Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭ মাস পর যাত্রী পরিবহনে ফিরছে বিআইডব্লিউটিসির এমভি মধুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাত মাস বন্ধ থাকার পর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাত্র ১৪ দিনের জন্য ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে বিশেষ সার্ভিসে যাত্রী পরিবহন করবে এমভি মধুমতী। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) একটি মাত্র জাহাজ এই বিশেষ সার্ভিস দেবে। এরপর আবার এর চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এ নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মাঝে।

দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে ঢাকা থেকে এক সময়ে জনপ্রিয় সার্ভিস হিসেবে পরিচিত ছিল প্যাডেল স্টিমার ও জাহাজগুলো। প্রতিদিন এসব সার্ভিসে যাত্রীরা ঢাকা থেকে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালী, হুলারহাট, চরখালী, বড় মাছুয়া, সন্ন্যাসী ও মোরেলগঞ্জের দুর্গম এলাকায় নির্বিঘ্নে যাত্রা ও পণ্য পরিবহন করতে পারত। একসময় খুলনা পর্যন্ত সরকারি সার্ভিস থাকলেও পরে তা গুটিয়ে মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত রাখা হলেও বিগত সাত মাস ধরে পুরো সার্ভিস বন্ধ থাকায় হতাশা নেমে আসে এসব রুটের নিয়মিত যাত্রীদের মধ্যে। যাত্রীরা জানান, অন্তত সপ্তাহে এক দিন হলেও এই সার্ভিস থাকলে তাদের ভোগান্তি কমত। বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল নদীতে যাতায়াতে তাদের সরকারি নৌযানের ওপরই ভরসা বেশি।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে সার্ভিস চালু করা হচ্ছে সেখানে শুধুমাত্র মধুমতি জাহাজটি চলাচল করবে। তবে তাও বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ পর্যন্ত নয়, ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের বড়মাছুয়া পর্যন্ত যাত্রীসেবা দেবে এমভি মধুমতি। যেখানে ঈদের আগে ১৮ ও ২১ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ১৯ ও ২৩ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা। আবার ঈদের পরে ২৭ ও ৩০ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ২৯ ও ৩১ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজটি যাত্রীসেবা দেবে।

জসিম উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে ১৬১ কিলোমিটার দূর বরিশাল পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া (তৃতীয় বা সুলভ শ্রেণির যাত্রী ভাড়া) ২০৫ টাকা ও ঢাকা থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূর বড়মাছুয়া পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

যদিও এ সুলভ বা ডেক শ্রেণির ভাড়া বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী বেসরকারি লঞ্চের জন্য নয় জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, এ রুটে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি লঞ্চগুলোর ডেক শ্রেণির ভাড়া ৪৩১ টাকা।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, ব্রিটিশ আমলে তৈরি ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার বন্ধ হয়ে গেলে পর্যটকদের পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনায় সপ্তাহে এক-দুই দিন এই সার্ভিস টিকিয়ে রাখার দাবি জানান।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক মো. কবির হোসেন জানান, এ রুটে ২০টি লঞ্চের মধ্যে এমভি কালাম খান, কালাম, টিপু লঞ্চ আগে থেকেই নেই। তার ওপর আরও একটি কোম্পানির একটি লঞ্চ বিক্রি হয়ে গেছে। এ চারটি বাদ দিলে ১৬টির মতো লঞ্চ থাকে বরিশাল-ঢাকা রুটে। যার মধ্যে এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চটি পটুয়াখালী রুটে চলতে পারে। এছাড়া ভায়া দুটি লঞ্চ বাদ দিলে ১৩টি লঞ্চ বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি যাত্রীসেবা দেবে।

এদিকে গতবারের মতো যাত্রীর চাপ কম থাকার শঙ্কায় ডাবল ট্রিপের কথা ভাবছে না কোনো লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদের পরে মানামী লঞ্চটি প্রতিদিন ট্রিপ দিতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. শাকিল জানান, প্রতিবছর ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের চাপ থাকলেও এবারে এখন পর্যন্ত যা দেখছি তাতে চাপ কমই মনে হচ্ছে। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে মানুষ এখন বাসমুখী হয়েছে। আর এ কারণে স্পেশাল ট্রিপের কথা ভাবা হচ্ছে না।

এদিকে বেসরকারি লঞ্চগুলোর ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত ৯ এপ্রিল থেকে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদে ঘরমুখী মানুষকে বরণ করে নিতে বরিশাল নদীবন্দরকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। তবে যাত্রী কম হওয়ায় এই রুটে এবার সর্বোচ্চ ১৩ থেকে ১৪টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

৭ মাস পর যাত্রী পরিবহনে ফিরছে বিআইডব্লিউটিসির এমভি মধুমতি

প্রকাশের সময় : ০২:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাত মাস বন্ধ থাকার পর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাত্র ১৪ দিনের জন্য ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে বিশেষ সার্ভিসে যাত্রী পরিবহন করবে এমভি মধুমতী। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) একটি মাত্র জাহাজ এই বিশেষ সার্ভিস দেবে। এরপর আবার এর চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এ নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মাঝে।

দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে ঢাকা থেকে এক সময়ে জনপ্রিয় সার্ভিস হিসেবে পরিচিত ছিল প্যাডেল স্টিমার ও জাহাজগুলো। প্রতিদিন এসব সার্ভিসে যাত্রীরা ঢাকা থেকে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালী, হুলারহাট, চরখালী, বড় মাছুয়া, সন্ন্যাসী ও মোরেলগঞ্জের দুর্গম এলাকায় নির্বিঘ্নে যাত্রা ও পণ্য পরিবহন করতে পারত। একসময় খুলনা পর্যন্ত সরকারি সার্ভিস থাকলেও পরে তা গুটিয়ে মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত রাখা হলেও বিগত সাত মাস ধরে পুরো সার্ভিস বন্ধ থাকায় হতাশা নেমে আসে এসব রুটের নিয়মিত যাত্রীদের মধ্যে। যাত্রীরা জানান, অন্তত সপ্তাহে এক দিন হলেও এই সার্ভিস থাকলে তাদের ভোগান্তি কমত। বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল নদীতে যাতায়াতে তাদের সরকারি নৌযানের ওপরই ভরসা বেশি।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে সার্ভিস চালু করা হচ্ছে সেখানে শুধুমাত্র মধুমতি জাহাজটি চলাচল করবে। তবে তাও বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ পর্যন্ত নয়, ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের বড়মাছুয়া পর্যন্ত যাত্রীসেবা দেবে এমভি মধুমতি। যেখানে ঈদের আগে ১৮ ও ২১ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ১৯ ও ২৩ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা। আবার ঈদের পরে ২৭ ও ৩০ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ২৯ ও ৩১ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজটি যাত্রীসেবা দেবে।

জসিম উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে ১৬১ কিলোমিটার দূর বরিশাল পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া (তৃতীয় বা সুলভ শ্রেণির যাত্রী ভাড়া) ২০৫ টাকা ও ঢাকা থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূর বড়মাছুয়া পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

যদিও এ সুলভ বা ডেক শ্রেণির ভাড়া বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী বেসরকারি লঞ্চের জন্য নয় জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, এ রুটে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি লঞ্চগুলোর ডেক শ্রেণির ভাড়া ৪৩১ টাকা।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, ব্রিটিশ আমলে তৈরি ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার বন্ধ হয়ে গেলে পর্যটকদের পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনায় সপ্তাহে এক-দুই দিন এই সার্ভিস টিকিয়ে রাখার দাবি জানান।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক মো. কবির হোসেন জানান, এ রুটে ২০টি লঞ্চের মধ্যে এমভি কালাম খান, কালাম, টিপু লঞ্চ আগে থেকেই নেই। তার ওপর আরও একটি কোম্পানির একটি লঞ্চ বিক্রি হয়ে গেছে। এ চারটি বাদ দিলে ১৬টির মতো লঞ্চ থাকে বরিশাল-ঢাকা রুটে। যার মধ্যে এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চটি পটুয়াখালী রুটে চলতে পারে। এছাড়া ভায়া দুটি লঞ্চ বাদ দিলে ১৩টি লঞ্চ বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি যাত্রীসেবা দেবে।

এদিকে গতবারের মতো যাত্রীর চাপ কম থাকার শঙ্কায় ডাবল ট্রিপের কথা ভাবছে না কোনো লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদের পরে মানামী লঞ্চটি প্রতিদিন ট্রিপ দিতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. শাকিল জানান, প্রতিবছর ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের চাপ থাকলেও এবারে এখন পর্যন্ত যা দেখছি তাতে চাপ কমই মনে হচ্ছে। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে মানুষ এখন বাসমুখী হয়েছে। আর এ কারণে স্পেশাল ট্রিপের কথা ভাবা হচ্ছে না।

এদিকে বেসরকারি লঞ্চগুলোর ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত ৯ এপ্রিল থেকে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদে ঘরমুখী মানুষকে বরণ করে নিতে বরিশাল নদীবন্দরকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। তবে যাত্রী কম হওয়ায় এই রুটে এবার সর্বোচ্চ ১৩ থেকে ১৪টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।