Dhaka শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দলের পক্ষে নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভোলা জেলা প্রতিনিধি :

ভোলায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়। এটা আমি স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি।’

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোলায় ভোটের গাড়ি “ক্যারাভান” এর যাত্রা শুরু উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর সত্যিকার অর্থে দেশে কোন নির্বাচন হয়নি। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন হবে, আমরা আশা করছি সব রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহণে উৎসব মুখর পরিবেশে অবাদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একদম তলানিতে চলে যাওয়া দেশকে টেনে তুলতে হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। আমরা চাই এবারের নির্বাচনে মানুষ ইচ্ছা মত তাদের ভোট দিতে পারবে। এই সরকার কারও পক্ষে নয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্ব কয়েকটি কারণে। এর মধ্যে একটি ১৫ বছরের সত্যিকারার্থে কোনো নির্বাচন হয়নি। যদি নির্বাচনের কথা বলা হয় তাহলে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৮ সাল।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, বিগত সময়গুলোতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। সুষ্ঠু ভোটের ব্যাপারে সরকার খুবই সিরিয়াস। কারণ মানুষ দীর্ঘদিন তাদের ভোট দিতে পারেনি। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব। কেউ যাতে কোনো গণ্ডগোল করতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলে দেওয়া হয়েছে, যদি কোনো স্থানে সমস্যা হয়, সেখানে ভোট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। তাই প্রত্যেক দলগুলোর কাজ হচ্ছে মানুষকে ভোটদানে উৎসাহিত করা। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালের পর থেকে দেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, ৩০ বছরের নিচে বা তার আশেপাশের বিপুলসংখ্যক যুবক ভোটার রয়েছে, তারাও ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে একটি সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। সেই আন্দোলনে আমাদের ছেলেমেয়েরা জীবন দিয়েছে। যে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে তারা জীবন দিয়েছে, তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোর সমন্বয় করে আমরা একটি ছোট তালিকা করেছি। পুরোপুরি শতভাগ যে করতে পেরেছি তা নয়, আমরা চেষ্টা করেছি যতটুকু সম্ভব নিয়ে আসার। সেটা প্রথমবারের মতো জনগণের কাছে তুলে ধরা হবে। গণভোটের মাধ্যমে আপনারা মতামত প্রকাশ করবেন। আমরা যে তালিকা করেছি, তাতে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ‘হ্যাঁ’, আর যদি আপনার ভালো না লাগে তাহলে ‘না’ ভোট দেবেন। আপনারা কি কি পরিবর্তন চান, আর না চান এটারই বহিঃপ্রকাশ এই গণভোট।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা যদি এই পরিবর্তন চান, তাহলে ভালো। আর যদি না চান, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। পরবর্তীতে যারা আসবে তারা আপনাদের মতামতকেই গুরুত্ব দেবে, কারণ আপনাদের ভোটেই তারা নির্বাচিত হবে এবং তারাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার থেকে যেন বঞ্চিত হতে না পারে সেরকম একটি পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ভোটের গাড়ি উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন- ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কায়সার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বেল্লাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এনসিপি থেকে পদত্যাগ, স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাসনিম জারা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দলের পক্ষে নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ভোলা জেলা প্রতিনিধি :

ভোলায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়। এটা আমি স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি।’

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোলায় ভোটের গাড়ি “ক্যারাভান” এর যাত্রা শুরু উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর সত্যিকার অর্থে দেশে কোন নির্বাচন হয়নি। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন হবে, আমরা আশা করছি সব রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহণে উৎসব মুখর পরিবেশে অবাদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একদম তলানিতে চলে যাওয়া দেশকে টেনে তুলতে হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। আমরা চাই এবারের নির্বাচনে মানুষ ইচ্ছা মত তাদের ভোট দিতে পারবে। এই সরকার কারও পক্ষে নয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্ব কয়েকটি কারণে। এর মধ্যে একটি ১৫ বছরের সত্যিকারার্থে কোনো নির্বাচন হয়নি। যদি নির্বাচনের কথা বলা হয় তাহলে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৮ সাল।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, বিগত সময়গুলোতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। সুষ্ঠু ভোটের ব্যাপারে সরকার খুবই সিরিয়াস। কারণ মানুষ দীর্ঘদিন তাদের ভোট দিতে পারেনি। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব। কেউ যাতে কোনো গণ্ডগোল করতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলে দেওয়া হয়েছে, যদি কোনো স্থানে সমস্যা হয়, সেখানে ভোট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। তাই প্রত্যেক দলগুলোর কাজ হচ্ছে মানুষকে ভোটদানে উৎসাহিত করা। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালের পর থেকে দেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, ৩০ বছরের নিচে বা তার আশেপাশের বিপুলসংখ্যক যুবক ভোটার রয়েছে, তারাও ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে একটি সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। সেই আন্দোলনে আমাদের ছেলেমেয়েরা জীবন দিয়েছে। যে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে তারা জীবন দিয়েছে, তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোর সমন্বয় করে আমরা একটি ছোট তালিকা করেছি। পুরোপুরি শতভাগ যে করতে পেরেছি তা নয়, আমরা চেষ্টা করেছি যতটুকু সম্ভব নিয়ে আসার। সেটা প্রথমবারের মতো জনগণের কাছে তুলে ধরা হবে। গণভোটের মাধ্যমে আপনারা মতামত প্রকাশ করবেন। আমরা যে তালিকা করেছি, তাতে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ‘হ্যাঁ’, আর যদি আপনার ভালো না লাগে তাহলে ‘না’ ভোট দেবেন। আপনারা কি কি পরিবর্তন চান, আর না চান এটারই বহিঃপ্রকাশ এই গণভোট।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা যদি এই পরিবর্তন চান, তাহলে ভালো। আর যদি না চান, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। পরবর্তীতে যারা আসবে তারা আপনাদের মতামতকেই গুরুত্ব দেবে, কারণ আপনাদের ভোটেই তারা নির্বাচিত হবে এবং তারাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার থেকে যেন বঞ্চিত হতে না পারে সেরকম একটি পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ভোটের গাড়ি উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন- ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কায়সার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বেল্লাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।