Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের সিরিজ জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪
  • ২৩২ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অ্যাডাম জ্যাম্পার ফুল টস ডেলিভারি মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারলেন বাবর আজম। বলের গন্তব্য সীমানায় নিশ্চিত হতেই দুই হাত ছড়িয়ে দিলেন তিনি। তাকে আলিঙ্গনে সিক্ত করলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। মাঠ ছাড়ার সময় রিজওয়ানকে কোলেই তুলে নিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাকিস্তানের সব ক্রিকেটারের চোখে-মুখ তখন যেন আনন্দের সীমা নেই!

দীর্ঘ ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান যে ঘটিয়েছে পাকিস্তান। পার্থ স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ১৪০ রানে গুটিয়ে ১৩৯ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে তারা।

আনন্দ-উল্লাসে সিরিজজুড়ে গ্যালারি মাতিয়ে রাখা প্রবাসী সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি বাবর-রিজওয়ানরা। পুরস্কার বিতরণী পর্ব শুরুর আগে দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন তারা।

অস্ট্রেলিয়ার মাঠে এর আগে সবশেষ ২০০২ সালে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল তারা। সেবার প্রথম ম্যাচ হারের পর শোয়েব আখতারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পরের দুই ম্যাচ জিতেছিল তারা। দুই দশকের বেশি সময় পর এবার শোয়েবের ভূমিকায় যেন হারিস রউফ। তিনিও শেষ দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে দলের সিরিজ জয়ের নায়ক।

সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে ম্যাথু শর্ট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে রউফই জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন পাকিস্তানের গতিময় পেসার।

দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর দিনে আরও একবার পাকিস্তানের জয়ের মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছেন চার পেসার। রউফের ২ উইকেটের পাশাপাশি নাসিম শাহ ও আফ্রিদি নেন ৩টি করে উইকেট। আরেক পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনের শিকার ১টি। পঞ্চম বোলার ব্যবহারই করতে হয়নি রিজওয়ানকে।

ঘরের মাঠে আরও একবার অতিথি পেসারদের তোপে পোড়ে ৩১.৫ ওভারে মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরে ১৩৯ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান। এর আগে দ্বিতীয় ম্যাচে তারা জিতেছিল ১৪১ বল বাকি রেখে।

১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ওপেনার সাইম আইয়ুব করেন ৪২ রান। আব্দুল্লাহ শফিকের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। অন্যদিকে বাবর আজম অপরাজিত থাকেন ২৮ রানে। আর অধিনায়ক রিজওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। তাতেই ২৬.৫ ওভারে ৮ উইকেটের জয়ে ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাবরা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের চার পেসারের তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারায় অসিরা। ওপেনার ম্যাথিউ শটের ২২ আর তিনে নামা অ্যারন হার্ডির ১২ রান ছাড়া বাকিদের টপঅর্ডারদের বাকিরা ২ অংকে ছুঁতে পারেনি।

অষ্টম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পাকে সঙ্গে ৩০ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১০০ পার করেন শন অ্যাবট। ২২ বলে ১৩ রান করে জাম্পা আউট হন নাসিমের বলে। নবম উইকেটে স্পেন্সার জনসনকে নিয়ে ২২ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার প্রাথমিক মান বাঁচান অ্যাবট। ৪১ বলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ডানহাতি অসি ব্যাটার। স্পেন্সার আউট হন ১২ রানে। শেষ পর্যন্ত ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা।

পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয় সফরকারীরা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হলেও অস্ট্রেলিয়া পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায়। অভিজ্ঞ তারকা স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক খেলেননি ম্যাচটিতে। ফলে জশ ইংলিসের নেতৃত্বে নামা স্বাগতিক শিবিরে অভিজ্ঞদের অভাব ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে। উল্লেখযোগ্য রান (৩০) পেয়েছেন কেবল আট নম্বর ব্যাটিংয়ে নামা শন অ্যাবট। এর মাঝে আবার কুপার কনলি মাঠ ছাড়েন হাতে চোট নিয়ে, এরপর আর ফেরা হয়নি তার।

ওপেনার ম্যাথু শর্ট করেন ২২ রান। তবে শুরু থেকেই তাকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। নাসিম শাহের বলে জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (৭) ও জশ ইংলিস (৭) এবং শাহিন আফ্রিদি ফেরান অ্যারন হার্ডিকে (১২)। দলীয় ৭২ রানে শর্ট হারিস রউফের বলে আউট হওয়ার পর বিদায়ের মিছিল বড় হতে শুরু করে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (০) ও মার্কাস স্টয়নিসরা (৮) দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি। ফলে ৩১.৫ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারায় ১৪০ রানে। পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাহিন-নাসিম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের সিরিজ জয়

প্রকাশের সময় : ০৫:০৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অ্যাডাম জ্যাম্পার ফুল টস ডেলিভারি মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারলেন বাবর আজম। বলের গন্তব্য সীমানায় নিশ্চিত হতেই দুই হাত ছড়িয়ে দিলেন তিনি। তাকে আলিঙ্গনে সিক্ত করলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। মাঠ ছাড়ার সময় রিজওয়ানকে কোলেই তুলে নিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাকিস্তানের সব ক্রিকেটারের চোখে-মুখ তখন যেন আনন্দের সীমা নেই!

