Dhaka শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হার দিয়ে বছর শেষ হলো বাংলাদেশের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:১০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৯০ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চক্রপূরণ বাংলাদেশ করেছে আগেই। নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ আজ ছিল বাংলাদেশের। বছরের শেষ দিনে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অল্প পুঁজিতেও বাংলাদেশ চোখে চোখ রেখে লড়ছিল কিউইদের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত সিরিজ ভাগাভাগি করেই বছর শেষ করতে হয়েছে বাংলাদেশের।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বড় রানের মাঠেও যে সফরকারীরা মাত্র ১১০ রানের পুঁজি গড়েছিল। তবুও জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন শেখ মেহেদী ও শরীফুল ইসলামরা। তবে শেষদিকে ঝড় তুলে সেই জয় প্রায় ছিনিয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার জিমি নিশাম। যদিও আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছে বৃষ্টি, ডিএলএস মেথডে বে ওভালের মাঠে প্রথমবারের মতো আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছে।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১৪.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৯৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। তখনই তারা ১৭ রানে এগিয়ে ছিল। গ্যালারিতে দর্শকদের মাঝে ছুটোছুটি ফেলে দেওয়া ঝোড়ো বৃষ্টি আর ক্রিকেটারদের মাঠে নামতে দেয়নি। ফলে ১৭ রানে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল নিউজিল্যান্ড।

বাংলাদেশের দেয়া ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই করেছিলেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। তানজিম সাকিবের জায়গায় আজ খেলানো হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামকে। টাইগার স্পিনারের করা প্রথম ওভারেই ১ চার এবং ১ ছয়ে দশ রান নেন অ্যালেন। তবে পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই উইকেটের দেখা পান মেহেদী।

দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই মেহেদীর বলে সেইফার্টকে স্ট্যাম্পিং করে আউট করেন রনি তালুকদার। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তোলা সেইফার্ট আজ বিদায় নেন মাত্র ১ রান করেই। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আরও এক উইকেট তুলে নেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। এবার তার শিকারে পরিণত হন ডেরিল মিচেল।

চতুর্থ ওভারে মেহেদীর বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে শান্তর মুঠোবন্দী হয় মিচেলও ফিরেন ১ রান করেই। এদিকে মেহেদীর জোড়া আঘাতের বল দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে গ্লেন ফিলিপ্সকে বোল্ড করেন পেসার শরিফুল। ফলে ৫ ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড যা পরে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে মার্ক চাপম্যানের রান আউট। মুস্তাফিজুর রহমানের ওভারে দৌড়ে রান নিতে গিয়ে মাঝপথে সংঘর্ষে জড়ান দুই কিউই ব্যাটার। এই সুযোগে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে চ্যাপম্যানকে রান আউট করেন মুস্তাফিজ।

এদিকে একপ্রান্তে কিউই ব্যাতারদের যাওয়া-আসা চলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে জেকে বসেছিলেন ওপেনার ফিন অ্যালেন। টাইগার বোলারদের সামলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। তবে নবম ওভারে তাকে ফেরান শরিফুল। ৩১ বলে ৩৮ রান করে টাইগার পেসারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন অ্যালেন।

তবে এরপর স্বাগতিকদের হয়ে হাল ধরেন স্যান্তনার এবং নিশাম। এ দুজন মিলে পরে গড়েছেন ৪৬ রানের এক জুটি। ফলে চাপ সামলে জয়ের পথে এগোয় নিউজিল্যান্ড। তবে ১৪.৪ ওভারের খেলা হতেই নামে বৃষ্টি। ফলে বন্ধ হয় খেলা। জয়ের জন্য তখন ৫ উইকেট হাতে রেখে ৩২ বলে কিউইদের প্রয়োজন ১৬ রান, নিশাম ও স্যান্টনার অপরাজিত ছিলেন যথাক্রমে ২৮ এবং ১৮ রানে।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটে নামে টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই টিম সাউদিকে দারুন একটা চার মারেন সৌম্য। তবে পরের বলেই আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোরের ফাঁদে কাটা পড়েন তিনি।
সৌম্য আউট হবার পরে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন শান্ত। নেমেই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন অধিনায়ক। খেলছিলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে হয়েছেন আউট।

মিলনেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে জোরের ওপর খেলতে গিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ক্যাচ তুলে দেন পয়েন্টে। ১৫ বলে ১৭ রান করে থামেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি উইকেট। ৪ দশমিক ২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৩১।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে উইকেট খুইয়েছেন রনিও। হৃদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে রিভিউ না নিয়েই সাজঘরের দিকে হাঁটা দেন রনি। তবে রিভিউ নিলে আউটই হতেন না তিনি! রিভিউতে দেখা গেছে লেগ স্টাম্প মিস করে যেত রনিকে আউট দেয়া বলটি!

নবম ওভারে পাঁচে নামা আফিফ কাঁটা পড়েন স্যান্টনারে। ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ইনসাইড-এজে প্যাডে লেগে ক্যাচ উঠে যায়। লুফে নেন কিউই উইকেটরক্ষক টিম সাইফার্ট। ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা।

আফিফের পরে হৃদয়ও ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। তবে প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নেন অধিনায়ক স্যান্টনার, সফল হন তিনি। হৃদয়কে ফেরান ব্যক্তিগত ১৬ রানে। ১১ ওভার শেষে ৬৮ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ।

মাঝে একবার জীবন পান শামীম পাটোয়ারি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলে ডাইভ দেন সেইফার্ট। তবে ধরতে পারেননি এই কিউই উইকেটরক্ষক। এদিকে উইকেটে এসে মাত্র ৪ রানেই আউট হয়ে যান শেখ মেহেদি। স্যান্টনারের তৃতীয় শিকারে ফেরেন তিনি।

হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল স্যান্টনারের সামনে। ১১তম ওভারের শেষ বলে ফিরিয়েছিলেন হৃদয়কে। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই ফেরান মেহেদিকে। কিন্তু পারেননি পরের বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করতে। তবে তিন বল পর ঠিকই তুলে নিয়েছেন শামীমের উইকেট। এই ওভারে দুই উইকেট নেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। রান তখন ৮১।

এই রানের সাথে আর ৬ রান যোগ হতে না হতেই আউট হন পেসার শরিফুল। ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৮ উইকেট। তখনও ওভার বাকি চারটি। শঙ্কা জাগে শতরানের আগেই অলআউট হয়ে যাওয়ার।

তবে শতরান পেরিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা। ৯৫ যখন বাংলাদেশের রান তখনই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন দশ নম্বর ব্যাটার তানভীর ইসলাম। পরের বলে সিংগেল নিয়ে পূরণ করেন শতরানের কোটা। ওই ওভারে আসে ৯ রান।

১৯তম ওভারে আউট হয়ে যান তানভীর। ব্যক্তিগত ৮ রান করেন তিনি। বাকি থাকে আর এক উইকেট। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন মিলনে। তার দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে যান ১০ রান করা রিশাদ। চার বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশের রানের চাঁকা আটকে যায় ১১০-এ।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেছেন স্যান্টনার। চার ওভারে খরচ করেছেন মোটে ১৬ রান। বাকি দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন বেন সিয়ার্স, টিম সাউদি আর এডাম মিলনে।

মার্চে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে ২০ ওভার ক্রিকেটের বছর শুরু করে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। জুলাইয়ে আফগানদের সিলেটে ধবলধোলাই করে সাকিবের দল। এরপর হাংঝুতে এশিয়ান গেমসে সাইফ হাসানের নেতৃত্বে মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানকে হারায় আফিফ-ইয়াসির আলীরা।

কিউইদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বছরটা শেষ হচ্ছে তাসমান সাগরপাড়ে। ৫ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ে শুরুর পর ২য় ম্যাচটা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যাওয়ার পর শেষ ম্যাচের এই হারে ১৩ ম্যাচে ১০ জয় নিয়ে বছর শেষ করলো টিম টাইগার্স। ২০২৪ বিশ্বকাপের আগে যা বড় অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে লাল সবুজের বাংলাদেশের জন্য।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হার দিয়ে বছর শেষ হলো বাংলাদেশের

