নিজস্ব প্রতিবেদক :
১০ মার্চের মধ্যে সারাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ।
বুধবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের সাথে মন্ত্রণালয়ের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিদায়ী উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
বুধবার (৫ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে বিদায় এবং সিআর আবরারের যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন বই পৌঁছানোর কথা থাকলেও, এখনও অনেক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানো যায়নি। তবে, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে যাবে। বই ছাপাতে দেরির পাশাপাশি ডিস্ট্রিবিউশনের সমস্যার কারণেই এখনও নতুন বই পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বই ছাপার ক্ষেত্রে প্রকৃত চাহিদার চেয়েও অনেক বাড়তি দেখানো হয়। বাড়তি চাহিদা অনুযায়ী বই ছাপাতে সমস্ত লেনদেন দেখানো হয়।
এই উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন দাবিতে দেশের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অস্থিরতা ছিল। পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে, সেটি বলা যাবে না। তবে কিছুটা অবস্থানে এসেছে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, অত্যন্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল কলেজে অস্থির অবস্থা ছিলো। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সেখান থেকে বর্তমানে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিদায়ী এ উপদেষ্টা বলেন, সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার ছিলো কারিকুলাম। বর্তমানে যে কারিকুলাম আছে সেটিতে দুই-তিন বছর স্থির থাকা ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, এই কারিকুলাম যুগোপযোগী করা প্রয়োজন।
এমপিওভুক্ত (বেসরকারি) শিক্ষকদের জন্য সুখবর দিয়ে তিনি বলেন, আমি সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিলাম যে, সাধ্যমত এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটে যতটুকু অর্থ সংকুলন করা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমরা যতদূর পারি চেষ্টা করব দাবিগুলো মেটাতে।
উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু, ১৫/২০ বছরের বঞ্চনা ১/২ বছরের বাজেট দিয়ে তো মেটানো যায় না। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজকেই বেসরকারি বেতন সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে- এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কীভাবে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তাদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা- এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারবো, এখানেও আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াবো। আমি জানি সেটুকু বাজেটের মধ্যে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রভিশন রাখা হচ্ছে।
শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটা তহবিল তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে বিদায়ী উপদেষ্টা বলেন, এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও রাখা হবে। তবে পুরো ফান্ডটাকে টেকসই করতে হলে ১/২ বাজেটে হবে না, ভবিষ্যতে ৩/৪ বাজেটে আশা করি এটার সমাধান হয়ে যাবে। অবসর এবং কল্যাণ ফান্ডে টাকা এমন একটা ব্যাংকে ইচ্ছা করে রাখা হয়েছিল যে, ব্যাংকটাকে আর টাকা পয়সা নাই। কিছু ফান্ড এমনিতেই চলে গেছে অন্য জায়গায়।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ভাতা এবং অবসর ভাতা- এটা হল তাদের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। কিন্তু তারা তো সংঘবদ্ধ না। তারা রাস্তাতেও কোনোদিন নামেনি। কিন্তু আমি তো মনে করেছিলাম তাদের ওই দাবিটাই সবচেয়ে আগে মেটানো উচিত।