দীর্ঘ ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান যে ঘটিয়েছে পাকিস্তান। পার্থ স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ১৪০ রানে গুটিয়ে ১৩৯ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে তারা।

আনন্দ-উল্লাসে সিরিজজুড়ে গ্যালারি মাতিয়ে রাখা প্রবাসী সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি বাবর-রিজওয়ানরা। পুরস্কার বিতরণী পর্ব শুরুর আগে দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন তারা।

অস্ট্রেলিয়ার মাঠে এর আগে সবশেষ ২০০২ সালে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল তারা। সেবার প্রথম ম্যাচ হারের পর শোয়েব আখতারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পরের দুই ম্যাচ জিতেছিল তারা। দুই দশকের বেশি সময় পর এবার শোয়েবের ভূমিকায় যেন হারিস রউফ। তিনিও শেষ দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে দলের সিরিজ জয়ের নায়ক।

সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে ম্যাথু শর্ট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে রউফই জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন পাকিস্তানের গতিময় পেসার।

দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর দিনে আরও একবার পাকিস্তানের জয়ের মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছেন চার পেসার। রউফের ২ উইকেটের পাশাপাশি নাসিম শাহ ও আফ্রিদি নেন ৩টি করে উইকেট। আরেক পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনের শিকার ১টি। পঞ্চম বোলার ব্যবহারই করতে হয়নি রিজওয়ানকে।

ঘরের মাঠে আরও একবার অতিথি পেসারদের তোপে পোড়ে ৩১.৫ ওভারে মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরে ১৩৯ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান। এর আগে দ্বিতীয় ম্যাচে তারা জিতেছিল ১৪১ বল বাকি রেখে।

১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ওপেনার সাইম আইয়ুব করেন ৪২ রান। আব্দুল্লাহ শফিকের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। অন্যদিকে বাবর আজম অপরাজিত থাকেন ২৮ রানে। আর অধিনায়ক রিজওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। তাতেই ২৬.৫ ওভারে ৮ উইকেটের জয়ে ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাবরা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের চার পেসারের তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারায় অসিরা। ওপেনার ম্যাথিউ শটের ২২ আর তিনে নামা অ্যারন হার্ডির ১২ রান ছাড়া বাকিদের টপঅর্ডারদের বাকিরা ২ অংকে ছুঁতে পারেনি।

অষ্টম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পাকে সঙ্গে ৩০ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১০০ পার করেন শন অ্যাবট। ২২ বলে ১৩ রান করে জাম্পা আউট হন নাসিমের বলে। নবম উইকেটে স্পেন্সার জনসনকে নিয়ে ২২ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার প্রাথমিক মান বাঁচান অ্যাবট। ৪১ বলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ডানহাতি অসি ব্যাটার। স্পেন্সার আউট হন ১২ রানে। শেষ পর্যন্ত ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা।

পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয় সফরকারীরা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হলেও অস্ট্রেলিয়া পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায়। অভিজ্ঞ তারকা স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক খেলেননি ম্যাচটিতে। ফলে জশ ইংলিসের নেতৃত্বে নামা স্বাগতিক শিবিরে অভিজ্ঞদের অভাব ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে। উল্লেখযোগ্য রান (৩০) পেয়েছেন কেবল আট নম্বর ব্যাটিংয়ে নামা শন অ্যাবট। এর মাঝে আবার কুপার কনলি মাঠ ছাড়েন হাতে চোট নিয়ে, এরপর আর ফেরা হয়নি তার।

ওপেনার ম্যাথু শর্ট করেন ২২ রান। তবে শুরু থেকেই তাকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। নাসিম শাহের বলে জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (৭) ও জশ ইংলিস (৭) এবং শাহিন আফ্রিদি ফেরান অ্যারন হার্ডিকে (১২)। দলীয় ৭২ রানে শর্ট হারিস রউফের বলে আউট হওয়ার পর বিদায়ের মিছিল বড় হতে শুরু করে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (০) ও মার্কাস স্টয়নিসরা (৮) দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি। ফলে ৩১.৫ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারায় ১৪০ রানে। পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাহিন-নাসিম।