নিজস্ব প্রতিবেদক :
৭ জানুয়ারির নির্বাচন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের জোট ভেঙেছে জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এক দলের মধ্যে তিনটা মার্কা। সেটা নিয়েই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া। খুনাখুনি পর্যন্ত হয়েছে। ফলে এই সরকারের সঙ্গে কোনো আপস নাই। শত চেষ্টা করেও বিরোধী দলে ঐক্য ভাঙতে পারেনি সরকার, আর পারবেও না। ঐক্যবদ্ধ আছি, এবং থাকবো। ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়াই করবো।
শুক্রবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ৭ জানুয়ারির তথাকথিত নির্বাচন করতে গিয়ে আ.লীগ নিজের দলকে ভেঙে তিন ভাগে ভাগ করেছে। এক দলের মধ্যে তিনটি মার্কা করেছে। এটি নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি পর্যন্ত করেছে। এই সরকারের প্রতি রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে কারও কোনও বিশ্বাস এবং ভরসা নেই।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে এখন আর কিছু আছে? শুধু ঢাকা মহানগরের পুলিশ বলুক, তারা এখন থেকে চুপচাপ এবং নিরপেক্ষ থাকবে। তাহলে আওয়ামী লীগ ঘর থেকেও বের হতে পারবে না। কোনও সভাও করতে পারবে না। বিরোধীদলীয় কোনও নেতাকে চোখ রাঙিয়ে কথা পর্যন্ত বলতে পারবে না।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমাদের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় যিনি (শেখ হাসিনা) আছেন, যার সবচেয়ে বেশি সত্য কথা বলা উচিত, জনগণের প্রতি দরদ দেখানো উচিত, কিন্তু তিনিই অনর্গল মিথ্যা কথা বলেন এবং জনগণকে ছোট করে কথা বলেন। আপনি (শেখ হাসিনা) পুরো প্রশাসনকে দুর্নীতিবাজ করে ফেলেছেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রলোভন দেখিয়ে, নির্যাতন করে, জেল খাটিয়ে এবং সাজা দিয়েও বিরোধী দলে ঐক্য ভাঙতে পারেনি সরকার। রোজার মধ্যে কিছু করা যাচ্ছে না। আর কিছু সময় বুঝে না বুঝে নষ্ট করেছি। কিছু সময়ের সুযোগের ব্যবহার করতে পারিনি। আন্দোলনের রোডম্যাপ লাগবে। কিন্তু ওই রকম করে বলছি না যে, দিন ও তারিখ ঠিক করে বলবো। সেটা হবে না। কিন্তু সময় বলতে পারবো যে, এতদিনের মধ্যে আন্দোলন এভাবে এতদূর পর্যন্ত পৌঁছাবে। সুতরাং সবকিছু দেখে হিসাব করেই নামতে হবে। কারণ শুধু আবেগ দিয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে জেতা যাবে না।
তিনি বলেন, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন মানুষ মারা গেছে। আমরা বলছি আগুনে পুড়ে মানুষ মারা গেছে, কিন্তু লাশগুলো যখন বের করা হচ্ছে, তখন সেই শরীরগুলো পোড়া ছিল না। কারণ তারা আগুনে পুড়ে মারা যায়নি। আগুনের কারণে যে ধোঁয়া তৈরি হয়েছে, সে জন্যই বেশি মানুষ মারা গেছে। রেস্টুরেন্টের নিচতলায় সব অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এক জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মো. ফারুক রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা’র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান প্রমুখ।