Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় ১১৯ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চলতি মাসের (নভেম্বর) প্রথম ১৭ দিনে প্রায় ১১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। প্রতিদিন গড়ে আসছে প্রায় ৭ কোটি (৬.৯৮ কোটি) ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এভাবে রেমিট্যান্স আসার ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দুই বিলিয়ন বা ২০৯ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে সবশেষ গত আগস্টে ২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল রেমিট্যান্স।

রোববার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি মাস নভেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে ১১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০৭ কোটি ৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ লাখ ডলার। এসময়ের মধ্যে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে।

রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২২ টাকার বেশি দর দেওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে আসার পর পরই জরুরি বৈঠকে বসে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা।

বুধবার (৮ নভেম্বর) যৌথ বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠন দুটি। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগের ফলে হুন্ডির দাপট কমছে, বাড়ছে বৈধ পথে প্রবাসী আয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে বাংলাদেশে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বরে প্রতিদিন প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ৬ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার। আগের বছরের নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা প্রতিদিন দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রায় ৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের অক্টোবরে প্রবাসীরা প্রতিদিন বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রায় ৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার মার্কিন ডলার।

সে হিসাবে নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রণোদনা বৃদ্ধিসহ নানা রকম উদ্যোগের ফলে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাড়ছে।

সেপ্টেম্বর মাসে গত ৪৪ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় দেশে আসে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঘোষিত ২ টাকা ৫০ পয়সা প্রণোদনার পাশাপাশি প্রবাসী আয় সংগ্রহকারী ব্যাংকগুলো আরও ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে – এমন অনুমতি দেয়। এ ছাড়াও প্রবাসী আয়ের ডলার সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও বেশি দামে কেনারও অনুমতি দেয়। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় আসার পর অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয়ে বেড়ে যায়। যা নভেম্বর মাসেও অব্যাহত রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় ১১৯ কোটি ডলার

প্রকাশের সময় : ১০:২৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চলতি মাসের (নভেম্বর) প্রথম ১৭ দিনে প্রায় ১১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। প্রতিদিন গড়ে আসছে প্রায় ৭ কোটি (৬.৯৮ কোটি) ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এভাবে রেমিট্যান্স আসার ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দুই বিলিয়ন বা ২০৯ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে সবশেষ গত আগস্টে ২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল রেমিট্যান্স।

রোববার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি মাস নভেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে ১১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০৭ কোটি ৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ লাখ ডলার। এসময়ের মধ্যে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে।

রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২২ টাকার বেশি দর দেওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে আসার পর পরই জরুরি বৈঠকে বসে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা।

বুধবার (৮ নভেম্বর) যৌথ বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠন দুটি। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগের ফলে হুন্ডির দাপট কমছে, বাড়ছে বৈধ পথে প্রবাসী আয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে বাংলাদেশে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বরে প্রতিদিন প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ৬ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার। আগের বছরের নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা প্রতিদিন দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রায় ৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের অক্টোবরে প্রবাসীরা প্রতিদিন বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রায় ৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার মার্কিন ডলার।

সে হিসাবে নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রণোদনা বৃদ্ধিসহ নানা রকম উদ্যোগের ফলে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাড়ছে।

সেপ্টেম্বর মাসে গত ৪৪ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় দেশে আসে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঘোষিত ২ টাকা ৫০ পয়সা প্রণোদনার পাশাপাশি প্রবাসী আয় সংগ্রহকারী ব্যাংকগুলো আরও ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে – এমন অনুমতি দেয়। এ ছাড়াও প্রবাসী আয়ের ডলার সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও বেশি দামে কেনারও অনুমতি দেয়। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় আসার পর অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয়ে বেড়ে যায়। যা নভেম্বর মাসেও অব্যাহত রয়েছে।