Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাকিব আল হাসানের ৩৬তম জন্মদিন

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক বড় বিজ্ঞাপনের নাম সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটে অনবদ্য এক ক্যারিয়ার দিয়ে লাল-সবুজের পরিচিতি তিনি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যার ফলে বাংলাদেশের নাম কদাচিৎ শুনতে পাওয়া মানুষও সাকিবের নাম উচ্চারণ করেন অনায়াসে। মাগুরায় ১৯৮৭ সালের এই দিনে (২৪ মার্চ) জন্ম হওয়া বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার আজ ৩৬তম বছরে পা দিয়েছেন।

সাকিব আল হাসানের বাবা মাশরুর রেজা ছিলেন কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা। দারুণ ভক্ত ছিলেন ফুটবলের। জেলার বিভিন্ন লিগে খেলতেন তিনি। তবে বাবার সেই পছন্দের বিপরীতে ছেলে সাকিব পা রাখলেন ক্রিকেটে। গ্রামের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েই তিনি চোখে পড়ে যান এক আম্পায়ারের। এরপর তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় মাগুরার ইসলামপুর পাড়া ক্লাবে। ক্লাবটির হয়ে খেলতে গিয়ে সাকিব প্রথম ম্যাচেই চমকে দেন সবাইকে। প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে সেদিন থেকেই প্রকৃত ক্রিকেট জীবনের শুরু করেন বাংলার ক্রিকেটের এই ৭৫ নম্বর জার্সির ছেলেটা।

পরবর্তীতে ৬ মাসের কোর্স করার জন্য সাকিব বিকেএসপিতে এসে ভর্তি হন। যেখানে খুব দ্রুতই নিজেকে পরিচিত করে তোলেন সাকিব। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার। আর জাতীয় লিগে খেলার জন্য তালিকাভুক্ত হন খুলনা বিভাগীয় দলে।

২০০৬ সালে বিকেএসপিতে হাতেখড়ির পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু সাকিবের। এরপরের পরিসংখ্যান তো কম-বেশি সবারই জানা। ২০১১ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানেও অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ডের ভার রয়েছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৩ ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হয়েছেন সাকিব। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে যা করে দেখিয়েছেন তা ছিলো অবিশ্বাস্য। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙেছেন, গড়েছেনও।

সাকিবের জন্মদিনে কলকাতার শুভেচ্ছা

সাকিব আল হাসানের গণ্ডি শুধুমাত্র ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ নয়। বাইরের নানা সম্পৃক্ততায়ও সফল সাকিব। বিজ্ঞাপনের মডেল থেকে উদ্যোক্তা, চ্যারিটিতেও সুনাম কুড়িয়েছেন। গড়েছেন নিজের নামে ক্রিকেট একাডেমি। নিজের ৩৬তম জন্মদিনেও সাকিব অনন্য এক উদ্যোগ নিয়েছেন। এদিন ‘সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন তিনি।

নানা বিতর্কে সরগরম থাকা বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার মানবিক কর্মকাণ্ডগুলোকে খুব একটা সামনেও আনেন না। নীরবে-নিভৃতেই ভালো কাজগুলো করে যান। এবার আরও বড় পরিসরে দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত হতে যাচ্ছেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করতেই সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা বলে জানান উদ্যোক্তারা।

এরপর সাকিবের বিরামহীন পথচলার গল্পটা সবারই কম-বেশি জানা। ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। দিনের পর দিন দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান যেমন রেখে যাচ্ছেন, ভূমিকা রাখছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শীর্ষ স্তরে তাদের উত্থানেও। পুরো ক্যারিয়ারে অসংখ্য মাইলফলক স্পর্শ করা সাকিবই একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১০,০০০ রান করেছেন ও ৫০০ উইকেট নিয়েছেন।

জাতীয় দল ছাড়াও সাকিব আল হাসান বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে সাফল্যের সাথে খেলেছেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্স, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে জ্যামাইকা তালাওয়াহস, বিগ ব্যাশ লিগে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ও ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ওরচেস্টারশায়ারের মতো বড় দলগুলোর হয়ে খেলেছেন বাংলার ক্রিকেটের এই অমূল্য রতন।

ক্রিকেটের ২২ গজে সাকিব সবসময় সিরিয়াস। আবার সতীর্থদের সঙ্গে খোশমেজাজেও তিনি ভিন্ন এক সাকিব। স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে পুরোদস্তুর ফ্যামিলিম্যান। অর্থ্যাৎ সব ভূমিকাতেই তিনি পূর্ণাঙ্গ একজন অলরাউন্ডার।

মাঠের বাইরে বেশকিছু বিতর্কে জড়ালেও তা পরোয়া করেন না সাকিব। মাঠের খেলায় ঠিকই এগিয়ে থাকেন সবার থেকে। শুধু দেশের ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ থাকেননি সাকিব। বিদেশী সব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলেছেন সাকিব। সেখানেও করেছেন নিজের নামের প্রতি সুবিচার।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জার্সি গায়ে টেস্টে ৬৫ ম্যাচে ১২০ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৫ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৪৩৬৭ রান। পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ২৩১ উইকেট। আর একদিনের ক্রিকেটে ২৩০ ম্যাচে ২১৭ ইনিংসে ৯ সেঞ্চুরিতে ৭০৮৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৩০১টি উইকেট। আর টি-২০ তে ১১২ ম্যাচে ১১১ ইনিংসে ২২৮১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১৩১টি উইকেট।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সাকিব আল হাসানের ৩৬তম জন্মদিন

