বিনোদন ডেস্ক :
না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন সংগীতশিল্পী, নির্মাতা ও সঞ্চালক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন দেশের এই জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে সে লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটল। জুয়েলের মৃত্যুতে শোক নেমেছে দেশের সংগীতাঙ্গনে।
২০১১ সালে জুয়েলের লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ফুসফুস এবং হাড়েও সেটি ক্রমশ সংক্রমিত হয়। দেশ ও বিদেশে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। গত ২৩ জুলাই শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় লাইফসাপোর্টে। শেষ দুদিন অবস্থার উন্নতির কথাই জানাচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে এল দুঃসংবাদ।
জুয়েলের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। তিনি স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।
জুয়েলের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার মেজ ভাই মহিবুর রেজা রুবেল। তিনি বলেন, শেষ কয়েক দিন জুয়েল অনেক যুদ্ধ করেছেন। শেষ পর্যন্ত ফিরে আসলেন না। সবাই তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করবেন।
জুয়েলের জানাজা ও দাফন নিয়ে তিনি জানান, আজ বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে জুয়েলের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যার পর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলেও জানিয়েছেন মহিবুর রেজা রুবেল।
নব্বইয়ের দশকে ব্যান্ড সংগীত যখন তুমুল আলোচনায়, তখন ব্যতিক্রমী কণ্ঠ নিয়ে হাজির হন হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। আইয়ুব বাচ্চুর সুরে প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশ হয় ১৯৯৩ সালে। প্রথম অ্যালবামেই সাড়া ফেলেন জুয়েল।
এরপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘এক বিকেলে (১৯৯৪)’, ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)।
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। ছবি: সংগৃহীতএকটি করে গান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে আরও দুটি অ্যালবাম—‘তাতে কি বা আসে যায়’ (২০১৬) এবং ‘এই সবুজের ধানক্ষেত’ (২০১৬)। ১০টি একক অ্যালবামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি। এটি প্রকাশের পর তাঁর নাম হয়ে যায় ‘এক বিকেলের জুয়েল’। তিনি একই সঙ্গে সংগীতশিল্পী, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।