Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে ছাত্র-জনতার রক্তের স্বীকৃতি দিতে হবে : হাসানাত আবদুল্লাহ

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা চাই আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার রক্তের স্বীকৃতি দিক, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে খুনি হাসিনার বিচারের সুস্পট একটি বার্তা দিক। যে কারনে ছাত্র জনতা রাস্তায় নেমে ছিলো পরিবর্তিত বাংলাদেশ গঠনে একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তাদের স্বীকৃতির মাধ্যমে সেই আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটুক।

সোমবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণ এবং ‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণা’- এ জন-আকাঙ্ক্ষা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত দেড় দশক ধরে খুনি হাসিনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে। আমাদের দেশটাকে নেতৃত্ব শূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের আগের যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব রয়েছে তাদের বিভাজনের কারণে তারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা যেখানে ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক সেই জায়গাতেই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছে। শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে লিডার শিপের যে হাল আমরা ধরে ছিলাম পরবর্তি বাংলাদেশ পূর্নগঠনে নেতৃত্বের হাল আরো শক্ত করে ধরতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সময়ে বলে সিন্ডিকেট এক হাত বদলে আরেক হাতে গিয়েছে। আমরা আপনাদের বলতে চাই সিন্ডিকেট বদলে যদি এক হাত থেকে আরেক হাতে যায় এটা বলার জন্য আপনি সরকার হন নাই। বরং এই সিন্ডিকেটগুলো ভাঙার জন্য আপনাকে বসানো হয়েছে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের পূর্ব প্রজন্মের যারা নেতৃত্বে রয়েছেন তারা বিভাজনের রাজনীতির কারণে বছরের পর বছর ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা যে জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন ঠিক সেই জায়গাটিতে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছিল। এই নেতৃত্বের যে হাল আমরা ধরেছিলাম পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আমাদের এই নেতৃত্বের হাল আমাদেরকে শক্তভাবে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, ৮ আগস্ট সরকার গঠন করার পর জানুয়ারির আজ ২০২৫ সালের ৬ তারিখ। এখনো পর্যন্ত কিন্তু আমরা দৃশ্যমান একটি বিচারও দেখি নাই। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একটা বিচারও হয়নি। ২০১৪ সালের শাপলা হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ -এ নির্বাচনে যেভাবে কারচুপি করা হয়েছে সেগুলির এখন পর্যন্ত কোনো বিচার করা হয়নি।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চান অবশ্যই অবশ্যই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমাদের এই বিচারগুলো নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন এখনো পর্যন্ত অনেকে আমাদের বিপ্লবকে মেনে নিতে পারে নাই। সে জন্য কিছুদিন পর পর আমরা দেখি বিচার বিভাগে ক্যু করা হয়, আমরা দেখি পুলিশে ক্যু করা হয়, আমরা দেখি আনসারে বিদ্রোহ হয়, আমরা দেখি সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আমরা সবাইকে বলতে চাই আপনারা রিয়েলিটি মাইনে নেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা একটা দীর্ঘ সময় ধরে বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে বেড়ে উঠেছি। আমাদের বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে রেখে আমরা জাতীয় ঐক্যে কখনো পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের পূর্বের যারা রাজনীতিবিদ রয়েছেন আমরা আপনাদের আহ্বান জানাবো আপনাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আপনাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সেগুলোকে আমরা তরুণ প্রজন্ম সম্মান জানাই। একই সঙ্গে আপনাদের আহ্বান জানাবো এই তরুণ প্রজন্মের যে আত্মবিশ্বাস, এ তরুণ প্রজন্মের যে অকুতোভয়, এই ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করার জন্য তাদের যে প্রত্যয় আপনাদের প্রজ্ঞার সাথে তাদের প্রত্যয়ের সম্মিলন ঘটাতে না পারেন, তাহলে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা ব্যর্থ হবো।