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক বড় বিজ্ঞাপনের নাম সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটে অনবদ্য এক ক্যারিয়ার দিয়ে লাল-সবুজের পরিচিতি তিনি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যার ফলে বাংলাদেশের নাম কদাচিৎ শুনতে পাওয়া মানুষও সাকিবের নাম উচ্চারণ করেন অনায়াসে। মাগুরায় ১৯৮৭ সালের এই দিনে (২৪ মার্চ) জন্ম হওয়া বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার আজ ৩৬তম বছরে পা দিয়েছেন।

সাকিব আল হাসানের বাবা মাশরুর রেজা ছিলেন কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা। দারুণ ভক্ত ছিলেন ফুটবলের। জেলার বিভিন্ন লিগে খেলতেন তিনি। তবে বাবার সেই পছন্দের বিপরীতে ছেলে সাকিব পা রাখলেন ক্রিকেটে। গ্রামের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েই তিনি চোখে পড়ে যান এক আম্পায়ারের। এরপর তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় মাগুরার ইসলামপুর পাড়া ক্লাবে। ক্লাবটির হয়ে খেলতে গিয়ে সাকিব প্রথম ম্যাচেই চমকে দেন সবাইকে। প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে সেদিন থেকেই প্রকৃত ক্রিকেট জীবনের শুরু করেন বাংলার ক্রিকেটের এই ৭৫ নম্বর জার্সির ছেলেটা।

পরবর্তীতে ৬ মাসের কোর্স করার জন্য সাকিব বিকেএসপিতে এসে ভর্তি হন। যেখানে খুব দ্রুতই নিজেকে পরিচিত করে তোলেন সাকিব। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার। আর জাতীয় লিগে খেলার জন্য তালিকাভুক্ত হন খুলনা বিভাগীয় দলে।

২০০৬ সালে বিকেএসপিতে হাতেখড়ির পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু সাকিবের। এরপরের পরিসংখ্যান তো কম-বেশি সবারই জানা। ২০১১ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানেও অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ডের ভার রয়েছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৩ ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হয়েছেন সাকিব। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে যা করে দেখিয়েছেন তা ছিলো অবিশ্বাস্য। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙেছেন, গড়েছেনও।

সাকিবের জন্মদিনে কলকাতার শুভেচ্ছা

সাকিব আল হাসানের গণ্ডি শুধুমাত্র ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ নয়। বাইরের নানা সম্পৃক্ততায়ও সফল সাকিব। বিজ্ঞাপনের মডেল থেকে উদ্যোক্তা, চ্যারিটিতেও সুনাম কুড়িয়েছেন। গড়েছেন নিজের নামে ক্রিকেট একাডেমি। নিজের ৩৬তম জন্মদিনেও সাকিব অনন্য এক উদ্যোগ নিয়েছেন। এদিন ‘সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন তিনি।

নানা বিতর্কে সরগরম থাকা বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার মানবিক কর্মকাণ্ডগুলোকে খুব একটা সামনেও আনেন না। নীরবে-নিভৃতেই ভালো কাজগুলো করে যান। এবার আরও বড় পরিসরে দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত হতে যাচ্ছেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করতেই সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা বলে জানান উদ্যোক্তারা।

এরপর সাকিবের বিরামহীন পথচলার গল্পটা সবারই কম-বেশি জানা। ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। দিনের পর দিন দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান যেমন রেখে যাচ্ছেন, ভূমিকা রাখছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শীর্ষ স্তরে তাদের উত্থানেও। পুরো ক্যারিয়ারে অসংখ্য মাইলফলক স্পর্শ করা সাকিবই একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১০,০০০ রান করেছেন ও ৫০০ উইকেট নিয়েছেন।

জাতীয় দল ছাড়াও সাকিব আল হাসান বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে সাফল্যের সাথে খেলেছেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্স, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে জ্যামাইকা তালাওয়াহস, বিগ ব্যাশ লিগে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ও ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ওরচেস্টারশায়ারের মতো বড় দলগুলোর হয়ে খেলেছেন বাংলার ক্রিকেটের এই অমূল্য রতন।

ক্রিকেটের ২২ গজে সাকিব সবসময় সিরিয়াস। আবার সতীর্থদের সঙ্গে খোশমেজাজেও তিনি ভিন্ন এক সাকিব। স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে পুরোদস্তুর ফ্যামিলিম্যান। অর্থ্যাৎ সব ভূমিকাতেই তিনি পূর্ণাঙ্গ একজন অলরাউন্ডার।

মাঠের বাইরে বেশকিছু বিতর্কে জড়ালেও তা পরোয়া করেন না সাকিব। মাঠের খেলায় ঠিকই এগিয়ে থাকেন সবার থেকে। শুধু দেশের ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ থাকেননি সাকিব। বিদেশী সব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলেছেন সাকিব। সেখানেও করেছেন নিজের নামের প্রতি সুবিচার।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জার্সি গায়ে টেস্টে ৬৫ ম্যাচে ১২০ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৫ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৪৩৬৭ রান। পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ২৩১ উইকেট। আর একদিনের ক্রিকেটে ২৩০ ম্যাচে ২১৭ ইনিংসে ৯ সেঞ্চুরিতে ৭০৮৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৩০১টি উইকেট। আর টি-২০ তে ১১২ ম্যাচে ১১১ ইনিংসে ২২৮১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১৩১টি উইকেট।