Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নকশার ভুলে ওসমানী বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প

সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর

নকশার ভুলে থমকে আছে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। নতুন করে নকশা পরিকল্পনা করাচ্ছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এতে অন্তত দুই বছর পিছিয়ে যেতে পারে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পটি। অথচ সব কাজ শেষে এ বছরই এর উদ্বোধনের কথা ছিল।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও কার্গো স্টেশন স্থাপনের জন্য হাতে নেয়া হয় মেগা প্রকল্প। কিন্তু কাজ শুরুর পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে। কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো সেই ভুল নকশায় কাজ হলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির সক্ষমতা কমবে। পণ্য পরিবহনেও দীর্ঘদিনের জটিলতাসহ পোহাতে হবে নানা ভোগান্তি।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, অবকাঠামো নির্মাণের আগে জয়েন্ট ভেঞ্চারে নকশা প্রণয়নের কাজ পায় কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ ও ‘হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স’। তাদের করা নকশার ওপর ভিত্তি করেই নির্মাণকাজ শুরুর জন্য ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার আহ্বান করে বেবিচক।

এতে চীনের বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ (বিইউসিজি) কাজ পায়। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটার আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, বোর্ডিং ব্রিজ স্থাপন, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, ৬ হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, জেট ফুয়েল ডিপো, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ অবকাঠামো নির্মাণের কথা রয়েছে।

২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। অথচ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে কেবল ২২ শতাংশ। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের পুরো টার্মিনাল ভবনটিই ভুল নকশায় তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলতে গেলে ভাঙতে হবে টার্মিনাল ভবন। এছাড়া পুরনো নকশায় থাকা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল উপযোগী ছোট আকারের উড়োজাহাজের জন্য নির্মিতব্য বোর্ডিং ব্রিজের নকশা পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক রুটের উপযোগী করতে হবে।

জানা যায়, ওসমানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পের নকশা তৈরির কাজ পাওয়া কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনকে একবার বিশ্বব্যাংক নিষিদ্ধ করেছিল। অস্ট্রেলিয়ার ভানুয়াতুর একটি এভিয়েশন প্রকল্পে প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি ১৩ মাস নিষিদ্ধ ছিল।

বিশ্বব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করে, কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কোম্পানিটি প্রতারণা করায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। কোরিয়ান সেই প্রতিষ্ঠানটির ভুলে এবার ভুগতে হচ্ছে বেবিচককে। ওসমানী বিমানবন্দরের জন্য নতুন করে নকশা পরিকল্পনায় বাড়বে প্রকল্প ব্যয়ও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প ফেস-১-এর পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ডিজাইনে কিছু সমস্যা ছিল। সে কারণে কাজ শেষ করতে একটু দেরি হচ্ছে। ডিজাইনের কাজটা করেছিল কোরিয়ান কোম্পানি। ওরাই একটু ভুলভ্রান্তি করেছিল। এতে নির্মাণকাজ শেষ হতে বছর দুয়েক লাগবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার।’

প্রকল্পটির নতুন করে নকশা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘পরের ফেসের কিছু কাজ এ নকশায় আনা হবে। কাজের পরিমাণও কিছুটা বাড়বে। আগে ছোট উড়োজাহাজ ও বড় উড়োজাহাজের জন্য বোর্ডিং ব্রিজ আলাদা ছিল। এখন সব বোর্ডিং ব্রিজই বড় উড়োজাহাজের জন্য নির্মিত হবে। এ রকম আরো কিছু সমন্বয় করা হবে।’ প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যয় কিছুটা তো বাড়বেই। তবে কত বাড়বে সে হিসাব এখনো করা হয়নি। নতুন করে নকশা তৈরি হচ্ছে। সেটা হলেই বোঝা যাবে কত ব্যয় বেড়েছে।’

জানা গেছে, দুই-আড়াই বছরে প্রকল্প এলাকায় টার্মিনাল ভবনের ১ হাজার ৪৪৩টি পাইলের মধ্যে অধিকাংশেরই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শতভাগ শেষ হয়েছে কার্গো টার্মিনাল ভবনের ২৭২টি ও প্রশাসনিক ভবনের ১২৯টি পাইল। এগুলো ভাঙা পড়তে পারে। তাতে ব্যয়ও বাড়বে।

বেবিচক সূত্র জানায়, কোরিয়ান জয়েন্ট ভেঞ্চার দুটি প্রতিষ্ঠানের নকশায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বরিশাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে। দুটি কোম্পানির মধ্যে ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান আর হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স প্যাসেঞ্জার টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের নকশা তৈরি করে। কিন্তু দুটি কোম্পানি কাজ পেলেও তৃতীয় পক্ষ বা বাংলাদেশী একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করানো হয়। নিয়ম ভেঙে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করানোর খেসারত দিচ্ছে বেবিচক।

বেবিচক সূত্র জানায়, নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। ২০২১-২২ অর্থবছরেও যাত্রী বহনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ লাখ ৮২ হাজার ২৩৮। এছাড়া অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও সুযোগ-সুবিধাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালটি দেশী-বিদেশী পর্যটককেও মুগ্ধ করবে। টার্মিনালটিতে থাকবে ছয়টি বোর্ডিং ব্রিজ, কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক ইন কাউন্টার, ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার, ছয়টি এসকেলেটর, নয়টি লিফট, তিনটি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট।

সিলেটের কাছাকাছি ভারতের সেভেন সিস্টারস এলাকার লোকজনের বহির্বিশ্বে যাতায়াতের জন্যও ওসমানী বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব গড়ার পরিকল্পনা সরকারের। কিন্তু এ বছরের শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর বা সরকারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২২ শতাংশ। এ নিয়ে সিলেট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুরু থেকে কয়েকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

নকশার ভুলে ওসমানী বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প

প্রকাশের সময় : ০৮:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

নকশার ভুলে থমকে আছে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। নতুন করে নকশা পরিকল্পনা করাচ্ছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এতে অন্তত দুই বছর পিছিয়ে যেতে পারে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পটি। অথচ সব কাজ শেষে এ বছরই এর উদ্বোধনের কথা ছিল।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও কার্গো স্টেশন স্থাপনের জন্য হাতে নেয়া হয় মেগা প্রকল্প। কিন্তু কাজ শুরুর পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে। কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো সেই ভুল নকশায় কাজ হলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির সক্ষমতা কমবে। পণ্য পরিবহনেও দীর্ঘদিনের জটিলতাসহ পোহাতে হবে নানা ভোগান্তি।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, অবকাঠামো নির্মাণের আগে জয়েন্ট ভেঞ্চারে নকশা প্রণয়নের কাজ পায় কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ ও ‘হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স’। তাদের করা নকশার ওপর ভিত্তি করেই নির্মাণকাজ শুরুর জন্য ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার আহ্বান করে বেবিচক।

এতে চীনের বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ (বিইউসিজি) কাজ পায়। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটার আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, বোর্ডিং ব্রিজ স্থাপন, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, ৬ হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, জেট ফুয়েল ডিপো, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ অবকাঠামো নির্মাণের কথা রয়েছে।

২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। অথচ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে কেবল ২২ শতাংশ। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের পুরো টার্মিনাল ভবনটিই ভুল নকশায় তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলতে গেলে ভাঙতে হবে টার্মিনাল ভবন। এছাড়া পুরনো নকশায় থাকা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল উপযোগী ছোট আকারের উড়োজাহাজের জন্য নির্মিতব্য বোর্ডিং ব্রিজের নকশা পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক রুটের উপযোগী করতে হবে।

জানা যায়, ওসমানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পের নকশা তৈরির কাজ পাওয়া কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনকে একবার বিশ্বব্যাংক নিষিদ্ধ করেছিল। অস্ট্রেলিয়ার ভানুয়াতুর একটি এভিয়েশন প্রকল্পে প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি ১৩ মাস নিষিদ্ধ ছিল।

বিশ্বব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করে, কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কোম্পানিটি প্রতারণা করায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। কোরিয়ান সেই প্রতিষ্ঠানটির ভুলে এবার ভুগতে হচ্ছে বেবিচককে। ওসমানী বিমানবন্দরের জন্য নতুন করে নকশা পরিকল্পনায় বাড়বে প্রকল্প ব্যয়ও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প ফেস-১-এর পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ডিজাইনে কিছু সমস্যা ছিল। সে কারণে কাজ শেষ করতে একটু দেরি হচ্ছে। ডিজাইনের কাজটা করেছিল কোরিয়ান কোম্পানি। ওরাই একটু ভুলভ্রান্তি করেছিল। এতে নির্মাণকাজ শেষ হতে বছর দুয়েক লাগবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার।’

প্রকল্পটির নতুন করে নকশা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘পরের ফেসের কিছু কাজ এ নকশায় আনা হবে। কাজের পরিমাণও কিছুটা বাড়বে। আগে ছোট উড়োজাহাজ ও বড় উড়োজাহাজের জন্য বোর্ডিং ব্রিজ আলাদা ছিল। এখন সব বোর্ডিং ব্রিজই বড় উড়োজাহাজের জন্য নির্মিত হবে। এ রকম আরো কিছু সমন্বয় করা হবে।’ প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যয় কিছুটা তো বাড়বেই। তবে কত বাড়বে সে হিসাব এখনো করা হয়নি। নতুন করে নকশা তৈরি হচ্ছে। সেটা হলেই বোঝা যাবে কত ব্যয় বেড়েছে।’

জানা গেছে, দুই-আড়াই বছরে প্রকল্প এলাকায় টার্মিনাল ভবনের ১ হাজার ৪৪৩টি পাইলের মধ্যে অধিকাংশেরই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শতভাগ শেষ হয়েছে কার্গো টার্মিনাল ভবনের ২৭২টি ও প্রশাসনিক ভবনের ১২৯টি পাইল। এগুলো ভাঙা পড়তে পারে। তাতে ব্যয়ও বাড়বে।

বেবিচক সূত্র জানায়, কোরিয়ান জয়েন্ট ভেঞ্চার দুটি প্রতিষ্ঠানের নকশায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বরিশাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে। দুটি কোম্পানির মধ্যে ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান আর হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স প্যাসেঞ্জার টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের নকশা তৈরি করে। কিন্তু দুটি কোম্পানি কাজ পেলেও তৃতীয় পক্ষ বা বাংলাদেশী একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করানো হয়। নিয়ম ভেঙে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করানোর খেসারত দিচ্ছে বেবিচক।

বেবিচক সূত্র জানায়, নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। ২০২১-২২ অর্থবছরেও যাত্রী বহনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ লাখ ৮২ হাজার ২৩৮। এছাড়া অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও সুযোগ-সুবিধাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালটি দেশী-বিদেশী পর্যটককেও মুগ্ধ করবে। টার্মিনালটিতে থাকবে ছয়টি বোর্ডিং ব্রিজ, কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক ইন কাউন্টার, ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার, ছয়টি এসকেলেটর, নয়টি লিফট, তিনটি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট।

সিলেটের কাছাকাছি ভারতের সেভেন সিস্টারস এলাকার লোকজনের বহির্বিশ্বে যাতায়াতের জন্যও ওসমানী বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব গড়ার পরিকল্পনা সরকারের। কিন্তু এ বছরের শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর বা সরকারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২২ শতাংশ। এ নিয়ে সিলেট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুরু থেকে কয়েকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।