Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংকট আরো গভীর হয়েছে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংকট আরো গভীর হয়েছে। সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট উতরে যায়নি, আরও বেড়েছে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ওনাদের (সরকার) একটা ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, ওনারা সংকট কাটিয়ে উঠেছেন। আসলে সংকট আরও গভীর করেছেন। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংকট আরও গভীর হয়েছে।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, কে এলো তাতে ইন্টারেস্ট (আগ্রহ) নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে।

ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপির বহু নেতা-কর্মীকে একতরফা সাজা দিয়েছে আদালত। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে বিএনপি। বিনা শুনানিতেও সাজা দিয়েছে সরকার। এখনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা কারাগারে রয়েছেন। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে সাজা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ করতে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসার জায়গা হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

দেশে প্রবেশের সময় আমদানি পণ্যের মান যাচাই করা উচিত মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার তা করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। এ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের ভেতরে দম্ভ কাজ করছে। কারণ তাদের জনগণের কোনো দরকার নেই।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র, সরকার পরিকল্পিতভাবে এ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখনই ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, রাজনীতির পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটি ট্রু (সত্য)।

তিনি বলেন, গত ৮ মে অনুষ্ঠিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই ঘটে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে। অথচ এসব রোগ মোকাবেলায় সরকারের অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র মোট স্বাস্থ্য বাজেটের ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে গত মার্চ মাসে সিপিডির একটি রিপোর্টেও জনস্বাস্থ্যের এক ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে উঠেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ১৩ কোটি মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারছেন না। গত মার্চ মাসেই বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ/বিএফএসএ’র শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ১৪ হাজার মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করছে। এই ক্যন্সারের মূল কারণ অনিরাপদ খাদ্য।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভা মনে করে, নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কিংবা রাষ্ট্র্রসংঘ কি ধরণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বা রাখা উচিত, সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ এমন একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থা র‌্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ফুড অ্যান্ড ফিড/আর-এস-এফ-এফ, গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রপ্তানি করা ৫২৭টি ভারতীয় পণ্যে ক্যান্সার উপযোগী উপাদান পেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আরএএসএফএফ জানিয়েছে, ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে ৩৩২টি খাবার পণ্যের উৎস ভারতে। বাকি পণ্যগুলো সরাসরি ভারতের না হলেও সেগুলোতে ভারতের ট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এসব ভোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে, বাদাম, তিল বীজ, ভেষজ, মশলা, ডায়েবেটিক জাতীয় খাবার। এ সকল পণ্যের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান ইতিলিন অক্সাইড শনাক্ত করা হয়েছে। এই রাসায়নিক উপাদান মানব দেহে প্রবেশ করলে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি লিম্ফোমা এবং লিুকেমিয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশের পর ভারতের ৮৭টি পণ্যের চালান ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ভারতের ডেকান হেরাল্ড, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভায় বলা হয়, ৫২৭টি পণ্য সম্পর্কে খোদ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রামাইয়া অ্যাডভান্সড টেস্টিং ল্যাবের চিফ অপারেটিং অফিসার জুবিন জর্জ জোসেফ বলেছেন, এসব পণ্যে ইথিলিন অক্সাইড ছাড়াও আরও ২টি রাসায়নিক বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপদজ্জনক হল ইতিলিনগ্লাইকোল। যেটি মূলত কাশির সিরাপে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে শিশুদের মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জুবিন জর্জ জোসেফ পরামর্শ দিয়ে বলছেন, প্রতিটি দেশেরই উচিত, নিজ নিজ দেশে আমদানি পণ্য পৌঁছার পর পণ্যের নিরাপত্তা মান পরীক্ষা করা। আমদানি করা পণ্য পৌঁছো সংশ্লিষ্ট দেশে পৌঁছা মাত্রই জনগণের ক্রয়ের জন্যে বাজারে পাঠিয়ে দেয়া উচিত নয়। কারণ, এর আগেও ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ১২১টি ভারতীয় পণ্য মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কিন্তু তারপরেও পণ্যের উৎস দেশটি এই পণ্যগুলো ত্রুটিমুক্ত করার জন্য জন্য কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২৩ এপ্রিল ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, হংকং এবং সিঙ্গাপুর তাদের দেশে ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেরে গুাঁড়া মসলা বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনকি দেশটিতে পরীক্ষার আগেই ঢুকে পড়া মাছ রান্নায় ব্যবহৃত এমডিএইচের তিন ধরনের গুাঁড়া মশলা ও এভারেস্টের একটি গুাঁড়া মশলার বিক্রি স্থগিত করেছে। সিঙ্গাপুরও দেশটির বাজার থেকে এভারেস্টের গুাঁড়া মশলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। হংকং ভারতীয় দুই কোম্পানির গুাঁড়া মশলায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ইথিলিন অক্সাইড শনাক্ত হওয়ার পর দেশ দুইটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সভা মনে করে, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশেরও উচিত দেশে আমদানি করা প্রতিটি পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা পণ্যের মান যাচাই করে নেয়া। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ/বিএফএসএ কিংবা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য বাজারে ছাড়া উচিত নয়। তবে দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বর্তমান তাবেদার সরকার আমদানি করা খাদ্যপণ্য যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে কিনা এ ব্যাপারে জনগণ যথেষ্ট সন্দিহান।

