Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪ বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগ এলাকাবাসী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
  • ১৯৪ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুরে ঠিকাদারের গাফলতি ও ধীরগতিতে নির্মাণ কাজ করায় ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটি বিগত ৪ বছরেও শেষ হয়নি। রাস্তাটি নির্মাণাধীন হওয়ায় মাটি খোড়া, ইট, সিমেন্ট পাথরের কারণে প্রতিনিয়িত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন দুর্ভোগ কবলিত এলাকাবাসী।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জামালপুর-ধানুয়া ও কামালপুর-কদমতলী সংযোগ রৌমারী দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটি ৩৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ টি প্যাকেজে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রাস্তার নির্মাণ কাজে রৌমারী ও রাজিবপুর অংশে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর শেষ সীমানা থেকে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা শালুর মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে দুই ল্যান ও বিভিন্ন বাজার স্থানগুলিতে মাঝ থেকে দু’ পাশে ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪৮ মিটার প্রস্থ করে রাস্তা নির্মাণ কার্যক্রম চলে। রাস্তাটি মহাসড়কের ন্যায় প্রশস্ত বৃদ্ধিকরণ, গাইড ওয়াল, ব্রিজ কালভার্ট, স্লুইজগেট নির্মাণ ও কার্পেটিং ও রাস্তাটির শোভা বর্ধনের হওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তার নির্মাণ কাজটি দীর্ঘ ৪ বছর অতিবাহিত হলেও আজো শেষ হয়নি। রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিজ বাড়িতে আসা মানুষেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের একমাত্র প্রধান রাস্তা এটি। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও সিএনজি, অটো-বাইক, রিকশা, অটোভেনসহ অগণিত যানবাহন যাতায়াত করে। রাস্তাটির নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়ায় দিনে রাতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় ট্রাক ড্রাইভার আলতাফ হোসেন বলেন, রাস্তাটির এখনও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চর নতুনবন্দর সীমান্ত শুল্ক স্টেশন থেকে পাথর নিয়ে রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে যাতায়াতে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের। যাতায়াতের সময়ও অনেক বেশি লাগছে। সেই সঙ্গে আমরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছি ।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দুর্ভোগ কমাতে রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। কেন যে এই রাস্তার কাজটি দীর্ঘদিনেও শেষ হচ্ছে না তা জানি না। রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাস্তাটির সাব-ঠিকাদার হারুন অর রশিদ জানান, রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ দিনরাত দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এসব উন্নয়ন কাজ যাতে টেকসই হয় সে ব্যাপারেও নজরদারিতে রয়েছি। একটু সময় লাগা স্বাভাবিক।

রাস্তাটির নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মীর ইব্রাহীম জানান, রাস্তাটির গাইডওয়াল, দুই ল্যানের কার্পেটিংসহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে। মোটামোটিভাবে গাইড ওয়ালসহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে একদিকে পাথর খোয়া বালু মিশ্রীত ডাম্পিং ও অন্যদিকে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। যথা সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সওজ, সড়ক উপ-বিভাগ-১ কুড়িগ্রাম মোতাহার আলী জানান, কাজের অগ্রগতি দ্রুত চলমান রয়েছে। আগামী জুন মাসেই এ রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।

জামালপুর-ধানুয়া ও কামালপুর-কদমতলী সংযোগ রৌমারী দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে দক্ষিণবঙ্গের ময়মনসিংহ, ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্রগ্রামসহ দেশের সব জেলায় অতিসহজে যাতায়াত করতে পারবে।

পাশাপাশি সড়ক দূর্ঘটনাও অনেকটা কমে যাবে। অপর দিকে ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য উন্নতি হবে। এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রাস্তাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে সরকারের উন্নয়ন জনগণকে উপভোগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর কামনা করেছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

৪ বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগ এলাকাবাসী

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুরে ঠিকাদারের গাফলতি ও ধীরগতিতে নির্মাণ কাজ করায় ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটি বিগত ৪ বছরেও শেষ হয়নি। রাস্তাটি নির্মাণাধীন হওয়ায় মাটি খোড়া, ইট, সিমেন্ট পাথরের কারণে প্রতিনিয়িত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন দুর্ভোগ কবলিত এলাকাবাসী।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জামালপুর-ধানুয়া ও কামালপুর-কদমতলী সংযোগ রৌমারী দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটি ৩৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ টি প্যাকেজে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রাস্তার নির্মাণ কাজে রৌমারী ও রাজিবপুর অংশে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর শেষ সীমানা থেকে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা শালুর মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে দুই ল্যান ও বিভিন্ন বাজার স্থানগুলিতে মাঝ থেকে দু’ পাশে ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪৮ মিটার প্রস্থ করে রাস্তা নির্মাণ কার্যক্রম চলে। রাস্তাটি মহাসড়কের ন্যায় প্রশস্ত বৃদ্ধিকরণ, গাইড ওয়াল, ব্রিজ কালভার্ট, স্লুইজগেট নির্মাণ ও কার্পেটিং ও রাস্তাটির শোভা বর্ধনের হওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তার নির্মাণ কাজটি দীর্ঘ ৪ বছর অতিবাহিত হলেও আজো শেষ হয়নি। রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিজ বাড়িতে আসা মানুষেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের একমাত্র প্রধান রাস্তা এটি। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও সিএনজি, অটো-বাইক, রিকশা, অটোভেনসহ অগণিত যানবাহন যাতায়াত করে। রাস্তাটির নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়ায় দিনে রাতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় ট্রাক ড্রাইভার আলতাফ হোসেন বলেন, রাস্তাটির এখনও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চর নতুনবন্দর সীমান্ত শুল্ক স্টেশন থেকে পাথর নিয়ে রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে যাতায়াতে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের। যাতায়াতের সময়ও অনেক বেশি লাগছে। সেই সঙ্গে আমরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছি ।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দুর্ভোগ কমাতে রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। কেন যে এই রাস্তার কাজটি দীর্ঘদিনেও শেষ হচ্ছে না তা জানি না। রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাস্তাটির সাব-ঠিকাদার হারুন অর রশিদ জানান, রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ দিনরাত দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এসব উন্নয়ন কাজ যাতে টেকসই হয় সে ব্যাপারেও নজরদারিতে রয়েছি। একটু সময় লাগা স্বাভাবিক।

রাস্তাটির নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মীর ইব্রাহীম জানান, রাস্তাটির গাইডওয়াল, দুই ল্যানের কার্পেটিংসহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে। মোটামোটিভাবে গাইড ওয়ালসহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে একদিকে পাথর খোয়া বালু মিশ্রীত ডাম্পিং ও অন্যদিকে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। যথা সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সওজ, সড়ক উপ-বিভাগ-১ কুড়িগ্রাম মোতাহার আলী জানান, কাজের অগ্রগতি দ্রুত চলমান রয়েছে। আগামী জুন মাসেই এ রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।

জামালপুর-ধানুয়া ও কামালপুর-কদমতলী সংযোগ রৌমারী দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে দক্ষিণবঙ্গের ময়মনসিংহ, ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্রগ্রামসহ দেশের সব জেলায় অতিসহজে যাতায়াত করতে পারবে।

পাশাপাশি সড়ক দূর্ঘটনাও অনেকটা কমে যাবে। অপর দিকে ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য উন্নতি হবে। এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রাস্তাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে সরকারের উন্নয়ন জনগণকে উপভোগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর কামনা করেছেন।