নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি :
১১ প্রকল্প উদ্বোধন করতে দীর্ঘ ১৯ বছর পর নরসিংদী পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে একটি জনসভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
রোববার (১২ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নরসিংদীতে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। এর মধ্যে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা অন্যতম।
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব এই সারকারখানা উদ্বোধন উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রকাশিত সার কারখানা স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করবেন শেখ হাসিনা।
এরপর বিকেল ৩টার দিকে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। জনসভা শেষে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর নরসিংদী সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো জেলা। এসএসএফ, র্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নরসিংদীতে অবস্থান করছেন। স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা, পলাশের ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার খারখানা এলাকায় নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ পথগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে।
এদিকে নরসিংদীর পলাশে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক উৎপাদন। জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এই কারখানায় বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। দিনে উৎপাদন হবে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের অক্টোবরে কারখানার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হলে প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। পরে একই বছরের ১৬ আগস্ট পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু হয়। যার দায়িত্ব পায় চীনের সিসি সেভেন এবং জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এরপর ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
১১০ একর জমির ওপর নির্মিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা আর জাপান ও চীনের ঠিকাদারদের যৌথ কনসোর্টিয়াম ব্যাংক অব টোকিও-মিৎসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড ও দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকার ঋণ দেয়।
দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউরিয়া সারের চাহিদা মোটানো ও সুলভমূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত, আমদানি হ্রাস করে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে এই কারখানা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।