Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৮ অক্টোবর কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছি না: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছে না বিএনপি বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, দেশবাসীর প্রতি, সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান- দেশকে রক্ষা করতে হলে, জাতিকে রক্ষা করতে হলে, সংকটগুলো দূর করতে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সরকার প্রতি পদে পদে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে সমস্ত কর্মসূচি বাধাগ্রাস্ত করার চেষ্টা করেছে।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের নিজস্ব অধিকার আদায় করার জন্য, আপনারা যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, মুক্ত সমাজে বাস করতে পারেন, ন্যূনতম অধিকার পান সেই ধরনের রাষ্ট্র আমরা চাই। সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির পক্ষে থেকে আহ্বান আসুন ২৮ অক্টোবর সমাবেশে যোগ দিন। সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে, মানুষের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে….বিদায় নেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক দফা দাবি আদায়ে শনিবারের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সরকারের পক্ষ থেকে বাড়াবাড়ি করলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। কোনো ধরনের উসকানিতে পা দেবে না বিএনপি।

ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের সব সমস্যার মূলে নির্বাচন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আর সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। কেবলমাত্র সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আর এসব দাবি আদায়ে শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই মহাসমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে।

ফখরুল বলেন, এক দফা দাবি আদায়ের ইতোমধ্যে আমরা অনেক সভা-সমাবেশ করেছি শান্তিপূর্ণভাবে। সরকারের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ এই সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। পাড়া মহল্লা, জেলা, উপজেলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার আদালত ব্যবহার করে তড়িৎ গতিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা নিষ্পত্তি করছে। নেতারা নির্বাচনে যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সেজন্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করবে।

সমগ্র জাতি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এবারের নির্বাচন ১৮ আর ১৪ সালের মতো হবে না। জনগণ তা মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, সরকার চায় না অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। এ কারণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। তবে সরকার অতীতের মতো আর সে সুযোগ পাবে না। সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। সরকার নির্বাচনকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে বারবার ক্ষমতায় টিকে থাকছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরে পুরো রাষ্ট্রকাঠামো দলীয়করণ করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। গত দুটি নির্বাচন প্রহসনে পরিণত করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। সরকার ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের সকল সংকট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। জনগণের সরকার গঠন না হলে দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকট নিরসন সম্ভব হবে না।

এ জন্য বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়ে এক দফার দাবি তুলে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। সরকার প্রতি পদে পদে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে বাধা দিয়ে এসেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মহাসমাবেশের উদ্দেশ্য সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশন বলছে, পরিবেশ নেই। এরপরও নির্বাচন করার কথা বলছে…। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকার প্রয়োজন। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে যায় না। অথচ সরকার চায় একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় যেতে।

ফখরুল অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বললেও প্রতিদিন সরকারের দমন-নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করছে। বিরোধীদলের নেতারা যাতে নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য সাজা দিচ্ছে। সরকারের দমননীতি চালিয়ে জোর করে নির্বাচনের চেষ্টা, হাস্যকর প্রহসন-তামাশা ছাড়া কিছু নয়।

দেশের মানুষ নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বহু নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে গ্রেফতার চালাচ্ছে। সরকারের সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো ইচ্ছে নেই। আবারও একতরফা নির্বাচনের জন্য সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এবার আর সেটা সম্ভব হবে না।

২৮ তারিখের মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনও অনুমতি মেলেনি, আশা করছি সরকার বাধা দেবে না। এ সময় জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার রক্ষায় সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে ‘না’ বলে দিতে সারাদেশের সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অত্যাচার-নিপীড়নের পর জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এখনও আশা করছি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বিএনপির আহ্বান, সবাই এগিয়ে আসুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। ন্যূনতম মজুরির জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। সরকার সেটাও দমাতে চাইছে। সরকার যদি কোনো বাড়াবাড়ি করে তাহলে তার পরিণতি কিছু হলে, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। সরকার লাঠি নিয়ে সমাবেশে আসার কথা বলছে, অর্থাৎ সরকার উস্কানি দিচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশি চিকিৎসকরা সফলভাবে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। তিনি সিসিইউতে আছেন। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম

২৮ অক্টোবর কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছি না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছে না বিএনপি বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, দেশবাসীর প্রতি, সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান- দেশকে রক্ষা করতে হলে, জাতিকে রক্ষা করতে হলে, সংকটগুলো দূর করতে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সরকার প্রতি পদে পদে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে সমস্ত কর্মসূচি বাধাগ্রাস্ত করার চেষ্টা করেছে।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের নিজস্ব অধিকার আদায় করার জন্য, আপনারা যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, মুক্ত সমাজে বাস করতে পারেন, ন্যূনতম অধিকার পান সেই ধরনের রাষ্ট্র আমরা চাই। সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির পক্ষে থেকে আহ্বান আসুন ২৮ অক্টোবর সমাবেশে যোগ দিন। সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে, মানুষের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে….বিদায় নেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক দফা দাবি আদায়ে শনিবারের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সরকারের পক্ষ থেকে বাড়াবাড়ি করলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। কোনো ধরনের উসকানিতে পা দেবে না বিএনপি।

ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের সব সমস্যার মূলে নির্বাচন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আর সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। কেবলমাত্র সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আর এসব দাবি আদায়ে শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই মহাসমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে।

ফখরুল বলেন, এক দফা দাবি আদায়ের ইতোমধ্যে আমরা অনেক সভা-সমাবেশ করেছি শান্তিপূর্ণভাবে। সরকারের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ এই সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। পাড়া মহল্লা, জেলা, উপজেলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার আদালত ব্যবহার করে তড়িৎ গতিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা নিষ্পত্তি করছে। নেতারা নির্বাচনে যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সেজন্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করবে।

সমগ্র জাতি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এবারের নির্বাচন ১৮ আর ১৪ সালের মতো হবে না। জনগণ তা মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, সরকার চায় না অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। এ কারণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। তবে সরকার অতীতের মতো আর সে সুযোগ পাবে না। সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। সরকার নির্বাচনকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে বারবার ক্ষমতায় টিকে থাকছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরে পুরো রাষ্ট্রকাঠামো দলীয়করণ করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। গত দুটি নির্বাচন প্রহসনে পরিণত করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। সরকার ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের সকল সংকট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। জনগণের সরকার গঠন না হলে দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকট নিরসন সম্ভব হবে না।

এ জন্য বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়ে এক দফার দাবি তুলে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। সরকার প্রতি পদে পদে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে বাধা দিয়ে এসেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মহাসমাবেশের উদ্দেশ্য সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশন বলছে, পরিবেশ নেই। এরপরও নির্বাচন করার কথা বলছে…। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকার প্রয়োজন। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে যায় না। অথচ সরকার চায় একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় যেতে।

ফখরুল অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বললেও প্রতিদিন সরকারের দমন-নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করছে। বিরোধীদলের নেতারা যাতে নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য সাজা দিচ্ছে। সরকারের দমননীতি চালিয়ে জোর করে নির্বাচনের চেষ্টা, হাস্যকর প্রহসন-তামাশা ছাড়া কিছু নয়।

দেশের মানুষ নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বহু নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে গ্রেফতার চালাচ্ছে। সরকারের সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো ইচ্ছে নেই। আবারও একতরফা নির্বাচনের জন্য সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এবার আর সেটা সম্ভব হবে না।

২৮ তারিখের মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনও অনুমতি মেলেনি, আশা করছি সরকার বাধা দেবে না। এ সময় জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার রক্ষায় সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে ‘না’ বলে দিতে সারাদেশের সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অত্যাচার-নিপীড়নের পর জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এখনও আশা করছি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বিএনপির আহ্বান, সবাই এগিয়ে আসুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। ন্যূনতম মজুরির জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। সরকার সেটাও দমাতে চাইছে। সরকার যদি কোনো বাড়াবাড়ি করে তাহলে তার পরিণতি কিছু হলে, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। সরকার লাঠি নিয়ে সমাবেশে আসার কথা বলছে, অর্থাৎ সরকার উস্কানি দিচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশি চিকিৎসকরা সফলভাবে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। তিনি সিসিইউতে আছেন। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।