Dhaka শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮ গোলের নাটকীয়তায় অ্যাতলেটিকোকে হারিয়ে ফাইনালে রিয়াল

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

লিওনেল মেসি-নেইমার জুনিয়ন যখন বার্সেলোনার হয়ে খেলতেন তখন রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে এল-ক্লাসিকো দারুণভাবে জমে উঠতো। সময়ের বিবর্তনে সেই এল-ক্লাসিকো তেজ কিছুটা হারিয়ে ফেললেও নতুন করে জমজমাট হয়ে উঠছে রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যকার মাদ্রিদ ডার্বি। সেই মাদ্রিদ ডার্বিতে স্প্যানিশ সুপার কাপে ১২০ মিনিটের সেমিফাইনালে অ্যাতলেটিকোর বিপক্ষে ৮ গোলের থ্রিলার ম্যাচে ৫-৩ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের আল আওয়াল পার্কে জমে উঠে দুই দলের মধ্যকার মাদ্রিদ ডার্বি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা ৩-৩ সমতা থাকার কারণে আর দুইবার (১৫ মিনিট করে) অতিরিক্ত সময় দেন রেফারি। সব মিলিয়ে রোমাঞ্চকর এই লড়াই চলে ১২০ মিনিট। তবে শেষ হাসিটা ছিল রিয়ালের মুখেই। ম্যাচের শেষ দিকে ৬ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করে অ্যাতলেটিকোর দর্শকদের স্তব্ধ করে দেয় রিয়াল।

ম্যাচে প্রথমে গোলের দেখা পেয়েছে অ্যাটলেটিকোই। ৬ মিনিটের মাথায় মারিও এরমসোর গোলে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। তবে সমতায় ফিরতে অবশ্য খুব বেশি সময় নেয়নি লস ব্লাঙ্কোসরা। ২০ মিনিটের সনয় কর্ণার কিক থেকে পাওয়া বলে দারুণ এক হেডে বল জালে জড়ান আন্তোনিও রুডিগার।

সমতায় ফেরার ৯ মিনিট পরই রিয়ালকে লিড এনে দেন ফার্লান্ড মেন্ডি। ২৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দানি কারভাহালের বাড়িয়ে দেয়া বলে দারুণ ক্ষিপ্রতায় পা ছুইয়ে দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। তবে এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি আনচেলত্তি শিষ্যরা। ৩৭ মিনিটে অ্যাটলেটিকোর হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন আতোয়া গ্রিজমান। এরপর আর কোনো দলই গোল না পেলে ২-২ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

বিরতির পর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে রুডিগারের আত্মঘাতী গোলে আবারও এগিয়ে গিয়েছিল আতলেতিকো। ম্যাচে দু-তিনটি ভালো সেভ করলেও গোলকিপার কেপা আরিজাবালাগার খামতি ছিল এই গোলে। বলটা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। ৭ মিনিট পরই দানি কারভাহালের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহামের শট রুখে দেওয়ার পর ফিরতি বলে গোল করেন কারভাহাল।

পরের পাঁচ মিনিটে তুমুল আক্রমণে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ব্যস্ত করে রাখে রিয়াল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গলের দেখা না পাওয়ায় ম্যাচ গাড়্য অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে দুই দলই খেলেছে দারুণ। ম্যাচ টাইব্রেকারে যাবে এমন ধারণাও করেছিলেন অনেকে। তবে সে শঙ্কা উড়িয়ে ১১৬ মিনিটে লিডের দেখা পায় রিয়াল। কারভাহালের ক্রসে মাথা ছুইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন জোসেলু।

এদিকে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে কর্ণারের সময় অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক ওবলাকও চলে এসেছিলেন রিয়ালের ডি বক্সে। তবে তাতে হীতে বিপরীতই হয়েছে। কর্নার কিক থেকে বল চলে যায় মাঝমাঠের দিকে। আর তখন বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ওবলাকের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগীতায় মাতেন ব্রাহিম দিয়াজ। তাতে জিতেও যান তিনি।

অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক এবং এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডি বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন তিনি, বল পেয়ে যায় জালের দেখা। আর শেষ মুহূর্তের এই দুই গোলেই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাঁদিয়ে সুপার কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল।

হারের পর আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের বলেছি, আমি ওদের পারফরম্যান্সে গর্বিত। ফলটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও ওরা অসাধারণ খেলেছে!’

ম্যাচের পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ‘এটি দর্শনীয় একটি (ম্যাচ) ছিল, কিন্তু আমরা এর আগে এই ধরনের ম্যাচ উপভোগ করিনি। ম্যাচ ধরে রাখা এবং সেই বাধা টপকানো অসাধারণ হয়েছে। কারণ, আমরা দুটিই খুব শক্তিশালী দল। তারা খেলায় তাদের সামর্থ্যের সবকিছু দিয়েছে।’

আর বৃহস্পতিবার সুপার কাপের অপর সেমিফাইনালে ওসাসুনার বিপক্ষে মাঠে নামবে বার্সেলোনা। এই সেমিফাইনালে যে দল জিতবে আগামী রোববার ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হবে রিয়াল।

কোপা দেল রে শেষ ষোলোর ম্যাচে আগামী সপ্তাহে আবারও মুখোমুখি হবে এই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে তার আগে রিয়াদের রোমাঞ্চে দুই প্রতিবেশীর ৮ গোলের ‘থ্রিলার’-এ রেকর্ড বইও ওলট-পালট হয়েছে। ফুটবলে পরিসংখ্যানবিষয়ক এক্স অ্যাকাউন্ট ‘মিস্টার চিপ’ জানিয়েছে, মাদ্রিদ ডার্বিতে ১৯৫০ সালের ১২ নভেম্বরের (রিয়াল ৩-৬ আতলেতিকো) পর এই প্রথম ন্যূনতম ৮ গোলের ম্যাচ দেখা গেল। ১৯৮৩ সালের পর এই প্রথম কোনো স্বীকৃত ম্যাচে আতলেতিকোর বিপক্ষে ন্যূনতম ৫ গোল করল রিয়াল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৮ গোলের নাটকীয়তায় অ্যাতলেটিকোকে হারিয়ে ফাইনালে রিয়াল

প্রকাশের সময় : ০৩:১৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

লিওনেল মেসি-নেইমার জুনিয়ন যখন বার্সেলোনার হয়ে খেলতেন তখন রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে এল-ক্লাসিকো দারুণভাবে জমে উঠতো। সময়ের বিবর্তনে সেই এল-ক্লাসিকো তেজ কিছুটা হারিয়ে ফেললেও নতুন করে জমজমাট হয়ে উঠছে রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যকার মাদ্রিদ ডার্বি। সেই মাদ্রিদ ডার্বিতে স্প্যানিশ সুপার কাপে ১২০ মিনিটের সেমিফাইনালে অ্যাতলেটিকোর বিপক্ষে ৮ গোলের থ্রিলার ম্যাচে ৫-৩ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের আল আওয়াল পার্কে জমে উঠে দুই দলের মধ্যকার মাদ্রিদ ডার্বি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা ৩-৩ সমতা থাকার কারণে আর দুইবার (১৫ মিনিট করে) অতিরিক্ত সময় দেন রেফারি। সব মিলিয়ে রোমাঞ্চকর এই লড়াই চলে ১২০ মিনিট। তবে শেষ হাসিটা ছিল রিয়ালের মুখেই। ম্যাচের শেষ দিকে ৬ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করে অ্যাতলেটিকোর দর্শকদের স্তব্ধ করে দেয় রিয়াল।

ম্যাচে প্রথমে গোলের দেখা পেয়েছে অ্যাটলেটিকোই। ৬ মিনিটের মাথায় মারিও এরমসোর গোলে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। তবে সমতায় ফিরতে অবশ্য খুব বেশি সময় নেয়নি লস ব্লাঙ্কোসরা। ২০ মিনিটের সনয় কর্ণার কিক থেকে পাওয়া বলে দারুণ এক হেডে বল জালে জড়ান আন্তোনিও রুডিগার।

সমতায় ফেরার ৯ মিনিট পরই রিয়ালকে লিড এনে দেন ফার্লান্ড মেন্ডি। ২৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দানি কারভাহালের বাড়িয়ে দেয়া বলে দারুণ ক্ষিপ্রতায় পা ছুইয়ে দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। তবে এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি আনচেলত্তি শিষ্যরা। ৩৭ মিনিটে অ্যাটলেটিকোর হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন আতোয়া গ্রিজমান। এরপর আর কোনো দলই গোল না পেলে ২-২ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

বিরতির পর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে রুডিগারের আত্মঘাতী গোলে আবারও এগিয়ে গিয়েছিল আতলেতিকো। ম্যাচে দু-তিনটি ভালো সেভ করলেও গোলকিপার কেপা আরিজাবালাগার খামতি ছিল এই গোলে। বলটা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। ৭ মিনিট পরই দানি কারভাহালের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহামের শট রুখে দেওয়ার পর ফিরতি বলে গোল করেন কারভাহাল।

পরের পাঁচ মিনিটে তুমুল আক্রমণে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ব্যস্ত করে রাখে রিয়াল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গলের দেখা না পাওয়ায় ম্যাচ গাড়্য অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে দুই দলই খেলেছে দারুণ। ম্যাচ টাইব্রেকারে যাবে এমন ধারণাও করেছিলেন অনেকে। তবে সে শঙ্কা উড়িয়ে ১১৬ মিনিটে লিডের দেখা পায় রিয়াল। কারভাহালের ক্রসে মাথা ছুইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন জোসেলু।

এদিকে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে কর্ণারের সময় অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক ওবলাকও চলে এসেছিলেন রিয়ালের ডি বক্সে। তবে তাতে হীতে বিপরীতই হয়েছে। কর্নার কিক থেকে বল চলে যায় মাঝমাঠের দিকে। আর তখন বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ওবলাকের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগীতায় মাতেন ব্রাহিম দিয়াজ। তাতে জিতেও যান তিনি।

অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক এবং এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডি বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন তিনি, বল পেয়ে যায় জালের দেখা। আর শেষ মুহূর্তের এই দুই গোলেই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাঁদিয়ে সুপার কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল।

হারের পর আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের বলেছি, আমি ওদের পারফরম্যান্সে গর্বিত। ফলটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও ওরা অসাধারণ খেলেছে!’

ম্যাচের পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ‘এটি দর্শনীয় একটি (ম্যাচ) ছিল, কিন্তু আমরা এর আগে এই ধরনের ম্যাচ উপভোগ করিনি। ম্যাচ ধরে রাখা এবং সেই বাধা টপকানো অসাধারণ হয়েছে। কারণ, আমরা দুটিই খুব শক্তিশালী দল। তারা খেলায় তাদের সামর্থ্যের সবকিছু দিয়েছে।’

আর বৃহস্পতিবার সুপার কাপের অপর সেমিফাইনালে ওসাসুনার বিপক্ষে মাঠে নামবে বার্সেলোনা। এই সেমিফাইনালে যে দল জিতবে আগামী রোববার ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হবে রিয়াল।

কোপা দেল রে শেষ ষোলোর ম্যাচে আগামী সপ্তাহে আবারও মুখোমুখি হবে এই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে তার আগে রিয়াদের রোমাঞ্চে দুই প্রতিবেশীর ৮ গোলের ‘থ্রিলার’-এ রেকর্ড বইও ওলট-পালট হয়েছে। ফুটবলে পরিসংখ্যানবিষয়ক এক্স অ্যাকাউন্ট ‘মিস্টার চিপ’ জানিয়েছে, মাদ্রিদ ডার্বিতে ১৯৫০ সালের ১২ নভেম্বরের (রিয়াল ৩-৬ আতলেতিকো) পর এই প্রথম ন্যূনতম ৮ গোলের ম্যাচ দেখা গেল। ১৯৮৩ সালের পর এই প্রথম কোনো স্বীকৃত ম্যাচে আতলেতিকোর বিপক্ষে ন্যূনতম ৫ গোল করল রিয়াল।