Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের চাপ পড়েছে : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমান ইসির ওপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের চাপ পড়েছে। তাই কমিশনের দায়িত্ব বেড়েছে।

রোববার (১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, আস্থার সংকটই নির্বাচনের আসল সংকট। সেটি যেন তৈরি না হয়, সেজন্য দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে যে দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর বিতর্কের চাপ বর্তমান কমিশনের ওপর পড়েছে। এজন্য এই কমিশনের দায়িত্ব অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আমরা আগামীতে যে নির্বাচন করতে যাব সেখানে যেন আস্থার সংকট না থাকে। আমরা যারা নির্বাচন পরিচালনা করব, নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আপনারা যারা আছেন আরপিও অনুযায়ী দায়িত্বটা ভালোভাবে নেবেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো প্রশ্নের উদ্রেক হলে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেবেন। দায়িত্বটা কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। ইসি থেকেও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব কে কোথায় কী দায়িত্ব পালন করছেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনের বিতর্কের চাপ আমাদের ওপর এসে পড়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব বেশি। আমরা আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে ইসি। আমরা আগামীতে যে নির্বাচন করতে যাচ্ছি এই নির্বাচনের বিশেষ দিক হচ্ছে অভিযোগের মাত্রা অতিরিক্ত। নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা- বিতর্ক থাকতে পারে। অতীতে, এমনকি ব্রিটিশ আমলেও নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত দুই নির্বাচন নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এগুলো সত্য হতে পারে, অসত্যও হতে পারে। সেটা আমরা বলছি না। তবে ক্রেডিবিলিটি বলে একটা শব্দ আছে। ডেমোক্রেসিতে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আমরা যে নির্বাচনটা করব সেটার যেন ক্রেডিবিলিটি থাকে।

সিইসি বলেন, আস্থার সংকটই নির্বাচনের আসল সংকট। সেটা যেন তৈরি না হয়, সেজন্য দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাজারে যে চাউর হয়ে গেছে সরকারের ওপর আস্থা নেই, নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা নেই। আমরা এই চ্যালেঞ্জটা নিতে চাই। আমাদের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেটা স্বচ্ছ হবে। সেটা মিডিয়া ও অবজারভারদের মাধ্যমে আমরা দেখাব।

হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র। প্রজাতন্ত্র অর্থ প্রজারা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে শাসন করে। এই জিনিসটা একটু মাথায় রাখবেন। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক হতে পারে। অতীতেও যে হয়নি তা নয়। অতীতেও হয়েছে।

পোলিং এজেন্টদের বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ আছে। অনেকে আবার না দিয়েও অভিযোগ করেন। কাজেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে প্রতিটি দল থেকে এজেন্টে দিয়েছেন কি না। এজেন্ট শক্তিশালী হলে কারচুপি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।

জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচন পরিচালনা হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ হতে হবে। তা না হলে দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তাবে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেবেন এবং জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করবেন তারা যেন এসে ভোট দিয়ে যায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয় রোববার থেকে। এদিন চারটি ব্যাচে একশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) প্রতিটি ব্যাচকে দুই দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে ইসি।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীরসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের চাপ পড়েছে : সিইসি

প্রকাশের সময় : ১২:৩৬:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমান ইসির ওপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের চাপ পড়েছে। তাই কমিশনের দায়িত্ব বেড়েছে।

রোববার (১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, আস্থার সংকটই নির্বাচনের আসল সংকট। সেটি যেন তৈরি না হয়, সেজন্য দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে যে দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর বিতর্কের চাপ বর্তমান কমিশনের ওপর পড়েছে। এজন্য এই কমিশনের দায়িত্ব অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আমরা আগামীতে যে নির্বাচন করতে যাব সেখানে যেন আস্থার সংকট না থাকে। আমরা যারা নির্বাচন পরিচালনা করব, নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আপনারা যারা আছেন আরপিও অনুযায়ী দায়িত্বটা ভালোভাবে নেবেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো প্রশ্নের উদ্রেক হলে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেবেন। দায়িত্বটা কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। ইসি থেকেও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব কে কোথায় কী দায়িত্ব পালন করছেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনের বিতর্কের চাপ আমাদের ওপর এসে পড়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব বেশি। আমরা আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে ইসি। আমরা আগামীতে যে নির্বাচন করতে যাচ্ছি এই নির্বাচনের বিশেষ দিক হচ্ছে অভিযোগের মাত্রা অতিরিক্ত। নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা- বিতর্ক থাকতে পারে। অতীতে, এমনকি ব্রিটিশ আমলেও নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত দুই নির্বাচন নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এগুলো সত্য হতে পারে, অসত্যও হতে পারে। সেটা আমরা বলছি না। তবে ক্রেডিবিলিটি বলে একটা শব্দ আছে। ডেমোক্রেসিতে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আমরা যে নির্বাচনটা করব সেটার যেন ক্রেডিবিলিটি থাকে।

সিইসি বলেন, আস্থার সংকটই নির্বাচনের আসল সংকট। সেটা যেন তৈরি না হয়, সেজন্য দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাজারে যে চাউর হয়ে গেছে সরকারের ওপর আস্থা নেই, নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা নেই। আমরা এই চ্যালেঞ্জটা নিতে চাই। আমাদের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেটা স্বচ্ছ হবে। সেটা মিডিয়া ও অবজারভারদের মাধ্যমে আমরা দেখাব।

হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র। প্রজাতন্ত্র অর্থ প্রজারা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে শাসন করে। এই জিনিসটা একটু মাথায় রাখবেন। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক হতে পারে। অতীতেও যে হয়নি তা নয়। অতীতেও হয়েছে।

পোলিং এজেন্টদের বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ আছে। অনেকে আবার না দিয়েও অভিযোগ করেন। কাজেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে প্রতিটি দল থেকে এজেন্টে দিয়েছেন কি না। এজেন্ট শক্তিশালী হলে কারচুপি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।

জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচন পরিচালনা হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ হতে হবে। তা না হলে দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তাবে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেবেন এবং জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করবেন তারা যেন এসে ভোট দিয়ে যায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয় রোববার থেকে। এদিন চারটি ব্যাচে একশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) প্রতিটি ব্যাচকে দুই দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে ইসি।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীরসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।