Dhaka মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাওয়াইয়ে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মাউই কাউন্টিতে গত কয়েকদিনের দাবানলে কীভাবে সবশেষ হয়ে গেছে তা নিজের চোখেই দেখতে হয়েছে বাসিন্দাদের। এক এক করে ২ হাজারেরও বেশি বাড়ি-ঘর পুড়ে ছাই। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত পুড়ে মারা গেছেন অন্তত ৮৯ জন। ধ্বংসাবশেষে চলছে নিখোঁজদের সন্ধান। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ আছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজ্যে এমন দাবানল আগে কখনও দেখেনি কেউ। বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন বহু মানুষ। অগ্নিকাণ্ড থেকে পালিয়ে অনেকে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

আগুনের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত শহর লাহাইনাসহ মাউই দ্বীপের কিছু অংশে এখনও জ্বলছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দমকল বাহিনী।

কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থা বিভাগের (ফেমা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেরেমি গ্রিনবার্গ বিবিসিকে বলেছেন, অতিরিক্ত সহায়তা পাঠানো হয়েছে দুর্যোগকবলিত এলাকায়। শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল কাজ করে যাচ্ছে।

লাহাইনায় ধ্বংসস্তূপে মৃতদেহ শনাক্ত করতে প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মৃতদেহের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দাবানল তাণ্ডব কমে এলে শনিবার এখানকার প্রধান সড়কটি খুলে দেওয়া হলে আবারও বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

শহরটিতে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা ৮০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ বলেন, সব নিয়ে গেছে, সব। এটি বেদনাদায়ক। এগুলো সামলানো কঠিন।

প্রায় ১৩ হাজার মানুষের বসবাস লাহাইনায়। একসময় শহরটির যেসব হোটেল-রেস্টুরেন্ট সারাক্ষণ প্রাণচঞ্চল থাকতো, দাবানলে পুড়ে আজ সেগুলোর অধিকাংশই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

লাহাইনা থেকে সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দারা বলেছেন, তাদের কারও কারও বাড়িতে লুটপাট হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।

মাউই দ্বীপের পশ্চিমাংশে এখনো বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ নেই। সেখানে দাবানলে ভুক্তভোগীদের খোঁজে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অনুসন্ধানী দলগুলো।

একে ‘হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে বর্ণনা করেছেন গভর্নর জোশ গ্রিন বলেছেন। প্যাসিফিক ডিজাস্টার সেন্টার (পিডিসি) ও ফেমার তথ্য অনুযায়ী, মাউই পুনর্র্নিমাণের খরচ হবে কমপক্ষে সাড়ে পাঁচশ কোটি মার্কিন ডলার। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা ও কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

দাবানল এখন অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, ঐতিহাসিক শহর লাহাইনার আশপাশসহ দ্বীপের আরও কিছু অংশে আগুন সম্পূর্ণরূপে নিভিয়ে ফেলার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) মাউই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলীয় জঙ্গলে দাবানল শুরু হয়। কাছেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসের কারণে দাবানলের তীব্রতা বেড়ে যায়। দ্রুত সেটি সমুদ্রতীরবর্তী শহর লাহাইনায় ছড়িয়ে পড়ে।

কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার পর্যটককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। তবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। গভর্নর গ্রিনের মতে, হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সূত্র: বিবিসি।

আবহাওয়া

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, ডাকসু নির্বাচনে বাধা নেই

হাওয়াইয়ে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯

প্রকাশের সময় : ০৫:০৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মাউই কাউন্টিতে গত কয়েকদিনের দাবানলে কীভাবে সবশেষ হয়ে গেছে তা নিজের চোখেই দেখতে হয়েছে বাসিন্দাদের। এক এক করে ২ হাজারেরও বেশি বাড়ি-ঘর পুড়ে ছাই। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত পুড়ে মারা গেছেন অন্তত ৮৯ জন। ধ্বংসাবশেষে চলছে নিখোঁজদের সন্ধান। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ আছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজ্যে এমন দাবানল আগে কখনও দেখেনি কেউ। বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন বহু মানুষ। অগ্নিকাণ্ড থেকে পালিয়ে অনেকে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

আগুনের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত শহর লাহাইনাসহ মাউই দ্বীপের কিছু অংশে এখনও জ্বলছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দমকল বাহিনী।

কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থা বিভাগের (ফেমা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেরেমি গ্রিনবার্গ বিবিসিকে বলেছেন, অতিরিক্ত সহায়তা পাঠানো হয়েছে দুর্যোগকবলিত এলাকায়। শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল কাজ করে যাচ্ছে।

লাহাইনায় ধ্বংসস্তূপে মৃতদেহ শনাক্ত করতে প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মৃতদেহের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দাবানল তাণ্ডব কমে এলে শনিবার এখানকার প্রধান সড়কটি খুলে দেওয়া হলে আবারও বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

শহরটিতে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা ৮০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ বলেন, সব নিয়ে গেছে, সব। এটি বেদনাদায়ক। এগুলো সামলানো কঠিন।

প্রায় ১৩ হাজার মানুষের বসবাস লাহাইনায়। একসময় শহরটির যেসব হোটেল-রেস্টুরেন্ট সারাক্ষণ প্রাণচঞ্চল থাকতো, দাবানলে পুড়ে আজ সেগুলোর অধিকাংশই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

লাহাইনা থেকে সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দারা বলেছেন, তাদের কারও কারও বাড়িতে লুটপাট হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।

মাউই দ্বীপের পশ্চিমাংশে এখনো বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ নেই। সেখানে দাবানলে ভুক্তভোগীদের খোঁজে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অনুসন্ধানী দলগুলো।

একে ‘হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে বর্ণনা করেছেন গভর্নর জোশ গ্রিন বলেছেন। প্যাসিফিক ডিজাস্টার সেন্টার (পিডিসি) ও ফেমার তথ্য অনুযায়ী, মাউই পুনর্র্নিমাণের খরচ হবে কমপক্ষে সাড়ে পাঁচশ কোটি মার্কিন ডলার। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা ও কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

দাবানল এখন অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, ঐতিহাসিক শহর লাহাইনার আশপাশসহ দ্বীপের আরও কিছু অংশে আগুন সম্পূর্ণরূপে নিভিয়ে ফেলার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) মাউই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলীয় জঙ্গলে দাবানল শুরু হয়। কাছেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসের কারণে দাবানলের তীব্রতা বেড়ে যায়। দ্রুত সেটি সমুদ্রতীরবর্তী শহর লাহাইনায় ছড়িয়ে পড়ে।

কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার পর্যটককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। তবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। গভর্নর গ্রিনের মতে, হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সূত্র: বিবিসি।