তিনি বলেন, আমরা আপনাদের আহ্বান জানাবো এই তরুণ প্রজন্মকে আপনারা স্বীকৃতি দিন। আপনারা যদি এই তরুণ প্রজন্মের ক্রোধকে, অকুতোভয় আত্মবিশ্বাসকে সম্মান না জানান, তাহলে ২৪ পরবর্তী যে বাংলাদেশ হয়েছে তা সুখকর হবে না।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, অতীতে ঢাকার মসনদে কে বসবে সেটি নির্ধারিত হতো দিল্লি থেকে। আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে আমরা দেখেছি নির্বাচনের আগে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে দিল্লিমুখী হতো। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে ঢাকার ক্ষমতায় কে বসবে সেটি দিল্লি থেকে নির্ধারিত হবে না।

তিনি বলেন, এই দেশ থেকে খুনি শেখ হাসিনার মতো সিন্ডিকেটের উৎখাত চাই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো দ্রুততম সময়ের মধ্যে কঠোর হস্তে এই সিন্ডিকেট ও বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করুন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুযারির মধ্যে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার আপনাদের রক্তের স্বীকৃতি দিক। এই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার খুনি হাসিনার বিচারের একটি স্পষ্ট বার্তা দিক। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভুলেশনে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটুক। সমাবেশে স্থানীয়দের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাহলে অবশ্যই এই বিচারগুলিকে সম্পন্ন করতে হবে। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখি নানা বিদ্রোহ করা হয়, সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আপনাদেরকে বলি- আপনারা রিয়েলিটি মাইনা নেন। ছাত্রসমাজ জেগে আছে যতদিন, ততদিন এই খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ঢাকার মসনদে কে বসবে সেটি আগে দিল্লি থেকে নির্ধারণ করা হতো। এখন আর দিল্লী নয়, এদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম, নাবিলা তানিয়া, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ, সমন্বয়ক রিফাত রশীদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলার নেতা আবরার নাদিম ইতু, সোহেল রানা প্রমুখ।

এর আগে ছাত্র সমাবেশ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে যোগ দেয়।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৫ জানুয়ারির মধ্যে ছাত্র-জনতার রক্তের স্বীকৃতি দিতে হবে : হাসানাত আবদুল্লাহ

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৮:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা চাই আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার রক্তের স্বীকৃতি দিক, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে খুনি হাসিনার বিচারের সুস্পট একটি বার্তা দিক। যে কারনে ছাত্র জনতা রাস্তায় নেমে ছিলো পরিবর্তিত বাংলাদেশ গঠনে একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তাদের স্বীকৃতির মাধ্যমে সেই আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটুক।

সোমবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণ এবং ‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণা’- এ জন-আকাঙ্ক্ষা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত দেড় দশক ধরে খুনি হাসিনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে। আমাদের দেশটাকে নেতৃত্ব শূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের আগের যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব রয়েছে তাদের বিভাজনের কারণে তারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা যেখানে ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক সেই জায়গাতেই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছে। শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে লিডার শিপের যে হাল আমরা ধরে ছিলাম পরবর্তি বাংলাদেশ পূর্নগঠনে নেতৃত্বের হাল আরো শক্ত করে ধরতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সময়ে বলে সিন্ডিকেট এক হাত বদলে আরেক হাতে গিয়েছে। আমরা আপনাদের বলতে চাই সিন্ডিকেট বদলে যদি এক হাত থেকে আরেক হাতে যায় এটা বলার জন্য আপনি সরকার হন নাই। বরং এই সিন্ডিকেটগুলো ভাঙার জন্য আপনাকে বসানো হয়েছে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের পূর্ব প্রজন্মের যারা নেতৃত্বে রয়েছেন তারা বিভাজনের রাজনীতির কারণে বছরের পর বছর ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা যে জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন ঠিক সেই জায়গাটিতে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছিল। এই নেতৃত্বের যে হাল আমরা ধরেছিলাম পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আমাদের এই নেতৃত্বের হাল আমাদেরকে শক্তভাবে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, ৮ আগস্ট সরকার গঠন করার পর জানুয়ারির আজ ২০২৫ সালের ৬ তারিখ। এখনো পর্যন্ত কিন্তু আমরা দৃশ্যমান একটি বিচারও দেখি নাই। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একটা বিচারও হয়নি। ২০১৪ সালের শাপলা হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ -এ নির্বাচনে যেভাবে কারচুপি করা হয়েছে সেগুলির এখন পর্যন্ত কোনো বিচার করা হয়নি।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চান অবশ্যই অবশ্যই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমাদের এই বিচারগুলো নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন এখনো পর্যন্ত অনেকে আমাদের বিপ্লবকে মেনে নিতে পারে নাই। সে জন্য কিছুদিন পর পর আমরা দেখি বিচার বিভাগে ক্যু করা হয়, আমরা দেখি পুলিশে ক্যু করা হয়, আমরা দেখি আনসারে বিদ্রোহ হয়, আমরা দেখি সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আমরা সবাইকে বলতে চাই আপনারা রিয়েলিটি মাইনে নেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা একটা দীর্ঘ সময় ধরে বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে বেড়ে উঠেছি। আমাদের বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে রেখে আমরা জাতীয় ঐক্যে কখনো পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের পূর্বের যারা রাজনীতিবিদ রয়েছেন আমরা আপনাদের আহ্বান জানাবো আপনাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আপনাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সেগুলোকে আমরা তরুণ প্রজন্ম সম্মান জানাই। একই সঙ্গে আপনাদের আহ্বান জানাবো এই তরুণ প্রজন্মের যে আত্মবিশ্বাস, এ তরুণ প্রজন্মের যে অকুতোভয়, এই ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করার জন্য তাদের যে প্রত্যয় আপনাদের প্রজ্ঞার সাথে তাদের প্রত্যয়ের সম্মিলন ঘটাতে না পারেন, তাহলে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা ব্যর্থ হবো।

তিনি বলেন, আমরা আপনাদের আহ্বান জানাবো এই তরুণ প্রজন্মকে আপনারা স্বীকৃতি দিন। আপনারা যদি এই তরুণ প্রজন্মের ক্রোধকে, অকুতোভয় আত্মবিশ্বাসকে সম্মান না জানান, তাহলে ২৪ পরবর্তী যে বাংলাদেশ হয়েছে তা সুখকর হবে না।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, অতীতে ঢাকার মসনদে কে বসবে সেটি নির্ধারিত হতো দিল্লি থেকে। আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে আমরা দেখেছি নির্বাচনের আগে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে দিল্লিমুখী হতো। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে ঢাকার ক্ষমতায় কে বসবে সেটি দিল্লি থেকে নির্ধারিত হবে না।

তিনি বলেন, এই দেশ থেকে খুনি শেখ হাসিনার মতো সিন্ডিকেটের উৎখাত চাই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো দ্রুততম সময়ের মধ্যে কঠোর হস্তে এই সিন্ডিকেট ও বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করুন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুযারির মধ্যে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার আপনাদের রক্তের স্বীকৃতি দিক। এই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার খুনি হাসিনার বিচারের একটি স্পষ্ট বার্তা দিক। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভুলেশনে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটুক। সমাবেশে স্থানীয়দের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাহলে অবশ্যই এই বিচারগুলিকে সম্পন্ন করতে হবে। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখি নানা বিদ্রোহ করা হয়, সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আপনাদেরকে বলি- আপনারা রিয়েলিটি মাইনা নেন। ছাত্রসমাজ জেগে আছে যতদিন, ততদিন এই খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ঢাকার মসনদে কে বসবে সেটি আগে দিল্লি থেকে নির্ধারণ করা হতো। এখন আর দিল্লী নয়, এদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম, নাবিলা তানিয়া, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ, সমন্বয়ক রিফাত রশীদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলার নেতা আবরার নাদিম ইতু, সোহেল রানা প্রমুখ।

এর আগে ছাত্র সমাবেশ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে যোগ দেয়।