Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬০ মিটার ব্রিজে প্রকল্প এলাকায় আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯১ জন দেখেছেন

ছবি: ঢাকা জেলার অধীনে দোহার উপজেলার জয়পাড়া-কাজীচর সড়কে প্রতিস্থাপিত ৬০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ। প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেসের আওতায় এটি বাস্তবায়িত হয়েছে

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গৃহীত প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস প্রকল্পের আওতায়, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের সংযোগ উন্নয়নের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান সেতুগুলোর স্থায়ীত্ব বাড়ানো, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ সেতুর উন্নয়ন ও মেরামত করা; এবং প্রকল্প নির্মাণ/রক্ষণাবেক্ষণের কাজে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে এই প্রকল্পের অর্থায়নে রয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
এই উদ্দ্যেশ্য সামনে রেখেই ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দেশের ৬১টি জেলায় এক হাজার পাঁচশ দশটি (১৫১০) প্যাকেজের আওতায় ৩ হাজার সাতশ একাশি (৩৭৮১) স্কিমের কাজ চলমান রয়েছে এবং বর্তমানে কাজের ভৌত অগ্রগতি ৬৫.৩৪% এবং আর্থিক অগ্রগতি ৫১.৬৫%। উল্লেখ্য প্রকল্পের সময়সীমা আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ ইং পর্যন্ত নির্ধারণ রয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায় ৬০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি জয়পাড়া, মাঝিরচর বাজার, কুতুবপুর, দেবীনগর, কুলছড়ি, কাজীরচর সড়কের শেষ পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে, যা ওই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ এবং আন্ত:জেলা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে।

সেতুটির পূর্বের অবকাঠামো নাজুক হয়ে পড়ায় অত্র এলাকার জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন সেবা, শিক্ষা সেবা গ্রহন ও পণ্য সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছিলো। উল্লেখিত সেতুটি প্রতিস্থাপনের ফলে পরিবহন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এছাড়া উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য সহজে, স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে বাজারজাতকরণ সম্ভব হচ্ছে, বিধায় উৎপাদিত পণ্যের অপচয় হ্রাস পাচ্ছে।

সেতুটি প্রতিস্থাপনের ফলে শিশু, নারী, এ বিশেষভাবে সক্ষম ও সুবিধাবঞ্চিত জনসাধারণের যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের তালিকাভুক্তির হার পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য সেতুটি প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ হয় ২০২৩ সালের ১২ জুলাই। নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৬৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা।

শুধুমাত্র সেতু প্রতিস্থাপনই নয়, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেসের আওতায় নতুন সেতু নির্মাণ, বিদ্যমান সেতুর সক্ষমতাবৃদ্ধি মেরামতযোগ্য বিদ্যমান সেতুমসূহ সংস্কারের ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। বিগত ৫ বছরে যে সমস্ত সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেখানে বেজলাইন বা সেতু নির্মাণের পূর্বের জরিপ ও সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর মধ্যবর্তী জরিপে উন্নয়নের চিত্র উঠে এসেছে। ২০২২ সালের বেজলাইন ফেজের তুলনায় ২০২৪ সালের মধ্যবর্তী ফেজে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবর্তনের চিত্রের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। জরিপের পর দেখা যায় এই নির্দিষ্ট সময়ে পরিবারপ্রধানের উযার্জন বেড়েছে ৫.৯ শতাংশ। স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। কৃষি জমিতে পানি বেধে থাকার হার কমেছে ২.৩ শতাংশ। এই প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে নিয়োজিত শ্রমিকগণ নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যসুরক্ষার ( অকুপেশনাল হেল্থ এন্ড সেফটি) বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে তদানুযায়ী নির্দিষ্ট পোশাক, বুট, গ্লাভস ও হেলমেট ব্যবহার করে থাকে। ফলে নির্মাণ ঝুঁকির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া, নারী এ পুরুষ শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্যানিটেশন সুবিধা, বিশ্রাম কক্ষ, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রকল্প এলাকায় নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিবেশ দুষণ রোধ এবং জলবায়ু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব।

এ প্রোগ্রামের অধীনে নতুন নতুন সেতু নির্মাণ, মেরামত ও প্রতিস্থাপনের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন যেমন পূরণ হচ্ছে তেমনি বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

৬০ মিটার ব্রিজে প্রকল্প এলাকায় আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন

প্রকাশের সময় : ১২:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গৃহীত প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস প্রকল্পের আওতায়, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের সংযোগ উন্নয়নের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান সেতুগুলোর স্থায়ীত্ব বাড়ানো, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ সেতুর উন্নয়ন ও মেরামত করা; এবং প্রকল্প নির্মাণ/রক্ষণাবেক্ষণের কাজে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে এই প্রকল্পের অর্থায়নে রয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
এই উদ্দ্যেশ্য সামনে রেখেই ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দেশের ৬১টি জেলায় এক হাজার পাঁচশ দশটি (১৫১০) প্যাকেজের আওতায় ৩ হাজার সাতশ একাশি (৩৭৮১) স্কিমের কাজ চলমান রয়েছে এবং বর্তমানে কাজের ভৌত অগ্রগতি ৬৫.৩৪% এবং আর্থিক অগ্রগতি ৫১.৬৫%। উল্লেখ্য প্রকল্পের সময়সীমা আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ ইং পর্যন্ত নির্ধারণ রয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায় ৬০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি জয়পাড়া, মাঝিরচর বাজার, কুতুবপুর, দেবীনগর, কুলছড়ি, কাজীরচর সড়কের শেষ পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে, যা ওই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ এবং আন্ত:জেলা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে।

সেতুটির পূর্বের অবকাঠামো নাজুক হয়ে পড়ায় অত্র এলাকার জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন সেবা, শিক্ষা সেবা গ্রহন ও পণ্য সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছিলো। উল্লেখিত সেতুটি প্রতিস্থাপনের ফলে পরিবহন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এছাড়া উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য সহজে, স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে বাজারজাতকরণ সম্ভব হচ্ছে, বিধায় উৎপাদিত পণ্যের অপচয় হ্রাস পাচ্ছে।

সেতুটি প্রতিস্থাপনের ফলে শিশু, নারী, এ বিশেষভাবে সক্ষম ও সুবিধাবঞ্চিত জনসাধারণের যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের তালিকাভুক্তির হার পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য সেতুটি প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ হয় ২০২৩ সালের ১২ জুলাই। নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৬৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা।

শুধুমাত্র সেতু প্রতিস্থাপনই নয়, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেসের আওতায় নতুন সেতু নির্মাণ, বিদ্যমান সেতুর সক্ষমতাবৃদ্ধি মেরামতযোগ্য বিদ্যমান সেতুমসূহ সংস্কারের ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। বিগত ৫ বছরে যে সমস্ত সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেখানে বেজলাইন বা সেতু নির্মাণের পূর্বের জরিপ ও সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর মধ্যবর্তী জরিপে উন্নয়নের চিত্র উঠে এসেছে। ২০২২ সালের বেজলাইন ফেজের তুলনায় ২০২৪ সালের মধ্যবর্তী ফেজে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবর্তনের চিত্রের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। জরিপের পর দেখা যায় এই নির্দিষ্ট সময়ে পরিবারপ্রধানের উযার্জন বেড়েছে ৫.৯ শতাংশ। স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। কৃষি জমিতে পানি বেধে থাকার হার কমেছে ২.৩ শতাংশ। এই প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে নিয়োজিত শ্রমিকগণ নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যসুরক্ষার ( অকুপেশনাল হেল্থ এন্ড সেফটি) বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে তদানুযায়ী নির্দিষ্ট পোশাক, বুট, গ্লাভস ও হেলমেট ব্যবহার করে থাকে। ফলে নির্মাণ ঝুঁকির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া, নারী এ পুরুষ শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্যানিটেশন সুবিধা, বিশ্রাম কক্ষ, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রকল্প এলাকায় নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিবেশ দুষণ রোধ এবং জলবায়ু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব।

এ প্রোগ্রামের অধীনে নতুন নতুন সেতু নির্মাণ, মেরামত ও প্রতিস্থাপনের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন যেমন পূরণ হচ্ছে তেমনি বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।