নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে দেশে এসেছে ২২৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
প্রতি বছরই ঈদ ঘিরে বাড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এবারও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি বেড়েছে। চলতি (মার্চ) মাসের ১৯ দিনে প্রবাসীরা ২২৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকার বেশি। এই ১৯ দিনের হিসাবে প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ১২ কোটি ডলার বা এক হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মার্চ মাসের ১৯ দিনে গত বছরের একই সময়ে তুলনায় ৭৮ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়েছে। গত বছর মার্চ মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১২৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এ ছাড়া চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত দুই হাজার ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার এসেছে; যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৬৩৪ কোটি মার্কিন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশ থেকে অর্থপাচার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি কারবারির দৌরাত্ম্যও। অন্য দিকে, খোলা বাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে আরও বেশি বেড়েছে রেমিট্যান্স আসার গতি।
গত বছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে প্রবাসী আয়ের গতি। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ (প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স আসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ফেব্রুয়ারিতে (প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার)।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে এসেছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার।
এর আগে দেশের ইতিহাসে একক কোনো মাসে গত ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা আট মাস রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলো।
অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার আর ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। গত ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স প্রবাহ সেই রেকর্ড ভেঙে ফেলে। এটি আগের বছরের ডিসেম্বরে চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস ছাড়া বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।