মির্জা ফখরুল বলেন, সুতরাং, আমদানি করা পণ্য যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়া গেলে প্রতিটি নাগরিককে নিজের এবং নিজেদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থা রক্ষায় নিজ উদ্যোগেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমদানি করে বাজারে ছেড়ে দেয়া ক্যান্সারের উপদানযুক্ত সকল পণ্য পরিহার করতে হবে। জলবায়ু তহবিলের টাকা লোপাটকারী তাবেদার সরকারের উপর ভরসা না করে নিজেই নিজের সাধ্যমত নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সভা মনে করে, সকলের মনে রাখা প্রয়োজন ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এবারের স্লোগান ছিল আমার স্বাস্থ্য-আমার অধিকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবৈধ সরকার কি ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তায় এই সরকার কেন এতো উদাসীন। জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে দেশের নাগরিকদেরকে পুষ্টিকর খাদ্য যোগান দেয়া, অনিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সচেতন করা সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায়, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে, দেশে ভয়াবহ সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। সরকারি দলের সমর্থক, ঋণ খেলাপী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেহেতু এই সরকারের কোনও স্তরেই জবাবদিহিতা নেই সেহেতু লাগামহীন ভাবে ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, জনগণের অর্থ লোপাটের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোত্র তৈরী করা হচ্ছে। যারা এই অবৈধ সরকারের অবৈধ কর্মকান্ডকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। সভায় অবৈধ তথ্য-প্রবাহে বাধা দানের প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করা হয় এবং অবিলম্বে অবৈধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতের লক্ষে সকল প্রকার অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত ভাবে জিয়াউর রহমানকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে। তাকে এখন খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম কিন্তু জিয়াউর রহমানের নাম জানে না। এটা তো ইতিহাস না।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমি বিএনপির মা বলি না। আমি তাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা বলি। এই নেত্রীর মূল্যায়ন এই দেশের অনেকেই করতে পারেন না। এই মহিয়সী নেত্রী আনপ্যারালাল। ১৯৭১ সালে যখন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন, তখন দুই শিশু সন্তানকে (তারেক ও কোকো) সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামেই ছিলেন তিনি। সেখান থেকে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় এক আত্মীয়’র বাসায় ওঠেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যখন তাদের খাটো করা হয়, তখন দেশের মানুষ মানতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধারা আক্ষেপ করে বলেন, এমন একটি বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করিনি।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংকট আরো গভীর হয়েছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০২:৪৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংকট আরো গভীর হয়েছে। সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট উতরে যায়নি, আরও বেড়েছে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ওনাদের (সরকার) একটা ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, ওনারা সংকট কাটিয়ে উঠেছেন। আসলে সংকট আরও গভীর করেছেন। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংকট আরও গভীর হয়েছে।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, কে এলো তাতে ইন্টারেস্ট (আগ্রহ) নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে।

ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপির বহু নেতা-কর্মীকে একতরফা সাজা দিয়েছে আদালত। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে বিএনপি। বিনা শুনানিতেও সাজা দিয়েছে সরকার। এখনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা কারাগারে রয়েছেন। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে সাজা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ করতে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসার জায়গা হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

দেশে প্রবেশের সময় আমদানি পণ্যের মান যাচাই করা উচিত মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার তা করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। এ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের ভেতরে দম্ভ কাজ করছে। কারণ তাদের জনগণের কোনো দরকার নেই।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র, সরকার পরিকল্পিতভাবে এ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখনই ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, রাজনীতির পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটি ট্রু (সত্য)।

তিনি বলেন, গত ৮ মে অনুষ্ঠিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই ঘটে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে। অথচ এসব রোগ মোকাবেলায় সরকারের অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র মোট স্বাস্থ্য বাজেটের ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে গত মার্চ মাসে সিপিডির একটি রিপোর্টেও জনস্বাস্থ্যের এক ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে উঠেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ১৩ কোটি মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারছেন না। গত মার্চ মাসেই বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ/বিএফএসএ’র শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ১৪ হাজার মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করছে। এই ক্যন্সারের মূল কারণ অনিরাপদ খাদ্য।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভা মনে করে, নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কিংবা রাষ্ট্র্রসংঘ কি ধরণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বা রাখা উচিত, সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ এমন একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থা র‌্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ফুড অ্যান্ড ফিড/আর-এস-এফ-এফ, গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রপ্তানি করা ৫২৭টি ভারতীয় পণ্যে ক্যান্সার উপযোগী উপাদান পেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আরএএসএফএফ জানিয়েছে, ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে ৩৩২টি খাবার পণ্যের উৎস ভারতে। বাকি পণ্যগুলো সরাসরি ভারতের না হলেও সেগুলোতে ভারতের ট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এসব ভোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে, বাদাম, তিল বীজ, ভেষজ, মশলা, ডায়েবেটিক জাতীয় খাবার। এ সকল পণ্যের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান ইতিলিন অক্সাইড শনাক্ত করা হয়েছে। এই রাসায়নিক উপাদান মানব দেহে প্রবেশ করলে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি লিম্ফোমা এবং লিুকেমিয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশের পর ভারতের ৮৭টি পণ্যের চালান ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ভারতের ডেকান হেরাল্ড, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভায় বলা হয়, ৫২৭টি পণ্য সম্পর্কে খোদ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রামাইয়া অ্যাডভান্সড টেস্টিং ল্যাবের চিফ অপারেটিং অফিসার জুবিন জর্জ জোসেফ বলেছেন, এসব পণ্যে ইথিলিন অক্সাইড ছাড়াও আরও ২টি রাসায়নিক বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপদজ্জনক হল ইতিলিনগ্লাইকোল। যেটি মূলত কাশির সিরাপে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে শিশুদের মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জুবিন জর্জ জোসেফ পরামর্শ দিয়ে বলছেন, প্রতিটি দেশেরই উচিত, নিজ নিজ দেশে আমদানি পণ্য পৌঁছার পর পণ্যের নিরাপত্তা মান পরীক্ষা করা। আমদানি করা পণ্য পৌঁছো সংশ্লিষ্ট দেশে পৌঁছা মাত্রই জনগণের ক্রয়ের জন্যে বাজারে পাঠিয়ে দেয়া উচিত নয়। কারণ, এর আগেও ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ১২১টি ভারতীয় পণ্য মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কিন্তু তারপরেও পণ্যের উৎস দেশটি এই পণ্যগুলো ত্রুটিমুক্ত করার জন্য জন্য কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২৩ এপ্রিল ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, হংকং এবং সিঙ্গাপুর তাদের দেশে ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেরে গুাঁড়া মসলা বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনকি দেশটিতে পরীক্ষার আগেই ঢুকে পড়া মাছ রান্নায় ব্যবহৃত এমডিএইচের তিন ধরনের গুাঁড়া মশলা ও এভারেস্টের একটি গুাঁড়া মশলার বিক্রি স্থগিত করেছে। সিঙ্গাপুরও দেশটির বাজার থেকে এভারেস্টের গুাঁড়া মশলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। হংকং ভারতীয় দুই কোম্পানির গুাঁড়া মশলায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ইথিলিন অক্সাইড শনাক্ত হওয়ার পর দেশ দুইটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সভা মনে করে, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশেরও উচিত দেশে আমদানি করা প্রতিটি পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা পণ্যের মান যাচাই করে নেয়া। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ/বিএফএসএ কিংবা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য বাজারে ছাড়া উচিত নয়। তবে দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বর্তমান তাবেদার সরকার আমদানি করা খাদ্যপণ্য যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে কিনা এ ব্যাপারে জনগণ যথেষ্ট সন্দিহান।

মির্জা ফখরুল বলেন, সুতরাং, আমদানি করা পণ্য যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়া গেলে প্রতিটি নাগরিককে নিজের এবং নিজেদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থা রক্ষায় নিজ উদ্যোগেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমদানি করে বাজারে ছেড়ে দেয়া ক্যান্সারের উপদানযুক্ত সকল পণ্য পরিহার করতে হবে। জলবায়ু তহবিলের টাকা লোপাটকারী তাবেদার সরকারের উপর ভরসা না করে নিজেই নিজের সাধ্যমত নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সভা মনে করে, সকলের মনে রাখা প্রয়োজন ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এবারের স্লোগান ছিল আমার স্বাস্থ্য-আমার অধিকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবৈধ সরকার কি ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তায় এই সরকার কেন এতো উদাসীন। জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে দেশের নাগরিকদেরকে পুষ্টিকর খাদ্য যোগান দেয়া, অনিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সচেতন করা সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায়, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে, দেশে ভয়াবহ সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। সরকারি দলের সমর্থক, ঋণ খেলাপী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেহেতু এই সরকারের কোনও স্তরেই জবাবদিহিতা নেই সেহেতু লাগামহীন ভাবে ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, জনগণের অর্থ লোপাটের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোত্র তৈরী করা হচ্ছে। যারা এই অবৈধ সরকারের অবৈধ কর্মকান্ডকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। সভায় অবৈধ তথ্য-প্রবাহে বাধা দানের প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করা হয় এবং অবিলম্বে অবৈধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতের লক্ষে সকল প্রকার অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত ভাবে জিয়াউর রহমানকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে। তাকে এখন খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম কিন্তু জিয়াউর রহমানের নাম জানে না। এটা তো ইতিহাস না।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমি বিএনপির মা বলি না। আমি তাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা বলি। এই নেত্রীর মূল্যায়ন এই দেশের অনেকেই করতে পারেন না। এই মহিয়সী নেত্রী আনপ্যারালাল। ১৯৭১ সালে যখন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন, তখন দুই শিশু সন্তানকে (তারেক ও কোকো) সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামেই ছিলেন তিনি। সেখান থেকে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় এক আত্মীয়’র বাসায় ওঠেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যখন তাদের খাটো করা হয়, তখন দেশের মানুষ মানতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধারা আক্ষেপ করে বলেন, এমন একটি বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করিনি।’