Dhaka শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ : সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠান ভিশন ট্রেডিংয়ের নামে ভুয়া ঋণ অনুমোদন করিয়ে ২৫ কোটি টাকা আত্মসােেতর অভিযোগে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, ইউসিবি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি আরিফ কাদরী, ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সবুর, ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, হাজী আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, মো. জোনাইদ শফিক, অপরূপ চৌধুরী ও তৌহিদ সিপার রফিকুজ্জামান, ইউসিবি ব্যাংকের পোর্ট শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ,শাখার সাবেক শাখা প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক ক্রেডিট অফিসার জিয়াউল করিম খান, সাবেক এফএভিপি ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, সাবেক এফএভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মীর মেসবাহ উদ্দীন হোসাইন, আরামিট পিএলসির প্রটোকল অফিসার ও ভিশন ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ফরমান উল্লাহ চৌধুরী, আরামিট পিএলসির কর্মী ও মডেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম, আরামিট পিএলসির এজিএম ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আব্দুল আজিজ, আরামিটের এজিএম ও ক্লাসিক ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আলফা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী কাজী মোহাম্মদ দিলদার আলম, আরামিটের কর্মচারী মেহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, মো. ইয়াছিনুর রহমান, কর্মচারী মো. ইউছুফ চৌধুরী ও মো. সাইফুল ইসলাম।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) পোর্ট শাখা থেকে ভিশন ট্রেডিং নামীয় একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ২৫ কোটি টাকার ভুয়া ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভিশন ট্রেডিংয়ের হিসাব খোলেন ব্যাংকটির ওই শাখার সিনিয়র অফিসার মো. আকরামউল্লাহ এবং শাখা প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) আবদুল হামিদ চৌধুরী। যারা কোনো প্রকার যাচাই না করেই অ্যাকাউন্ট চালু করেন।

পরে প্রতিষ্ঠানটির ২৫ কোটি টাকার ঋণের আবেদনের প্রেক্ষিতে শাখার ক্রেডিট কমিটি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ঋণের সুপারিশ করে। এই সুপারিশ ইউসিবির করপোরেট অফিসের করপোরেট ব্যাংকিং ডিভিশনে প্রেরণ করা হয়। করপোরেট ব্যাংকিং ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের সমন্বয়ে গঠিত প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটি প্রস্তাবটির সঙ্গে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ যুক্ত করে পরিচালনা পর্ষদের কাছে উপস্থাপন করে। এরপরও ইউসিবি পিএলসি-এর ৪৪৮তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

আরও জানা যায়, ভিশন ট্রেডিং নামে এই প্রতিষ্ঠানটির কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই এবং এটি ছিল আরামিট গ্রুপভুক্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরীর একজন কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে তৈরি করা একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান। ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ঋণ অনুমোদনের পর অর্থটি স্থানান্তর করা হয় আলফা ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মতো কয়েকটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, যেগুলো সবই সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কর্মচারীদের নামে খোলা। এভাবে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই ঘটনায় দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের একাধিক ধারায় অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অস্তিত্বহীন ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং ও মডেল ট্রেডিংয়ের নামে ২০ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে তা আত্মসােেতর অভিযোগ আনা হয়েছে। ঋণর ওই টাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছ থেকে আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের নেওয়া ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে তার আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির রয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ কিনেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যার মধ্যে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই তার ৩৬০টি বাড়ি।

এর পরপরই দুদক অনুসন্ধানে নামে। ইতোমধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী রুকমীলার নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে-৯টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত।

এছাড়া গত ৫ মার্চ অপর এক আদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দেয় আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে বলে জানা গেছে। অপর আদেশে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইফুজ্জামানের ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দেরও আদেশ দেয় আদালত। আর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। যদিও বিভিন্ন সূত্র বলছে তারা অনেক আগেই দেশত্যাগ করেছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ : সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠান ভিশন ট্রেডিংয়ের নামে ভুয়া ঋণ অনুমোদন করিয়ে ২৫ কোটি টাকা আত্মসােেতর অভিযোগে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, ইউসিবি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি আরিফ কাদরী, ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সবুর, ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, হাজী আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, মো. জোনাইদ শফিক, অপরূপ চৌধুরী ও তৌহিদ সিপার রফিকুজ্জামান, ইউসিবি ব্যাংকের পোর্ট শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ,শাখার সাবেক শাখা প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক ক্রেডিট অফিসার জিয়াউল করিম খান, সাবেক এফএভিপি ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, সাবেক এফএভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মীর মেসবাহ উদ্দীন হোসাইন, আরামিট পিএলসির প্রটোকল অফিসার ও ভিশন ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ফরমান উল্লাহ চৌধুরী, আরামিট পিএলসির কর্মী ও মডেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম, আরামিট পিএলসির এজিএম ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আব্দুল আজিজ, আরামিটের এজিএম ও ক্লাসিক ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আলফা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী কাজী মোহাম্মদ দিলদার আলম, আরামিটের কর্মচারী মেহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, মো. ইয়াছিনুর রহমান, কর্মচারী মো. ইউছুফ চৌধুরী ও মো. সাইফুল ইসলাম।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) পোর্ট শাখা থেকে ভিশন ট্রেডিং নামীয় একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ২৫ কোটি টাকার ভুয়া ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভিশন ট্রেডিংয়ের হিসাব খোলেন ব্যাংকটির ওই শাখার সিনিয়র অফিসার মো. আকরামউল্লাহ এবং শাখা প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) আবদুল হামিদ চৌধুরী। যারা কোনো প্রকার যাচাই না করেই অ্যাকাউন্ট চালু করেন।

পরে প্রতিষ্ঠানটির ২৫ কোটি টাকার ঋণের আবেদনের প্রেক্ষিতে শাখার ক্রেডিট কমিটি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ঋণের সুপারিশ করে। এই সুপারিশ ইউসিবির করপোরেট অফিসের করপোরেট ব্যাংকিং ডিভিশনে প্রেরণ করা হয়। করপোরেট ব্যাংকিং ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের সমন্বয়ে গঠিত প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটি প্রস্তাবটির সঙ্গে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ যুক্ত করে পরিচালনা পর্ষদের কাছে উপস্থাপন করে। এরপরও ইউসিবি পিএলসি-এর ৪৪৮তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

আরও জানা যায়, ভিশন ট্রেডিং নামে এই প্রতিষ্ঠানটির কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই এবং এটি ছিল আরামিট গ্রুপভুক্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরীর একজন কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে তৈরি করা একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান। ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ঋণ অনুমোদনের পর অর্থটি স্থানান্তর করা হয় আলফা ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মতো কয়েকটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, যেগুলো সবই সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কর্মচারীদের নামে খোলা। এভাবে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই ঘটনায় দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের একাধিক ধারায় অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অস্তিত্বহীন ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং ও মডেল ট্রেডিংয়ের নামে ২০ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে তা আত্মসােেতর অভিযোগ আনা হয়েছে। ঋণর ওই টাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছ থেকে আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের নেওয়া ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে তার আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির রয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ কিনেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যার মধ্যে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই তার ৩৬০টি বাড়ি।

এর পরপরই দুদক অনুসন্ধানে নামে। ইতোমধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী রুকমীলার নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে-৯টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত।

এছাড়া গত ৫ মার্চ অপর এক আদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দেয় আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে বলে জানা গেছে। অপর আদেশে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইফুজ্জামানের ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দেরও আদেশ দেয় আদালত। আর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। যদিও বিভিন্ন সূত্র বলছে তারা অনেক আগেই দেশত্যাগ করেছেন।