Dhaka শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাদি হত্যাকাণ্ডে ফয়সালের স্ত্রীসহ ৩ জন ফের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ফয়সাল করিমের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু ও বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদেরকে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর তাদের প্রথম দফায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছিল। একইসঙ্গে রিমান্ড শেষে রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিন রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ ৫টি কারণ বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ডের কারণসমূহে উল্লেখ করা হয়— হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডে অর্থদাতাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার ও এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার।

এ ছাড়া অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন—ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তার শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ভারতে পালাতে সহযোগিতাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। শরিফ ওসমান হাদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব হতেই ঢাকা-৮ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পলাতক কেন্দ্রীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ২৪-এর ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের পর হতে প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনা, নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা, গান পাউডার দিয়ে আগুন সন্ত্রাস, দেশি ও বিদেশি অস্ত্র গোলাবারুদের জোগানদান, অনলাইন গুজব রটনা ও ভীতি প্রদর্শন করছেন।

এর মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা, জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি তৈরি করা সর্বোপরি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাধা প্রদান ও আগ্রহী প্রার্থীদের মনোবলে আঘাত হানার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এজাহারে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন হাদি। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সিংহভাগ চট্টগ্রামের ওপর নির্ভরশীল : গভর্নর

হাদি হত্যাকাণ্ডে ফয়সালের স্ত্রীসহ ৩ জন ফের রিমান্ডে

প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ফয়সাল করিমের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু ও বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদেরকে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর তাদের প্রথম দফায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছিল। একইসঙ্গে রিমান্ড শেষে রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিন রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ ৫টি কারণ বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ডের কারণসমূহে উল্লেখ করা হয়— হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডে অর্থদাতাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার ও এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার।

এ ছাড়া অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন—ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তার শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ভারতে পালাতে সহযোগিতাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। শরিফ ওসমান হাদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব হতেই ঢাকা-৮ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পলাতক কেন্দ্রীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ২৪-এর ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের পর হতে প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনা, নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা, গান পাউডার দিয়ে আগুন সন্ত্রাস, দেশি ও বিদেশি অস্ত্র গোলাবারুদের জোগানদান, অনলাইন গুজব রটনা ও ভীতি প্রদর্শন করছেন।

এর মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা, জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি তৈরি করা সর্বোপরি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাধা প্রদান ও আগ্রহী প্রার্থীদের মনোবলে আঘাত হানার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এজাহারে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন হাদি। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার মৃত্যু হয়।