার বলেন, কোন অভিযোগের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়েছে বুঝলাম না। শুনলাম আমাদের উপ-ব্যবস্থাপক মনিরকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আমার বিভাগীয় অফিসে জানাবো।