Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ বছরে বরিশালে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি: খোকন সেরনিয়াবাত

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বরিশাল সিটি কপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, বিগত ১০ বছরে বরিশালে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে, বরিশাল সিটি কপোরেশনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এটা পুনর্গঠন করা আমাদের দায়িত্ব। সিটি কপোরেশনে সচিব, সিও, ম্যাজিষ্ট্রেট নেই। এখানে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের অভাব ছিল, যার কারণে বরিশাল অগ্রসর হতে পারেনি। তাই নতুনভাবে বরিশালকে গড়ে তুলতে হবে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়কের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) তার নেতৃত্বাধীন পঞ্চম পরিষদ বর্ণিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিসিসির দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এ উপলক্ষে তিনি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

আবুল খায়ের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা বড় কঠিন। গত মেয়াদে এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি। দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রধানমন্ত্রী ৭৯৭ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ বরিশালবাসীকে উপহার দিয়েছেন। এর মাধ্যমে নগরের রাস্তাঘাট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা সংকটের উন্নয়ন ঘটানো হবে। বরিশালকে একটি শিল্পবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই হবে আমার অঙ্গীকার।

তিনি বরিশাল মেডিকেল ও সদর হাসপাতালের কথা তুলে ধরে বলেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে নতুন ভবনসহ বিদ্যমান সব সমস্যার সামাধান করা হবে। এখানে রোগীদের চিকিৎসার সুবিধা বলতে কিছু নেই। ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি আমাকে ব্যথিত করেছে। এভাবে একটি বড় হাসপাতাল চলতে পারে না। এটি তার আওতাভুক্ত না হলেও নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তিনি এর উন্নয়নেও নজর দেবেন।

বরিশালের দুটি বাস টার্মিনালের অবস্থা খুবই বেহাল বলে মতবিনিময় সভায় মত দেন নবনির্বাচিত মেয়র। যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। দ্রুত এ দুটি টার্মিনালের উন্নয়নে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক। গত পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডে এর ইমেজ সংকট সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বরিশালের এই অবস্থা। এ থেকে উত্তরণের জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। নতুন বরিশাল গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমি বরিশালের মানুষকে সম্মানিত করব।

সভায় আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বলেন, এত দিন নগর ভবন যাঁদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, তাঁদের কোয়ালিটি সাব-স্ট্যান্ডার্ড। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা যে নতুন যাত্রা শুরু করব, তাতে প্রধান নির্বাহী পদে কোনো কর্মকর্তা এখানে যোগদান করতে চাইছেন না। কেন চান না, আমি সেটা চার মাস ধরে জানার চেষ্টা করেছি। যাঁদেরই বলি, তাঁরাই অভিযোগ করেন, এখানে গেলে ইজ্জত থাকে না, সম্মানহানি হয়। একজন সচিব কয়েক দিন আগে যোগদান করে আবার বদলি হয়ে যেতে চেয়েছেন। আমি অনেক অনুরোধ করে তাঁকে রেখেছি। তিনিও ছুটিতে আছেন।

করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করে নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, এত দিন যাঁদের দিয়ে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালানো হয়েছে, তাঁদের কোয়ালিটি সাব-স্ট্যান্ডার্ড। আমি এখানে ব্যবসা করতে আসিনি। মানুষকে সেবা দিতে এসেছি। তাই আমি কারও প্রতি অন্যায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কিন্তু কেউ যদি অন্যায় করে, দুর্নীতি করে থাকে, তবে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মেয়র পদে জয়ী হওয়ার পর অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য দেশের বড় বড় শহরের সিটি করপোরেশনের কাজকর্ম, উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড দেখার জন্য সেসব শহরে ঘুরেছেন বলে জানান আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি এসব সিটির উন্নয়ন দেখে আমাদের বরিশাল নগরকে মিলিয়েছি, তখন লজ্জা পেয়েছি। অথচ আমাদের অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা গত ১০ বছরে এই নগরকে কিছুই দিতে পারিনি। আমি এই তিক্ত অভিজ্ঞতা কাটিয়ে উঠতে চাই। নগরবাসী আমাকে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন, আমার একমাত্র কাজ হবে সেসব প্রতিশ্রুতি-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, কাজী মিরাজ মাহমুদ, ফেরদাউস সোহাগ, দৈনিক বরিশালের আজকাল পত্রিকার প্রকাশক শারমিন আক্তারসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা।

