Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আসবে। তাদের খরচ বহন করবে না সরকার। তবে বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদেরকে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে।

রোববার (২২ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রাসেলস সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বলেছে তারা বড় দল পাঠাবে না, তাদের বাজেটে সমস্যা। সব দেশে এখন বাজেটে সমস্যা। তারা এজন্য সাতজনের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এদের জন্য কোনো পয়সা লাগবে না। আমরা অর্থ দিয়ে আনব না। তবে এখানে আসলে পরে যেসব খরচ, সেটা দেওয়া হবে। তারা বিভিন্ন জেলায় যাবেন, তার জন্য তাদের খাওয়া-দাওয়া, এসব খরচ দেওয়া হবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়ছিল চার সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ। বিষয়টি তারা চিঠি দিয়ে ব্রাসেলসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়ে দিয়েছে। চিঠিটি নির্বাচন কমিশন পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে বিক্ষোভ করতে বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভ করায় সেখানে লোকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে একটা কঠিন সময় যাচ্ছে আমাদের। এই সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনো বাজেট সহায়তা চাওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করেছি। তারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে এসেছে। তারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে তাদের সঙ্গে আমাদের বহুপাক্ষিক সম্পর্ক। সম্প্রতি দেখেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ৭০০’র বেশি সদস্য আছেন। তাদের ছয়জন একটা বক্তব্য দিয়েছিলেন। পরে বাকিরা বলেছেন ভুল তথ্যের জন্য এটা বাদ দেওয়া উচিত।

ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করা হবে কি না- জানতে চাইলে মোমেন বলেন, তাদের সঙ্গে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিয়ে আমরা অব্যাহত আলোচনা করছি। আমাদের বাকস্বাধীনতা, বিক্ষোভ করার স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সবাই অনেক সোচ্চার। আপনারা যা চান, তাই লিখতে পারেন, বলতে পারেন। কিন্তু ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে বিক্ষোভ করতেও বাধা দেওয়া হয়। গ্রেফতার করা হয়। আমরা তো সেসব ঝামেলায় যাই না। আপনি যা করার করুন। আমাদের রাস্তাঘাট, বিপণিবিতান, পানশালা কিংবা রেস্তোরাঁয় কাউকে গুলি করে মারি না। আমরা সবার জন্য গণতন্ত্র রক্ষা করি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এসব ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অনেক উন্নত।

আগামী ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ব্রাসেলস সফর ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’। এই সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। যা আমাদের জন্য একটি অর্জন।

কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাচ্ছেন বলে আপনি বক্তব্যে আপনি বলেছেন, এই কঠিন সময় বলতে আপনি কী বুঝিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। আমাদের এখন কোনো সময় নেই দেশের বাইরে যাওয়ার। আমরা অর্থাৎ আমাদের সব সহকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। সময় পেলেই এলাকায় চলে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও এলাকায় নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে তাগাদা দিচ্ছি। এসময়ে তার বাইরে যাওয়াটা…। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোটাররা। তাদের কাছে আমাদের জবাবদিহি আছে। সেজন্য আমরা সময় পেলেই এলাকায় যাচ্ছি।

বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারপ্রধানের এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বাংলাদেশকে ৪০৭ মিলিয়ন ইউরো রেয়াতি ঋণ ও অনুদান দেবে। এরমধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো এই সফরের মধ্যদিয়ে ছাড় দেওয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারা বিশ্বের সরকারের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে একত্রিত করবে। আগামী ২৫-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ওই অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।

সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সফর শেষে আগামী ২৭ অক্টোবর সরকারপ্রধান দেশে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

৭ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:১২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আসবে। তাদের খরচ বহন করবে না সরকার। তবে বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদেরকে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে।

রোববার (২২ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রাসেলস সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বলেছে তারা বড় দল পাঠাবে না, তাদের বাজেটে সমস্যা। সব দেশে এখন বাজেটে সমস্যা। তারা এজন্য সাতজনের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এদের জন্য কোনো পয়সা লাগবে না। আমরা অর্থ দিয়ে আনব না। তবে এখানে আসলে পরে যেসব খরচ, সেটা দেওয়া হবে। তারা বিভিন্ন জেলায় যাবেন, তার জন্য তাদের খাওয়া-দাওয়া, এসব খরচ দেওয়া হবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়ছিল চার সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ। বিষয়টি তারা চিঠি দিয়ে ব্রাসেলসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়ে দিয়েছে। চিঠিটি নির্বাচন কমিশন পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে বিক্ষোভ করতে বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভ করায় সেখানে লোকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে একটা কঠিন সময় যাচ্ছে আমাদের। এই সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনো বাজেট সহায়তা চাওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করেছি। তারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে এসেছে। তারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে তাদের সঙ্গে আমাদের বহুপাক্ষিক সম্পর্ক। সম্প্রতি দেখেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ৭০০’র বেশি সদস্য আছেন। তাদের ছয়জন একটা বক্তব্য দিয়েছিলেন। পরে বাকিরা বলেছেন ভুল তথ্যের জন্য এটা বাদ দেওয়া উচিত।

ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করা হবে কি না- জানতে চাইলে মোমেন বলেন, তাদের সঙ্গে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিয়ে আমরা অব্যাহত আলোচনা করছি। আমাদের বাকস্বাধীনতা, বিক্ষোভ করার স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সবাই অনেক সোচ্চার। আপনারা যা চান, তাই লিখতে পারেন, বলতে পারেন। কিন্তু ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে বিক্ষোভ করতেও বাধা দেওয়া হয়। গ্রেফতার করা হয়। আমরা তো সেসব ঝামেলায় যাই না। আপনি যা করার করুন। আমাদের রাস্তাঘাট, বিপণিবিতান, পানশালা কিংবা রেস্তোরাঁয় কাউকে গুলি করে মারি না। আমরা সবার জন্য গণতন্ত্র রক্ষা করি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এসব ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অনেক উন্নত।

আগামী ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ব্রাসেলস সফর ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’। এই সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। যা আমাদের জন্য একটি অর্জন।

কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাচ্ছেন বলে আপনি বক্তব্যে আপনি বলেছেন, এই কঠিন সময় বলতে আপনি কী বুঝিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। আমাদের এখন কোনো সময় নেই দেশের বাইরে যাওয়ার। আমরা অর্থাৎ আমাদের সব সহকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। সময় পেলেই এলাকায় চলে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও এলাকায় নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে তাগাদা দিচ্ছি। এসময়ে তার বাইরে যাওয়াটা…। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোটাররা। তাদের কাছে আমাদের জবাবদিহি আছে। সেজন্য আমরা সময় পেলেই এলাকায় যাচ্ছি।

বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারপ্রধানের এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বাংলাদেশকে ৪০৭ মিলিয়ন ইউরো রেয়াতি ঋণ ও অনুদান দেবে। এরমধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো এই সফরের মধ্যদিয়ে ছাড় দেওয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারা বিশ্বের সরকারের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে একত্রিত করবে। আগামী ২৫-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ওই অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।

সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সফর শেষে আগামী ২৭ অক্টোবর সরকারপ্রধান দেশে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।