প্রকাশের সময় : ১২:১০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চক্রপূরণ বাংলাদেশ করেছে আগেই। নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ আজ ছিল বাংলাদেশের। বছরের শেষ দিনে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অল্প পুঁজিতেও বাংলাদেশ চোখে চোখ রেখে লড়ছিল কিউইদের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত সিরিজ ভাগাভাগি করেই বছর শেষ করতে হয়েছে বাংলাদেশের।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বড় রানের মাঠেও যে সফরকারীরা মাত্র ১১০ রানের পুঁজি গড়েছিল। তবুও জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন শেখ মেহেদী ও শরীফুল ইসলামরা। তবে শেষদিকে ঝড় তুলে সেই জয় প্রায় ছিনিয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার জিমি নিশাম। যদিও আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছে বৃষ্টি, ডিএলএস মেথডে বে ওভালের মাঠে প্রথমবারের মতো আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছে।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১৪.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৯৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। তখনই তারা ১৭ রানে এগিয়ে ছিল। গ্যালারিতে দর্শকদের মাঝে ছুটোছুটি ফেলে দেওয়া ঝোড়ো বৃষ্টি আর ক্রিকেটারদের মাঠে নামতে দেয়নি। ফলে ১৭ রানে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল নিউজিল্যান্ড।

বাংলাদেশের দেয়া ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই করেছিলেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। তানজিম সাকিবের জায়গায় আজ খেলানো হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামকে। টাইগার স্পিনারের করা প্রথম ওভারেই ১ চার এবং ১ ছয়ে দশ রান নেন অ্যালেন। তবে পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই উইকেটের দেখা পান মেহেদী।

দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই মেহেদীর বলে সেইফার্টকে স্ট্যাম্পিং করে আউট করেন রনি তালুকদার। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তোলা সেইফার্ট আজ বিদায় নেন মাত্র ১ রান করেই। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আরও এক উইকেট তুলে নেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। এবার তার শিকারে পরিণত হন ডেরিল মিচেল।

চতুর্থ ওভারে মেহেদীর বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে শান্তর মুঠোবন্দী হয় মিচেলও ফিরেন ১ রান করেই। এদিকে মেহেদীর জোড়া আঘাতের বল দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে গ্লেন ফিলিপ্সকে বোল্ড করেন পেসার শরিফুল। ফলে ৫ ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড যা পরে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে মার্ক চাপম্যানের রান আউট। মুস্তাফিজুর রহমানের ওভারে দৌড়ে রান নিতে গিয়ে মাঝপথে সংঘর্ষে জড়ান দুই কিউই ব্যাটার। এই সুযোগে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে চ্যাপম্যানকে রান আউট করেন মুস্তাফিজ।

এদিকে একপ্রান্তে কিউই ব্যাতারদের যাওয়া-আসা চলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে জেকে বসেছিলেন ওপেনার ফিন অ্যালেন। টাইগার বোলারদের সামলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। তবে নবম ওভারে তাকে ফেরান শরিফুল। ৩১ বলে ৩৮ রান করে টাইগার পেসারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন অ্যালেন।

তবে এরপর স্বাগতিকদের হয়ে হাল ধরেন স্যান্তনার এবং নিশাম। এ দুজন মিলে পরে গড়েছেন ৪৬ রানের এক জুটি। ফলে চাপ সামলে জয়ের পথে এগোয় নিউজিল্যান্ড। তবে ১৪.৪ ওভারের খেলা হতেই নামে বৃষ্টি। ফলে বন্ধ হয় খেলা। জয়ের জন্য তখন ৫ উইকেট হাতে রেখে ৩২ বলে কিউইদের প্রয়োজন ১৬ রান, নিশাম ও স্যান্টনার অপরাজিত ছিলেন যথাক্রমে ২৮ এবং ১৮ রানে।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটে নামে টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই টিম সাউদিকে দারুন একটা চার মারেন সৌম্য। তবে পরের বলেই আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোরের ফাঁদে কাটা পড়েন তিনি।
সৌম্য আউট হবার পরে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন শান্ত। নেমেই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন অধিনায়ক। খেলছিলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে হয়েছেন আউট।

মিলনেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে জোরের ওপর খেলতে গিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ক্যাচ তুলে দেন পয়েন্টে। ১৫ বলে ১৭ রান করে থামেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি উইকেট। ৪ দশমিক ২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৩১।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে উইকেট খুইয়েছেন রনিও। হৃদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে রিভিউ না নিয়েই সাজঘরের দিকে হাঁটা দেন রনি। তবে রিভিউ নিলে আউটই হতেন না তিনি! রিভিউতে দেখা গেছে লেগ স্টাম্প মিস করে যেত রনিকে আউট দেয়া বলটি!

নবম ওভারে পাঁচে নামা আফিফ কাঁটা পড়েন স্যান্টনারে। ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ইনসাইড-এজে প্যাডে লেগে ক্যাচ উঠে যায়। লুফে নেন কিউই উইকেটরক্ষক টিম সাইফার্ট। ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা।

আফিফের পরে হৃদয়ও ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। তবে প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নেন অধিনায়ক স্যান্টনার, সফল হন তিনি। হৃদয়কে ফেরান ব্যক্তিগত ১৬ রানে। ১১ ওভার শেষে ৬৮ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ।

মাঝে একবার জীবন পান শামীম পাটোয়ারি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলে ডাইভ দেন সেইফার্ট। তবে ধরতে পারেননি এই কিউই উইকেটরক্ষক। এদিকে উইকেটে এসে মাত্র ৪ রানেই আউট হয়ে যান শেখ মেহেদি। স্যান্টনারের তৃতীয় শিকারে ফেরেন তিনি।

হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল স্যান্টনারের সামনে। ১১তম ওভারের শেষ বলে ফিরিয়েছিলেন হৃদয়কে। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই ফেরান মেহেদিকে। কিন্তু পারেননি পরের বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করতে। তবে তিন বল পর ঠিকই তুলে নিয়েছেন শামীমের উইকেট। এই ওভারে দুই উইকেট নেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। রান তখন ৮১।

এই রানের সাথে আর ৬ রান যোগ হতে না হতেই আউট হন পেসার শরিফুল। ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৮ উইকেট। তখনও ওভার বাকি চারটি। শঙ্কা জাগে শতরানের আগেই অলআউট হয়ে যাওয়ার।

তবে শতরান পেরিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা। ৯৫ যখন বাংলাদেশের রান তখনই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন দশ নম্বর ব্যাটার তানভীর ইসলাম। পরের বলে সিংগেল নিয়ে পূরণ করেন শতরানের কোটা। ওই ওভারে আসে ৯ রান।

১৯তম ওভারে আউট হয়ে যান তানভীর। ব্যক্তিগত ৮ রান করেন তিনি। বাকি থাকে আর এক উইকেট। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন মিলনে। তার দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে যান ১০ রান করা রিশাদ। চার বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশের রানের চাঁকা আটকে যায় ১১০-এ।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেছেন স্যান্টনার। চার ওভারে খরচ করেছেন মোটে ১৬ রান। বাকি দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন বেন সিয়ার্স, টিম সাউদি আর এডাম মিলনে।

মার্চে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে ২০ ওভার ক্রিকেটের বছর শুরু করে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। জুলাইয়ে আফগানদের সিলেটে ধবলধোলাই করে সাকিবের দল। এরপর হাংঝুতে এশিয়ান গেমসে সাইফ হাসানের নেতৃত্বে মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানকে হারায় আফিফ-ইয়াসির আলীরা।

কিউইদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বছরটা শেষ হচ্ছে তাসমান সাগরপাড়ে। ৫ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ে শুরুর পর ২য় ম্যাচটা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যাওয়ার পর শেষ ম্যাচের এই হারে ১৩ ম্যাচে ১০ জয় নিয়ে বছর শেষ করলো টিম টাইগার্স। ২০২৪ বিশ্বকাপের আগে যা বড় অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে লাল সবুজের বাংলাদেশের জন্য।