Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইহুদিবিদ্বেষ ও একাডেমিক প্লেজারিজমেরঅভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট কৃষ্ণাঙ্গ নারী ক্লডিন গে। তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রেসিডেন্ট। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা পদত্যাগপত্রে ক্লডিন গে লিখেছেন, তিনি পদত্যাগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ফ্যাকাল্টি হিসেবে তিনি তাঁর দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। তিনি তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘যেহেতু আমি এখন ফ্যাকাল্টিতে ফিরে যাচ্ছি তাই আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমরা সকলের জন্য কাঙ্ক্ষিত সম্প্রদায় গড়ে তুলতে সবার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’

মাত্র ৬ মাস আগেই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি এই ইউনিভার্সিটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। তাঁর পরিবার হাইতি থেকে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসে থিতু হয়েছিল।

গত ৫ ডিসেম্বর ক্লডিন গে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে মিলে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে জবানবন্দী দেন। তাদের জবানবন্দীর বিষয় ছিল ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের পর ক্যাম্পাসগুলোতে তাঁরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ কীভাবে মোকাবিলা করেছেন।

পরে ক্লডিন গের পদত্যাগ দাবি করে যৌথ বিবৃতি দেন ৭০ মার্কিন আইনপ্রণেতা। যদিও ক্লডিন গে তাঁর জবানবন্দীর জন্য ক্ষমা চান কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। একই অভিযোগ অর্থাৎ ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ মাথায় নিয়ে এর আগে পদত্যাগ করেন পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট লিজ ম্যাগিল।

শুনানিতে প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, যে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্যাম্পাসে ‘ইহুদিদের গণহত্যার’ ডাক দিয়েছিলেন, তাঁরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না। এই তিনজন শুনানিতে বেশ দীর্ঘ, আইনানুগ এবং আপাতদৃষ্টিতে এড়িয়ে যাওয়ার মতো উত্তর দিয়েছিলেন বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

শুনানিতে রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিক তিন প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইহুদিদের গণহত্যার ডাক দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বা আচরণবিধি লঙ্ঘন কি না। স্টেফানিকের কার্যালয় অনুসারে, এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেননি ম্যাগিল। তারপর আবার উত্তরের জন্য স্টেফানিক চাপ দিলেও ম্যাগিলের কাছ থেকে জবাব হিসেবে কোনো হ্যাঁ কিংবা না শুনতে পাননি তিনি। এরপর স্টেফানিক বলেন, ‘সুতরাং উত্তরটি হ্যাঁ।’ এর জবাবে ম্যাগিল বলেন, এর উত্তর প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করে।

অন্য প্রেসিডেন্টদের কাছ থেকেও অনুরূপ উত্তর শুনে ক্ষেপে যান স্টেফানিক। তিনি রাগে ফেটে পড়ে বলেন, ‘এর উত্তর প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করে না। উত্তরটি হ্যাঁ এবং এ কারণেই আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত।’ হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে তাঁর ক্যাম্পাসে ইহুদিবিরোধী সহিংসতার হুমকির আরও জোরালো নিন্দা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

প্রকাশের সময় : ০১:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইহুদিবিদ্বেষ ও একাডেমিক প্লেজারিজমেরঅভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট কৃষ্ণাঙ্গ নারী ক্লডিন গে। তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রেসিডেন্ট। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা পদত্যাগপত্রে ক্লডিন গে লিখেছেন, তিনি পদত্যাগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ফ্যাকাল্টি হিসেবে তিনি তাঁর দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। তিনি তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘যেহেতু আমি এখন ফ্যাকাল্টিতে ফিরে যাচ্ছি তাই আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমরা সকলের জন্য কাঙ্ক্ষিত সম্প্রদায় গড়ে তুলতে সবার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’

মাত্র ৬ মাস আগেই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি এই ইউনিভার্সিটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। তাঁর পরিবার হাইতি থেকে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসে থিতু হয়েছিল।

গত ৫ ডিসেম্বর ক্লডিন গে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে মিলে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে জবানবন্দী দেন। তাদের জবানবন্দীর বিষয় ছিল ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের পর ক্যাম্পাসগুলোতে তাঁরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ কীভাবে মোকাবিলা করেছেন।

পরে ক্লডিন গের পদত্যাগ দাবি করে যৌথ বিবৃতি দেন ৭০ মার্কিন আইনপ্রণেতা। যদিও ক্লডিন গে তাঁর জবানবন্দীর জন্য ক্ষমা চান কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। একই অভিযোগ অর্থাৎ ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ মাথায় নিয়ে এর আগে পদত্যাগ করেন পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট লিজ ম্যাগিল।

শুনানিতে প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, যে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্যাম্পাসে ‘ইহুদিদের গণহত্যার’ ডাক দিয়েছিলেন, তাঁরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না। এই তিনজন শুনানিতে বেশ দীর্ঘ, আইনানুগ এবং আপাতদৃষ্টিতে এড়িয়ে যাওয়ার মতো উত্তর দিয়েছিলেন বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

শুনানিতে রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিক তিন প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইহুদিদের গণহত্যার ডাক দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বা আচরণবিধি লঙ্ঘন কি না। স্টেফানিকের কার্যালয় অনুসারে, এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেননি ম্যাগিল। তারপর আবার উত্তরের জন্য স্টেফানিক চাপ দিলেও ম্যাগিলের কাছ থেকে জবাব হিসেবে কোনো হ্যাঁ কিংবা না শুনতে পাননি তিনি। এরপর স্টেফানিক বলেন, ‘সুতরাং উত্তরটি হ্যাঁ।’ এর জবাবে ম্যাগিল বলেন, এর উত্তর প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করে।

অন্য প্রেসিডেন্টদের কাছ থেকেও অনুরূপ উত্তর শুনে ক্ষেপে যান স্টেফানিক। তিনি রাগে ফেটে পড়ে বলেন, ‘এর উত্তর প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করে না। উত্তরটি হ্যাঁ এবং এ কারণেই আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত।’ হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে তাঁর ক্যাম্পাসে ইহুদিবিরোধী সহিংসতার হুমকির আরও জোরালো নিন্দা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন।