Dhaka রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫ কিলোমিটার সড়ক ভাঙা, দুর্ভোগে অর্ধলাখ মানুষের

সোনারগাঁ উপজেলা প্রতিনিধি : 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বছরের পর বছর ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও সাধারণ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের আশ্বাস মিললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-সংলগ্ন দড়িকান্দী বাসস্ট্যান্ড থেকে অলিপুরা সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। আশপাশের অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই সড়ক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগবাজার, বালুয়াকান্দি, নাজিরপুর, নীলকান্দা ও বালুয়াকান্দি এলাকায় পিচ উঠে গিয়ে মাটি ধসে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির সময় এসব গর্তে পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতো হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

স্থানীয় সবজি বিক্রেতা সোহেল মিয়া বলেন, চোখের সামনে অন্তত ৩০টা দুর্ঘটনা দেখছি। কারো হাত ভেঙেছে, কারো মালামাল নষ্ট হয়েছে। তবুও রাস্তা ঠিক হয় না। বড় কোনো সরকারি লোক আসলে ইট-বালু ফেলে সমান করে দেয়, কিন্তু কয়েক দিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন এই ভাঙা রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকে। কাদা-মাটিতে হাঁটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেক সময় পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। আমরা চাই দ্রুত রাস্তা মেরামত করা হোক।

নীলকান্দা নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিশু স্কুলে আসে। রাস্তায় পানি ও কাদা থাকায় তারা অনেক সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়। অভিভাবকরাও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন। শিক্ষা কার্যক্রমেও এর প্রভাব পড়ছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।

অটোরিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই রাস্তায় গাড়ি চালানো এখন একটা যুদ্ধের মতো। প্রতিদিন কোনো না কোনো গর্তে গাড়ি আটকে যায়। অনেক সময় যাত্রী নামিয়ে ঠেলে গাড়ি তুলতে হয়। এতে সময় নষ্ট হয়, ক্ষতি হয় গাড়িরও। আবার একটু বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

বিকল্প রাস্তা না থাকায় এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে অ্যাম্বুলেন্স, সিএনজি, রিকশা, লেগুনা, নসিমন, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ট্রাক। এই সড়কের পাশে রয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক, চারটি মসজিদ, কয়েকটি মাদরাসা, একটি হাইস্কুল, একটি ইউনিয়ন পরিষদ এবং চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিদিন অন্তত অর্ধলাখ মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে।

সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হক টিক্কা বলেন, আমরা বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। নিজের পক্ষ থেকেও চলাচলের সুবিধার জন্য কয়েকবার মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি।

সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন, বিষয়টি এক্সইএন (নির্বাহী প্রকৌশলী) অফিসে পাঠানো হয়েছে। এই সড়কের সংস্কারের দায়িত্ব এক্সইএন অফিসের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অননুমোদিত হুটার-হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা

৫ কিলোমিটার সড়ক ভাঙা, দুর্ভোগে অর্ধলাখ মানুষের

প্রকাশের সময় : ০১:০৭:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

সোনারগাঁ উপজেলা প্রতিনিধি : 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বছরের পর বছর ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও সাধারণ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের আশ্বাস মিললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-সংলগ্ন দড়িকান্দী বাসস্ট্যান্ড থেকে অলিপুরা সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। আশপাশের অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই সড়ক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগবাজার, বালুয়াকান্দি, নাজিরপুর, নীলকান্দা ও বালুয়াকান্দি এলাকায় পিচ উঠে গিয়ে মাটি ধসে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির সময় এসব গর্তে পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতো হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

স্থানীয় সবজি বিক্রেতা সোহেল মিয়া বলেন, চোখের সামনে অন্তত ৩০টা দুর্ঘটনা দেখছি। কারো হাত ভেঙেছে, কারো মালামাল নষ্ট হয়েছে। তবুও রাস্তা ঠিক হয় না। বড় কোনো সরকারি লোক আসলে ইট-বালু ফেলে সমান করে দেয়, কিন্তু কয়েক দিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন এই ভাঙা রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকে। কাদা-মাটিতে হাঁটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেক সময় পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। আমরা চাই দ্রুত রাস্তা মেরামত করা হোক।

নীলকান্দা নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিশু স্কুলে আসে। রাস্তায় পানি ও কাদা থাকায় তারা অনেক সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়। অভিভাবকরাও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন। শিক্ষা কার্যক্রমেও এর প্রভাব পড়ছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।

অটোরিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই রাস্তায় গাড়ি চালানো এখন একটা যুদ্ধের মতো। প্রতিদিন কোনো না কোনো গর্তে গাড়ি আটকে যায়। অনেক সময় যাত্রী নামিয়ে ঠেলে গাড়ি তুলতে হয়। এতে সময় নষ্ট হয়, ক্ষতি হয় গাড়িরও। আবার একটু বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

বিকল্প রাস্তা না থাকায় এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে অ্যাম্বুলেন্স, সিএনজি, রিকশা, লেগুনা, নসিমন, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ট্রাক। এই সড়কের পাশে রয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক, চারটি মসজিদ, কয়েকটি মাদরাসা, একটি হাইস্কুল, একটি ইউনিয়ন পরিষদ এবং চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিদিন অন্তত অর্ধলাখ মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে।

সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হক টিক্কা বলেন, আমরা বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। নিজের পক্ষ থেকেও চলাচলের সুবিধার জন্য কয়েকবার মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি।

সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন, বিষয়টি এক্সইএন (নির্বাহী প্রকৌশলী) অফিসে পাঠানো হয়েছে। এই সড়কের সংস্কারের দায়িত্ব এক্সইএন অফিসের।