নিজস্ব প্রতিবেদক :
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির তাণ্ডবের ভিডিও চিত্র কূটনীতিকদের দেখানো হয়েছে। সংঘর্ষ, পুলিশ হত্যা ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা দেখে স্তব্ধ হয়েছেন তারা বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বিএনপির সহিংসতা ও ভাঙচুরের দীর্ঘ ইতিহাস আছে এবং আবারও তার পুনরাবৃত্তি করছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দেশে অবস্থানরত কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় আমরা হতবাক। তবে অতীতে বিএনপি-জামায়াতের ভয়ঙ্কর সহিংস ঘটনা দেখে আমরা বিস্মিত নই। তারা খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে যে সহিংসতা হয়েছে, তা বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে আমরা তুলে ধরেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার নাম নিয়ে অপজিশন পার্টি বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে। আমরা সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কী হয়েছে। প্রেসিসেন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজনকে নিয়ে কী কী করা হয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছি।
মোমেন বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমরা আশা করেছিলাম বিএনপি-জামায়াত বদলাবে, কিন্তু তারা বদলায়নি। ২৮ অক্টোবর যা ঘটেছে তাতে আমরা মর্মাহত। তবে অতীতে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকায়, আমরা এতটা বিস্মিত হইনি।
এসময় বিএনপিকে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানান ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। সহিংসতা করে সরকার পতনের যে চেষ্টা, এটা অলীক।
এরপর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কি না জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকে আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইইউ, জাতিসংঘ, ওআইসি, বিমসটেকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও উপস্থিত আছেন।