রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি :
হ্রদের পানি নিয়ন্ত্রণে আসায় সাত দিন পর কাপ্তাই বাঁধের ১৬ জলকপাট বন্ধ ঘোষণা করেছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৮টায় পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব কটি জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান।
তিনি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসার পানি কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। একই সঙ্গে পানি বিপদসীমায় পৌঁছায়। এসব কারণে ৫ আগস্ট মধ্যরাতে বাঁধের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে পানির বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধাপে ধাপে এটি সাড়ে তিন ফুট পর্যন্ত খোলা হয়। কাপ্তাই লেকের পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট মিনস সী লেভেল। বর্তমানে পানির উচ্চতা ১০৭. ৩৪ ফুট মিনস সী লেভেলে আছে।
বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে লেকে পানির উচ্চতা কমে আসছে। এ জন্য জলকপাটগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ১০৭ দশমিক ৫ ফুট মিনস সি লেভেল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিট এখনো সচল আছে এবং সর্বোচ্চ ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।
এর আগে মুষল ধারে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিট থেকে কাপ্তাই বাঁধের ১৬ জলকপাট ছয় ইঞ্চি খুলে দিয়ে সেকেন্ডে নয় হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়।
এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১ টা থেকে ১৬ জলকপাট দেড় ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩০ হাজার কিউসেক, বুধবার দুপুর ১টা থেকে জলকপাট আড়াই ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৪৯ হাজার কিউসেক, একই দিনে রাত ১১ থেকে জলকপাট তিন ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫৮ হাজার কিউসেক এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে জলকপাট সাড়ে ৩ ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়।
কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়ায় টানা ছয় দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়ে হালদা ও কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী রাউজানের নোয়াপাড়া, উরকিরচর, বাগোয়ান, পশ্চিম গুজরার অংশসহ ৩০টির অধিক গ্রাম। প্লাবনে ডুবেছে মাঠ-ঘাট, রাস্তা, পুকুর-ডোবা, খাল-বিল, নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার ফসল ও মাছ। এই জলকপাট বন্ধের খবরে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।