আবহাওয়া

সারাদেশের সব পোশাক কারখানা ৫ আগস্ট বন্ধ

১০ বছরে বরিশালে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি: খোকন সেরনিয়াবাত

প্রকাশের সময় : ০৮:২৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বরিশাল সিটি কপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, বিগত ১০ বছরে বরিশালে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে, বরিশাল সিটি কপোরেশনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এটা পুনর্গঠন করা আমাদের দায়িত্ব। সিটি কপোরেশনে সচিব, সিও, ম্যাজিষ্ট্রেট নেই। এখানে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের অভাব ছিল, যার কারণে বরিশাল অগ্রসর হতে পারেনি। তাই নতুনভাবে বরিশালকে গড়ে তুলতে হবে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়কের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) তার নেতৃত্বাধীন পঞ্চম পরিষদ বর্ণিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিসিসির দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এ উপলক্ষে তিনি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

আবুল খায়ের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা বড় কঠিন। গত মেয়াদে এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি। দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রধানমন্ত্রী ৭৯৭ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ বরিশালবাসীকে উপহার দিয়েছেন। এর মাধ্যমে নগরের রাস্তাঘাট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা সংকটের উন্নয়ন ঘটানো হবে। বরিশালকে একটি শিল্পবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই হবে আমার অঙ্গীকার।

তিনি বরিশাল মেডিকেল ও সদর হাসপাতালের কথা তুলে ধরে বলেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে নতুন ভবনসহ বিদ্যমান সব সমস্যার সামাধান করা হবে। এখানে রোগীদের চিকিৎসার সুবিধা বলতে কিছু নেই। ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি আমাকে ব্যথিত করেছে। এভাবে একটি বড় হাসপাতাল চলতে পারে না। এটি তার আওতাভুক্ত না হলেও নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তিনি এর উন্নয়নেও নজর দেবেন।

বরিশালের দুটি বাস টার্মিনালের অবস্থা খুবই বেহাল বলে মতবিনিময় সভায় মত দেন নবনির্বাচিত মেয়র। যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। দ্রুত এ দুটি টার্মিনালের উন্নয়নে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক। গত পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডে এর ইমেজ সংকট সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বরিশালের এই অবস্থা। এ থেকে উত্তরণের জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। নতুন বরিশাল গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমি বরিশালের মানুষকে সম্মানিত করব।

সভায় আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বলেন, এত দিন নগর ভবন যাঁদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, তাঁদের কোয়ালিটি সাব-স্ট্যান্ডার্ড। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা যে নতুন যাত্রা শুরু করব, তাতে প্রধান নির্বাহী পদে কোনো কর্মকর্তা এখানে যোগদান করতে চাইছেন না। কেন চান না, আমি সেটা চার মাস ধরে জানার চেষ্টা করেছি। যাঁদেরই বলি, তাঁরাই অভিযোগ করেন, এখানে গেলে ইজ্জত থাকে না, সম্মানহানি হয়। একজন সচিব কয়েক দিন আগে যোগদান করে আবার বদলি হয়ে যেতে চেয়েছেন। আমি অনেক অনুরোধ করে তাঁকে রেখেছি। তিনিও ছুটিতে আছেন।

করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করে নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, এত দিন যাঁদের দিয়ে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালানো হয়েছে, তাঁদের কোয়ালিটি সাব-স্ট্যান্ডার্ড। আমি এখানে ব্যবসা করতে আসিনি। মানুষকে সেবা দিতে এসেছি। তাই আমি কারও প্রতি অন্যায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কিন্তু কেউ যদি অন্যায় করে, দুর্নীতি করে থাকে, তবে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মেয়র পদে জয়ী হওয়ার পর অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য দেশের বড় বড় শহরের সিটি করপোরেশনের কাজকর্ম, উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড দেখার জন্য সেসব শহরে ঘুরেছেন বলে জানান আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি এসব সিটির উন্নয়ন দেখে আমাদের বরিশাল নগরকে মিলিয়েছি, তখন লজ্জা পেয়েছি। অথচ আমাদের অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা গত ১০ বছরে এই নগরকে কিছুই দিতে পারিনি। আমি এই তিক্ত অভিজ্ঞতা কাটিয়ে উঠতে চাই। নগরবাসী আমাকে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন, আমার একমাত্র কাজ হবে সেসব প্রতিশ্রুতি-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, কাজী মিরাজ মাহমুদ, ফেরদাউস সোহাগ, দৈনিক বরিশালের আজকাল পত্রিকার প্রকাশক শারমিন আক্তারসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা।