Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭ জনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিজের গুম হওয়ার ঘটনায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগ গ্রহণ করেন।

অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ডিবির সাবেক ডিসি মনিরুল ইসলাম।

এসময় বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এম বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুলসহ অনেকে।

এর আগে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ জমা দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

গত বছরের ১৫ অক্টোবর গুম কমিশনে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ও গুমের শিকার সালাহউদ্দিন আহমেদ।

অভিযোগ দায়ের করার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গুম, খুনের ঘটনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হিসেবে দায়ের হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনের সাথে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে।

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ গুমের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের শাস্তি এবং যারা পালিয়ে গেছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য গুম কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসানসহ গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা উচিত। এই সরকারের দায়িত্ব হলো— সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং গুম-খুনের সংস্কৃতি বন্ধ করা।

নিজের গুম হওয়া প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমি আগে থেকেই গুম কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সশস্ত্র ব্যক্তিরা আমাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় ৬১ দিন পর, আমাকে অন্য একটি দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আরো জানান, যত সময় ধরে আমাকে আটক রাখা হয়েছিল, সেই সময়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয় গুম কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি।

উল্লেখ্য, সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন। প্রায় দুই মাস পর, ১১ মে, ভারতের মেঘালয়ের শিলং শহরে পুলিশ তাকে খুঁজে পায়। তাকে ভারতে বৈধ নথিপত্র ছাড়াই প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি ওই মামলায় খালাস পান। তবে, ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে ভারতে থাকতে হয়।

এ ঘটনার পর, ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা এবং রাজনৈতিক সহকর্মীরা নানা ধরনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, এবং সালাহউদ্দিন নিজেও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

৭ জনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ

প্রকাশের সময় : ০১:৩২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিজের গুম হওয়ার ঘটনায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগ গ্রহণ করেন।

অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ডিবির সাবেক ডিসি মনিরুল ইসলাম।

এসময় বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এম বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুলসহ অনেকে।

এর আগে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ জমা দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

গত বছরের ১৫ অক্টোবর গুম কমিশনে নিজের গুম হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ও গুমের শিকার সালাহউদ্দিন আহমেদ।

অভিযোগ দায়ের করার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গুম, খুনের ঘটনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হিসেবে দায়ের হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনের সাথে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে।

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ গুমের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের শাস্তি এবং যারা পালিয়ে গেছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য গুম কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসানসহ গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা উচিত। এই সরকারের দায়িত্ব হলো— সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং গুম-খুনের সংস্কৃতি বন্ধ করা।

নিজের গুম হওয়া প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমি আগে থেকেই গুম কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সশস্ত্র ব্যক্তিরা আমাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় ৬১ দিন পর, আমাকে অন্য একটি দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আরো জানান, যত সময় ধরে আমাকে আটক রাখা হয়েছিল, সেই সময়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয় গুম কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি।

উল্লেখ্য, সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন। প্রায় দুই মাস পর, ১১ মে, ভারতের মেঘালয়ের শিলং শহরে পুলিশ তাকে খুঁজে পায়। তাকে ভারতে বৈধ নথিপত্র ছাড়াই প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি ওই মামলায় খালাস পান। তবে, ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে ভারতে থাকতে হয়।

এ ঘটনার পর, ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা এবং রাজনৈতিক সহকর্মীরা নানা ধরনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, এবং সালাহউদ্দিন নিজেও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন।