টাঙ্গাইল-নাগরপুর-ধুবুরিয়া-সলিমাবাদ-আরিচা মহাসড়কে ১১টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। এরমধ্যে ১১টি বেইলি ব্রিজে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ নিয়ে চলতি বছরে টেংরিপাড়া ও তিরছা এলাকায় দুইটি সেতুতে ৯ বার দুর্ঘটনা ঘটলো। টেংরি পাড়া ব্রিজ ৭ বার এবং তিরছা ব্রিজে ২ বার। ফলে চলাচলকারী সাধারণ জনগণ ও চালকদেরকে পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
জানা যায়, উপজেলার বেকড়া ইউনিয়নে ভালকুটিয়া গ্রামের নোয়াই নদী শাখা খালের উপর তিরছা বেইলি ব্রিজে একটি সরিষা ভর্তি ট্রাক পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙ্গে আটকে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সকল যান চলাচল। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দু’পাড়ের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য।
সড়কটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ধলেশ্বরী সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক ব্যবহার বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ফলে টাঙ্গাইল থেকে আরিচা ও পাটুরিয়াঘাট যেতে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনার দিন শেষ হয়। একই সঙ্গে ঢাকার নবীনগর, ধামরাই, মানিকগঞ্জ হয়ে দীর্ঘপথ যাত্রার সমাপ্তি হয়। এতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মালবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস এই সড়ক ব্যবহার করে টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে। এছাড়াও পদ্মার ওপারের রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, নড়াইলসহ কয়েকটি জেলায় চলাচলের পথ সুগম হয়। অপরদিকে প্রতিদিন কয়েকশ’ সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ক্ষুদ্র যানবাহনগুলো টাঙ্গাইল-আরিচা-পাটুরিয়া এলাকায় চলাচল করছে।
এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেইলী সেতুর অবস্থা নাজুক হওয়ায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। সেতুটিতে স্টিলের পাটাতন ক্ষয়ে গেছে। ফলে মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন প্রায়ই চাকা পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ভারী যানবাহন উঠলে রীতিমতো কেঁপে ওঠে পুরো সেতু। এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল নিষেধ হলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিদিন কয়েকশ ভারি যান চলাচল করছে। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর কয়েকবার রিপেয়ারিং করা হয়েছে কিন্তু কাজের মান ভালো না হওয়ায় কয়েকদিন পরই এই বেইলি ব্রিজে দুর্ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদুজ্জামান বাংলাভিশনকে বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিউল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।